রূপকথা হাউজবোট – টাঙ্গুয়ার হাওর

বর্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওর ছবির মতো সুন্দর। মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এইসময় টাঙ্গুয়ার হাওর কানায় কানায় ভরে উঠে। বিশাল জলরাশির মাঝখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে হিজল ও করচ বন। হাওরের গ্রামগুলোকে এসময় মনে হয় যেন ছোট ছোট দ্বীপ। আজ থেকে কয়েক বছর আগেও টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ অনেক কষ্টকর ছিল। ছিলোনা আরামদায়ক কোনো নৌকা কিংবা আধুনিক সুযোগ সুবিধা।  সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওড়ে এখন অনেকগুলো আধুনিক হাউজবোট তৈরি হয়েছে। আজকে আমরা টাঙ্গুয়ার হাওরের অন্যতম সেরা হাউজবোট রূপকথার বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো।

হাউজবোটের নামঃ  রূপকথা – Rupkotha The Floating Paradise
হোয়াটসঅ্যাপঃ 01886-363232

টাঙ্গুয়ার হাওর হাউজবোট রূপকথার বিস্তারিত

রূপকথা হাউসবোটে থাকার জন্য ৭টি কেবিন রয়েছে। প্রতিটি ডোরলক কেবিনের সাথে আছে এটাচ বেলকনি। এটাচ বেলনির বিষয়টা হাওরের অন্য নৌকার সাথে রূপকথার পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।

৭টি কেবিনের মধ্যে ২টি কেবিনে আছে এটাচ বাথ। বাকি ৫টি কেবিনের জন্য আলাদা ২টি ওয়াশরুম আছে। এই টাঙ্গুয়ার হাওরের নৌকায় দ্বিতীয় তলায় আলাদা লবির ব্যবস্থা আছে। যেখন থেকে ৩৬০ ডিগ্রি ভিউতে টাঙ্গুয়ার হাওর এর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

রূপকথায় দিনে ১৮ ঘন্টা জেনারেরটর সার্ভিস দেয়। শুধুমাত্র দিনের বেলায় যখন সবাই শিমুল বাগান টেকেরঘাট কিংবা নীলাদ্রি লেকে ঘুরতে যায় তখন পাওয়ার সাপ্লাই বন্ধ থাকে।

রূপকথা হাউজবোট

টাঙ্গুয়ার হাওড় হাউজবোট রূপকথা প্যাকেজ

রূপকথা হাউসবোট এর ধারণ ক্ষমতা ১৮ জন। আপনি চাইলে ফুল বোট রিজার্ভ করতে পারবেন। সদস্য সংখ্য কম হলে হাউজবোট রিজার্ভ করলে খরচ অনেক বেশি হবে। সেক্ষেত্রে আলাদা আলাদা প্যাকেজ নিতে পারবেন। রূপকথা হাউজবোট এর টাঙ্গুয়ার হাওর ট্যুর প্যাকেজ এর বিস্তারিত নিচে দেওয়া হলো-

শুক্র-শনিবার (১ রাত ২ দিন)
কাপল কেবিন | উইন্ডো ভিউ | ৫০০০ টাকা জনপ্রতি
কাপল কেবিন | এটাচড বেলকনি | ৬০০০ টাকা জনপ্রতি
কাপল কেবিন | এটাচড বাথ & বেলকনি | ৭৫০০ টাকা জনপ্রতি

রবি-সোমবার (১ রাত ২ দিন)
কাপল কেবিন | উইন্ডো ভিউ | ৪৫০০ টাকা জনপ্রতি
কাপল কেবিন | এটাচড বেলকনি | ৫০০০ টাকা জনপ্রতি
কাপল কেবিন | এটাচড বাথ & বেলকনি | ৬৫০০ টাকা জনপ্রতি
বুধ-বৃহস্পতিবার (১ রাত ২ দিন)
কাপল কেবিন | উইন্ডো ভিউ | ৪৫০০ টাকা জনপ্রতি
কাপল কেবিন | এটাচড বেলকনি | ৫০০০ টাকা জনপ্রতি
কাপল কেবিন | এটাচড বাথ & বেলকনি | ৬৫০০ টাকা জনপ্রতি

খাবার মেনু

ব্রেকফাস্টঃ খিচুড়ি, ডিম কারি, সালাদ, চা
লাঞ্চঃ হাওরের মাছ, চিকেন কারি, ভর্তা, ডাল, সালাদ
ডিনারঃ হাঁসের মাংস, হাওরের মাছ, ভর্তা, ডাল, সালাদ
স্ন্যাকসঃ নুডুলস, চা, সিজনাল ফল

টাঙ্গুয়া হাওর ট্যুর প্যাকেজে যা যা থাকছে

⦿ প্রথমদিন সকালের খাবার থেকে শুরু করে আসার দিন সান্ধ্যকালীন খাবার পর্যন্ত ২ দিনে ৯ বেলা খাবার।
⦿ সুনামগঞ্জ থেকে পিকআপ ও ড্রপ।
⦿ রাতে নীলাদ্রী লেকের পাড়ে টেকেরঘাটে অবস্থান।

যোগাযোগ
01886363232
01869649817
01810137002

টাংগুয়া হাওড় ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

⦿ যাদুকাটা নদী থেকে পাথর উত্তোলন এর কারণে এই নদীর নিচে অনেকগুলো গর্ত আছে। উপর থেকে কিছু বোঝা যায়না, কিন্তু নিচে তীব্র স্রোত। তাই লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নদীতে নামবেন না। যেকোনো টাঙ্গুয়ার হাওর হাউজবোট এর ভিতরেই লাইফ জ্যাকেট পাবেন।

⦿ লাকমাছড়া মূলত ইন্ডিয়ান অংশে পড়েছে। তাই লাকমাছড়ায় গেলে সাইনবোর্ড দেওয়া নির্দিষ্ট অংশ পর্যন্ত ভ্রমণ করুন। ভারতের অংশে প্রবেশ কবেন না।

⦿  হাওরে কোনো ভাবেই মাইক এমনকি স্পীকারও ব্যাবহার করে গান বাজাবেন না। এটা দন্ডনীয় অপরাধ। এছাড়া এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়।

⦿  ভ্রমণের সময় ছাতা নিন সাথে। রোদ বৃষ্টি যেকোনো সময় কাজে দিবে। মাঝি ও স্থানীয়দের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহার করুন।

⦿ জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত হাওরে কানায় কানায় পানি থাকে। তাই এই সময়টার মধ্যেই টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ করুন। বছরের অন্য সময় এখানে পানি থাকেনা। শুকনো মৌসুমে পাখি দেখতে অনেক পর্যটক আসেন। তবে তখন নৌকা চলে না।

ট্রাভেল এজেন্সি

এছাড়া যারা ঝামেলা এড়াতে ট্যুর এজেন্সির মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন তারা দেশের সবচেয়ে ফিমেইল ফ্রেন্ডলি ট্যুর অর্গানাইজার গ্রিন বেল্ট এর টাঙ্গুয়া হাওর ট্যুর প্যাকেজটি দেখতে পারেন। এটি ১ রাত ২ দিনের ভ্রমণ প্যাকেজ। ভ্রমণ আপনার স্বপ্ন। আপনার স্বপ্নগুলো স্মৃতি হোক।

 

আরো পড়ুন

টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ গাইডলাইন

বান্দরবানের সেরা ২০ টি রিসোর্ট

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ তথ্য

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এর  অবস্থান মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ উপজেলায়। এটি বাংলাদেশের একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। বাংলাদেশের সাতটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য আছে। আর সংরক্ষিত বনাঞ্চল আছে দশটি। এরমধ্যে লাউয়াছড়া অন্যতম। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে লাউয়াছড়ার দূরত্ব ১০ কিলোমিটারের মতো। বারোশো পঞ্চাশ হেক্টর আয়তনের এই বনকে প্রাকৃতিক জাদুঘর বলা যায়। বৈচিত্রে ভরপুর এই এই বনটি ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট হিসেবে পরিচিত। এক সময় বৃহত্তর সিলেটের অনেক জায়গায় এরকম বড় বনাঞ্চল ছিল। মানব সৃষ্ট নানান কারণে এবং চা বাগান করার সময় এই বনাঞ্চল নির্বিচারে ধ্বংস হয়। বর্তমানে এটি শুধুমাত্র মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল এবং কমলগঞ্জে এসে ঠেকেছে। জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দরবন অঞ্চল এবং মৌলভীবাজার জেলার সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান।

কিভাবে যাবেন লাউয়াছড়া

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান যেতে হলে প্রথমে শ্রীমঙ্গল আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাস অথবা ট্রেনে আপনি শ্রীমঙ্গল আসতে পারবেন। ঢাকার সায়েদাবাদ, মহাখালী ও ফকিরাপুল বাসস্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত বিরতিতে শ্রীমঙ্গলের বাস ছাড়ে। হানিফ, শ্যামলী, এনা পরিবহনের বাস আছে এই রুটে। নন এসি বাসের ভাড়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। এসি বাস এর ভাড়া ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা। যেতে সময় লাগবে ৪-৫ ঘন্টার মতো। 

এছাড়া কমলাপুর ও বিমানবন্দর স্টেশন থেকে শ্রীমঙ্গল ট্রেন পাবেন। সিলেটগামী  উপবন জয়ন্তিকা কালনী ট্রেনে শ্রীমঙ্গল যেতে পারবেন।  ভাড়া  পড়বে  আসনভেদে ১১৫ থেকে ৭৬৫ টাকা।

শ্রীমঙ্গল থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এর দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। সিএনজি, মোটর রিকশা, জিপ বা ব্যক্তিগত গাড়িতে লাউয়াছড়া যেতে পারবেন।

একদিনের শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ পরিকল্পনা

লাউয়াছড়া ঘুরে দেখার জন্য দুই তিন ঘন্টা সময় যথেষ্ট। তাই দিনের বাকিটা সময় আপনি চাইলে শ্রীমঙ্গল এর আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। শ্রীমঙ্গলের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে সীতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা নীলকন্ঠ চা কেবিন বাইক্কা বিল চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, মাধবপুর লেক, চা বাগান, মনিপুরী পল্লী, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ইত্যাদি।

রাতের বাসে শ্রীমঙ্গল গেলে ভোরের মধ্যেই আপনি শ্রীমঙ্গল থাকতে পারবেন। শহরের কোন রেস্টুরেন্টে ব্রেকফাস্ট সেরে একটি সিএনজি রিজার্ভ নিয়ে নিন সারাদিনের জন্য। সারাদিনের জন্য সিএনজি ভাড়া নিবে ১০০০ থেকে পনেরশো টাকা। সিএনজি নিয়ে প্রথমে চলে যাবেন কমলগঞ্জের মাধবপুর লেক। মাধবপুর লেক ঘুরে চলে আসুন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। দুপুরের মধ্যে দুটি স্থান ঘুরে ফেলতে পারবেন।

এরপর শ্রীমঙ্গল শহরে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে নিন। বিকেলটা বরাদ্দ রাখুন মনিপুরী পল্লী নীলকন্ঠ টি কেবিন এবং আশেপাশের চা ও রাবার বাগানের জন্য।

লাউয়াছড়া কি দেখবেন

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এর প্রধান আকর্ষণ এখানকার জীববৈচিত্র্য। এই বনে নানান প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে। এরমধ্যে ১৬০ প্রজাতির উদ্ভিদ, 20 প্রজাতির স্তন্যপায়ী, 240 প্রজাতির পাখি ও 6 প্রজাতির সরীসৃপ আছে। উল্লেখযোগ্য বন্য প্রাণীর মধ্যে আছে লজ্জাবতী বানর মুখ পোড়া হনুমান বনরুই গন্ধগোকুল বাগদাস বনমোরগ গুইসাপ অজগর সাপ সজারু, হনুমান শেয়াল মেছো বাঘ, চিতা বাঘ, বিড়াল বিড়াল কাঠবিড়ালি বন্য কুকুর নানান রকম বিরল প্রজাতির সাপ, সবুজ ঘুঘু সহ বিরল প্রজাতির পাখি ইত্যাদি। এখানে সবচেয়ে বেশি দেখা মেলে বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকের।

বনের জীব বৈচিত্র দেখার জন্য বোনের ভিতরে রয়েছে তিনটি ট্রেইল। আধাঘন্টা একঘন্টা ও তিন ঘণ্টার এই ট্রেইল গুলোতে আপনি হাইকিং করে যেতে পারবেন। তার জন্য এখানে গাইড সার্ভিসের ব্যবস্থা আছে।

এই রেইনফরেস্ট এতই ঘন যে এখানে সূর্যের আলো মাটিতে পড়ে না বললেই চলে! সূর্যের আলোর জন্য এই বনের গাছপালা প্রতিযোগিতা করে উপরের দিকে বেড়ে উঠে। তাই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এর গাছপালা অনেক লম্বা হয়ে থাকে।

কোথায় থাকবেন

শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য বেশ কিছু হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। চা বাগান ঘেরা এইসব রিসোর্টে অগ্রিম বুকিং সাপেক্ষে আপনি থাকতে পারবেন। শ্রীমঙ্গল এর হোটেল রিসোর্ট সমুহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো-

গ্রান্ড সুলতান গলফ রিসোর্ট: এটি শুধু শ্রীমঙ্গল নয়, সিলেট বিভাগেরই প্রথম 5 তারকা মানের রিসোর্ট। গ্রান্ড সুলতানের অবস্থান লাউয়াছড়া বন ঘেঁষে। এখানে রুম ভাড়া ২৪ হাজার থেকে ৭৮ হাজার টাকা। বিভিন্ন সময়ে এখানে ডিসকাউন্ট পাওয়া যায় 20 থেকে 50 পারসেন্ট পর্যন্ত। রিজার্ভেশন ও ইনফরমেশন এর জন্য ফোন করতে পারেন- 01730793501-4.

দুসাই রিসোর্ট এন্ড স্পা: এটি শ্রীমঙ্গলের সবচেয়ে জনপ্রিয় রিসোর্ট। হোটেল এবং ভিলা এই দুই ক্যাটাগরিতে এখানে রুম আছে। হোটেল ক্যাটাগরির রুম ভাড়া 9600 থেকে 12000 টাকা। আর ভিলা ক্যাটাগরিতে রুম ভাড়া 16000 থেকে 6000 টাকা। যোগাযোগ- 086164100

টি রিসোর্ট ও মিউজিয়াম: বাংলাদেশ চা বোর্ডের অধীনে এই রিসোর্টটি পরিচালিত হয়। অবস্থান শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ রোডের পাশে। এখানে প্রতিটি বাংলোয় 4 থেকে 8 জন থাকা যাবে। প্রতি রাতের জন্য ভাড়া পড়বে পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা। যোগাযোগ- ০১৭৪৯০১৪৩০৬ 

নভেম ইকো রিসোর্ট: আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এই রিসোর্টের অবস্থান শ্রীমঙ্গলের রাধানগরে। মাটির ঘর কাঠের ঘর ফ্যামিলি ভিলা ও তাবুতে থাকার ব্যবস্থা আছে এখানে। রুম ভেদে এখানে ভাড়া পড়বে ৮ থেকে ১৭৫০০ টাকা।

নিসর্গ ইকো কটেজ: শ্রীমঙ্গল ভানুগাছ রোডের পাশে গড়ে ওঠা এই রিসোর্টে থাকার জন্য খরচ পড়বে রুম প্রতি দুই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। যোগাযোগ- ০১৭৬৬৫৫৭৭৮০ 

লেমন গার্ডেন রিসোর্ট: এই রিসোর্ট টিও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এর পাশে। এখানে রুম ভাড়া 3 থেকে 8 হাজার টাকা। যোগাযোগযোগাযোগ- ০১৭৬৩৫৫৫০০০

শান্তিবাড়ি রিসোর্ট: শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ রোডে মূল রাস্তা থেকে একটু ভেতরের দিকে এই রিসোর্টের অবস্থান। যোগাযোগ- ০১৭১৬১৮৯২৮৮

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাদেও মৌলভীবাজার জেলায় আরো অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো  মাধবপুর লেক, মাধবকুন্ড জনপ্রপাত, হামহাম জলপ্রপাত, বাইক্কা বিল, মনিপুরী পল্লী, হাকালুকি হাওর ইত্যাদি। এছাড়া সিলেট বিভাগে আরো আছে জাফলং, কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, গোয়াইনঘাট এর পান্থুমাই ঝর্ণা, জৈন্তিয়াপুর এর লালাখাল ইত্যাদি।

আরো পড়ুন

জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল ফেসবুক ট্রাভেল গ্রুপ Green Belt The Travelers ‘এ। লালাখাল সম্পর্কে আরো বিস্তারিত কোনো তথ্য দিতে চাইলে আমাদেরকে জানান।

সোনাইছড়ি ট্রেইল

সোনাইছড়ি ট্রেইল এর অবস্থান চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলায়। মিরসরাই সীতাকুন্ডে যতগুলো ট্রেইল আছে তার মধ্যে এই ট্রেইলটি সবচেয়ে এডভেঞ্চারাস, সবচেয়ে দূর্গম এবং সবচেয়ে সুন্দর! তিন্দুর মতো বড় বড় পাথরের বোল্ডার আছে সোনাইছড়ি ট্রেইলে। বৃষ্টির দিনে পাথরগুলো বেশ পিচ্ছিল হয়ে যায়। খাড়া পাহাড়ের পাথরের দেয়াল আর বাদুইজ্জাকুম এর ভয়ঙ্কর সুন্দর পথ রোমাঞ্চকর অনুভূতি দেয়। এই ট্রেইলের বাদুইজ্জাকুম বা বাঁদরে কুম সরু অথচ গভীর একটি কুম। এর দুইপাশে ১০০ থেকে ১৫০ ফুট উঁচু পাথরের দেয়াল। কুমে শত শত বাদুরের বসবাস। উপরে গাছপালা ও খাড়া দেয়ালের জন্য নিচে সূর্যের আলো আসেনা সব জায়গায়।  এই দীর্ঘ পথ পার হয়ে ট্রেইলের শেষ মাথায় সোনাইছড়ি ঝর্ণা এর দেখা মিলবে। তখন ট্রেকিংয়ের সব ক্লান্তি নিমিষে উবে যাবে। সোনাইছড়ি ট্রেইলের দৈর্ঘ্য ২৮ কিলোমিটার!

কিভাবে যাবেন সোনাইছড়ি ট্রেইল

সোনাইছড়ি ঝর্ণা দেখতে হলে আপনাকে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার হাদি ফকির হাট বাজারে আসতে হবে। এরপর হাদি ফকিরহাটের জামে মসজিদের সামনে থেকে সিএনজি নিয়ে বড় পাথর স্থানে চলে আসুন। এখান থেকেই ট্রেকিং শুরু। পুরো সোনাইছড়ি ট্রেইল শেষ করে আসতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। যেতে ৪ ঘন্টা লাগলে, ফিরতে ১ ঘন্টা সময় লাগবে। পাহাড়ের উপর দিয়ে ফেরার শর্টকাট রাস্তা আছে।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রামী বাসে উঠে মিরসরাই এর হাদি ফকিরহাট বাজারে নামবেন। বাসে উঠে সুপারভাইজারকে আগে থেকে বলে রাখবেন আপনাকে যেন হাদি ফকিরহাট নামিয়ে দেয়। সীতাকুন্ডের পর আরো একটি ফকিরহাট আছে। আপনি নামবেন মিরসরাই হাদি ফকির হাট। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। বাসের মান ভেদে ভাড়া ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম থেকে সোনাইছড়ি ট্রেইল আসতে হলে চট্টগ্রামের কদমতলী, মাদারবাড়ি, অলংকার ও একে খান মোড় থেকে ফেনী বারৈয়ারহাটের বাস আছে। বাসে হাদি ফকিরহাট পর্যন্ত যেতে ১ থেকে ১.৫ ঘন্টার মতো সময় লাগবে। চট্টগ্রাম থেকে হাদি ফকির হাটের দূরত্ব ৫০ কিলোমিটারের মতো।

ট্রেনে সোনাইছড়ি ট্রেইল

ঢাকা থেকে সোনাইছড়ি ট্রেইল তথা হাদি ফকিরহাটের সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যাবেন মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী বাসে করে মিরসরাই বাজার পার হয়ে হাদি ফকিরহাট নামতে হবে। মহিপাল থেকে হাদি ফকিরহাট বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে আসা চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে হাদি ফকিরহাট বাজারে আসা যাবে।

ছবি: শাহাদাত

কোথায় খাবেন

গাইডের সাথে কথা বলে স্থানীয় কোনো বাড়িতে বাজার করে দেওয়ার বিনিময়ে দুপুরের খাবার খেতে পারেন। এছাড়া হাদি ফকিরহাট বাজারে খাবার পাওয়া যাবে। আরেকটু ভালো খাবার চাইলে নিকটস্থ  মিরসরাই বাজার আছে। সেখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে জনপ্রতি ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মতো।

কোথায় থাকবেন

সোনাইছড়ি ট্রেইল গেলে থাকার জন্য আপনাকে সীতাকুন্ড বাজারে আসতে হবে। সীতাকুন্ডে মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

সোনাইছড়ি ট্রেইল ভ্রমণ টিপস

ফকিরহাট বাজার থেকে স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবে নিয়ে নিন। গাইড ফি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। ঝর্ণার ট্রেইলে সবসময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ট্রেইলে প্রতিটা স্টেপে নিজের কমনসেন্স ব্যাবহার করুন। গ্রুপ করে ঘুরতে যাওয়াই ভালো। ভ্রমণ সম্পর্কিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডকে বলা যায় ঝর্ণা উপত্যকা। সোনাইছড়ি ট্রেইল এর আশেপাশে আরো অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। এগুলোর মধ্যে এগুলোর মধ্যে রয়েছে বাওয়াছড়া লেক, হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল। আশেপাশে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে কমলদহ ঝর্ণা,  বড়তাকিয়া বাজারের কাছে আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নদুয়ারী বাজারের কাছে  নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা। আর চট্টগ্রামের দিকে দশ বারো কিলোমিটার গেলে পড়বে চন্দ্রনাথ পাহাড় কিংবা গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত।

আরো পড়ুন

ঝরঝরি ঝর্ণা ট্রেইল

ঝরঝরি ঝর্ণা ট্রেইল হলো সীতাকুন্ড মিরসরাই রেঞ্জের অন্যতম এডভেঞ্চারাস একটি ট্রেইল। এর অবস্থান চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায়। সবুজে ঘেরা পাহাড়ি পথ দিয়ে হেঁটে যখন আপনি ঝর্ণার কাছে পৌঁছাবেন তখন আপনার সমস্ত ক্লান্তি উবে যাবে। ঝরঝরি ঝর্ণার পাশ দিয়ে পাহাড় বেয়ে উপরে গেলে আরো কয়েকটি ক্যাসকেড পাবেন। এর মধ্যে স্বর্গের সিঁড়ি নামে একটি ক্যাসকেড আপনাকে মুগ্ধ করবে। এটি দেখতে অনেকটা খাঁজকাটা সিঁড়ির মতো। এই ট্রেইলের শেষে রয়েছে মূর্তি ঝর্ণা নামে আরো একটি ক্যাসকেড।

কিভাবে যাবেন ঝরঝরি ঝর্ণা

ঝরঝরি ঝর্ণা যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার পন্থিছিলা বাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামী বাসে উঠে মিরসরাই এর পরে পন্থিছিলা বাজারে নামবেন। এটি সীতাকুন্ডের আগেই পড়বে। বাসে উঠে সুপারভাইজারকে আগে থেকে বলে রাখবেন আপনাকে যেন পন্থিছিলা নামিয়ে দেয়। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে পন্থিছিলা পর্যন্ত আসতে সময় লাগে পাঁচ ঘন্টা। বাসের মান ভেদে ভাড়া ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম থেকে ঝরঝরি ঝর্ণা আসতে হলে চট্টগ্রামের কদমতলী, মাদারবাড়ি, অলংকার ও একে খান মোড় থেকে ফেনী বারৈয়ারহাটের বাস আছে। বাসে পন্থিছিলা পর্যন্ত যেতে ১ থেকে দেড় ঘন্টার মতো সময় লাগবে। চট্টগ্রাম থেকে পন্থিছিলার দূরত্ব ৪৫ কিলোমিটারের মতো।

ট্রেনে সীতাকুন্ড

ঢাকা থেকে পন্থিছিলা তথা সীতাকুন্ডের সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যাবেন মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী বাসে করে মিরসরাই বাজার পার হয়ে পন্থিছিলা নামতে হবে। মহিপাল থেকে পন্থিছিলার বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে আসা চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে পন্থিছিলা বাজারে আসা যাবে।

পন্থিছিলা থেকে ঝরঝরি ঝর্ণা

পন্থিছিলা বাজার থেকে পূর্বদিকে কিছুদূর হেঁটে গেলে রেললাইন পাবেন। রেললাইন ধরে বামদিকে ৫/৭ মিনিট হাঁটলে একটা মাটির রাস্তা দেখবেন ডান দিকে চলে গেছে। এই রাস্তা দিয়ে ২০ মিনিট গেলে কানি ঝিরির দেখা মিলবে। তারপর হাঁটতে থাকলে কিছুক্ষণ পর একটা পাহাড় ডিঙাতে হবে। ৩০ মিনিট হাঁটলে ঝরঝরি ঝর্ণা আপনার সামনে চলে আসবে। ঝিরি ধরে আরো ২০ মিনিট সামনে গেলে স্বর্গের সিঁড়ি নামক মায়াবী ক্যাসকেড পাবেন। এরপর আরো ঘন্টাখানেক হাঁটার পর মানুষের মূর্তি আকৃতির একটা ঝর্ণা পাবেন। যেটি মূর্তি ঝর্ণা নামে পরিচিত। পন্থিছিলা বাজার থেকে ঝরঝরি ঝর্ণা পর্যন্ত যেতে ১ ঘন্টা সময় লাগে। আর পুরো ট্রেইল শেষ করতে ৫/৬ ঘন্টা সময় লাগতে পারে।

কোথায় খাবেন

ঝরঝরি ঝর্ণা এর আশেপাশে খাবার মতো দোকান নেই। গাইডের সাথে কথা বলে স্থানীয় কোনো বাড়িতে বাজার করে দেওয়ার বিনিময়ে দুপুরের খাবার খেতে পারবেন। এছাড়া আরেকটু ভালো খাবার চাইলে  সীতাকুন্ড বাজারে খাওয়া যায়। সীতাকুন্ড বাজারে হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো।

কোথায় থাকবেন

পন্থিছিলার কাছে সীতাকুন্ড বাজারে মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

ভ্রমণ টিপস

পন্থিছিলা বাজার থেকে স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবে নিয়ে নিন। গাইড ফি ৩০০/৪০০ টাকা। ঝরঝরি ঝর্ণায় যাওয়ার উপযুক্ত সময় বর্ষার শেষে। ভরা বর্ষায় ঝরঝরির পর বাকি ঝর্ণাগুলো একটু দূর্গম হয়ে যায়। নতুন ট্রেকার হলে আপনি ট্রেইল নাও শেষ করতে পারতে পারেন। ঝর্ণার ট্রেইল যত সহজ মনে হোক না কেন, ঝর্ণা মানেই এদিক ওদিক বিপদ ওৎ পেতে থাকে। এজন্য সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ট্রেইলে প্রতিটা স্টেপে নিজের কমনসেন্স ব্যাবহার করুন। গ্রুপ করে ঘুরতে যাওয়াই ভালো। ভ্রমণ সম্পর্কিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডকে বলা যায় ঝর্ণা উপত্যকা। ঝরঝরির ঝর্ণার আশেপাশে আরো অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বাওয়াছড়া লেক, হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল সহ আশেপাশে আরো কয়েকটা ঝর্ণা। আশেপাশে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে কমলদহ ঝর্ণা,  বড়তাকিয়া বাজারের কাছে আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নদুয়ারী বাজারের কাছে  নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা। আর চট্টগ্রামের দিকে দশ বারো কিলোমিটার গেলে পড়বে চন্দ্রনাথ পাহাড় কিংবা গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত। মিরসরাইতে আছে এই রেঞ্জের সবচেয়ে এডভেঞ্চারাস ঝর্ণা সোনাইছড়ি ট্রেইল

আরো পড়ুন

বাওয়াছড়া লেক

বাওয়াছড়া লেক এর অবস্থান চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ওয়াহেদপুর গ্রামে। ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়ে থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দুরত্বে। স্থানীয় বাওয়াছড়া লেক অনেকের কাছে নীলাম্বর লেক নামে পরিচিত। বারমাসি ছড়ার কাছাকাছি অবস্থানের কারণে স্থানীয়রা একে বাওয়াছড়া লেক নামে চিনে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই লেকের চারপাশ ঘন সবুজে ঢাকা, পাখির কলতানে মুখরিত থাকে চারপাশ। জায়গাটা পাহাড় লেক ঝিরির অপূর্ব মিলনস্থল। জোছনা রাতে ক্যাম্পিং করার জন্য এটা উপযুক্ত একটা স্থান। বাওয়াছড়া লেক থেকে কিছুদূর সামনে গেলে পাবেন হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল। যেখানে আছে ছোট ঝর্ণা ক্যাসকেড আর মনমুগ্ধকর ঝিরিপথ।

কিভাবে যাবেন বাওয়াছড়া লেক

বাওয়াছড়া লেক যাওয়ার জন্য প্রথমে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ছোট কমলদহ বাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি ছোট কমলদহ আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে মীরসরাইয়ের ছোট কমলদহ বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে ছোট কমলদহ পর্যন্ত যেতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া এসি – নন এসি মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

যারা চট্টগ্রাম থেকে আসবেন তারা ফেনী বা বারৈয়ারহাটগামী যেকোনো বাসে কমলদহ আসতে পারবেন। অলংকার ও একে খান থেকে ফেনী বারৈয়ারহাট এর বাস ছাড়ে। ভাড়া পড়োবে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। যেতে দেড় ঘন্টার মতো সময় লাগতে পারে।

ঢাকা থেকে ট্রেনে

ঢাকা থেকে ছোট কমলদহ এর সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই ছোট কমলদহ যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে ছোট কমলদহ এর বাস ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

ছোট কমলদহ থেকে বাওয়াছড়া লেক

ছোট কমলদহ থেকে রাস্তার পূর্বদিকে গেলে ঈদগাহ পাবেন। ঈদগাহ পার হয়ে আরো পূর্ব দিকে গেলে রেললাইন পড়বে। মেইন রোড থেকে রেললাইন পর্যন্ত হেঁটে যেতে ২০ মিনিট সময় লাগে। রেললাইন পৌঁছানোর পর হাতের ডান পাশে ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে সরু একটা মাটির রাস্তা দেখা যায়। সর্বোচ্চ ২ হাত চওড়া এই রাস্তা ধরে ১০ মিনিট সামনে গেলে কয়েকটা বাড়ি দেখবেন। ওখানে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই বাওয়াছড়া লেক দেখিয়ে দিবে। সেখান থেকে ৫ মিনিটের পথ। অনেকেই এটিকে নীলাম্বর লেক নামে চিনতে পারে।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

বাওয়াছড়া লেক যাওয়ার উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। শুকনো মৌসুমে এখানে পানি খুব কম থাকে। তাই বর্ষাতেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। বাজারের পর আর কোথাও খাবার দোকান পাবেন না। নিজের সাথে খাবার বহন করুন। বাজারের পর রেললাইনের পাশে যেসব বাড়ির দেখা পাবেন ওখান থেকে ছোট কাউকে গাইড হিসেবে নিতে পারেন। তাকে ২০০ টাকা দিলেই হবে। ভ্রমণ সম্পর্কিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডকে বলা যায় লেক – ঝর্ণার উপত্যকা। বাওয়াছড়া লেক তথা নীলাম্বর লেক গেলে একইদিন হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল সহ আশেপাশে আরো কয়েকটা ঝর্ণা ও ট্রেইলে যেতে পারবেন। পুরোটা নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। আশেপাশে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে পন্থিছিলার ঝরঝরি ঝর্ণা, কমলদহের  কমলদহ ঝর্ণা,  বড়তাকিয়া বাজারের কাছে আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নদুয়ারী বাজারের কাছে  নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা। আর চট্টগ্রামের দিকে দশ বারো কিলোমিটার গেলে পড়বে চন্দ্রনাথ পাহাড় কিংবা গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত।

 

আরো পড়ুন

হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল

হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল এর অবস্থান মিরসরাই এর ছোট কমলদহে। মিরসরাই সীতাকুন্ডে যতগুলো ট্রেইল আছে তার মধ্য হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল সবচেয়ে সহজ একটি ট্রেইল। একসময় এখানে ঝর্ণার কুমে পানি খেতে আসা হরিণ শিকার করা হতো। তাই এর নাম হরিণমারা। এই ট্রেইল এর আরো একটি ছোট ঝর্ণার নাম সর্পপ্রপাত। সর্পপ্রপাত এর পাশেই পড়বে বাওয়াছড়ার মুখ। ট্রেইলের ঝর্ণাগুলো আকারে ছোট বলে এগুলোকে ক্যাসকেড বলাই ভালো। জায়গাটা পাহাড় লেক ঝিরির অপূর্ব মিলনস্থল। রুট এর শুরুতেই আছে নীলাম্বর লেক। যেখানে আপনি চাইলে ক্যাম্পিং করতে পারবেন।

কিভাবে যাবেন

হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ছোট কমলদহ বাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি ছোট কমলদহ আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে মীরসরাইয়ের ছোট কমলদহ বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে ছোট কমলদহ পর্যন্ত যেতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া এসি – নন এসি মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

যারা চট্টগ্রাম থেকে আসবেন তারা ফেনী বা বারৈয়ারহাটগামী যেকোনো বাসে কমলদহ আসতে পারবেন। অলংকার ও একে খান থেকে ফেনী বারৈয়ারহাট এর বাস ছাড়ে। ভাড়া পড়োবে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। যেতে দেড় ঘন্টার মতো সময় লাগতে পারে।

ঢাকা থেকে ট্রেনে

ঢাকা থেকে ছোট কমলদহ এর সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই ছোট কমলদহ যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে ছোট কমলদহ এর বাস ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

কমলদহ থেকে হারিণমারা ট্রেইল

ছোট কমলদহ থেকে রাস্তার পূর্বদিকে গেলে ঈদগাহ পাবেন। ঈদগাহ পার হয়ে আরো পূর্ব দিকে গেলে রেললাইন পড়বে। মেইন রোড থেকে রেললাইন পর্যন্ত হেঁটে যেতে ২০ মিনিট সময় লাগবে।রেললাইন পৌঁছানোর পর হাতের ডান পাশে ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে সরু একটা মাটির রাস্তা দেখতে পাবেন। সর্বোচ্চ ২ হাত চওড়া এই রাস্তা ধরে ১০ মিনিট সামনে গেলে কয়েকটা বাড়ি দেখবেন। বাড়িগুলোর পর ৫ মিনিট সামনে গেলেই নীলাম্বর লেক পাবেন। এরপর আরো কিছুদূর সামনে গেলেই ঝিরিপথের দেখা পাবেন। হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল এর শুরু এখানে।

ঝিরি ধরে কিছুটা সামনে গেলে দেখবেন ঝিরিপথ দুই ভাগ হয়ে গিয়েছে। বামের দিকে গেলে পাবেন হরিণমারা ঝর্ণা। আর ডানের দিকে এগুলে কিছুদূর পর দেখবেন ঝিরি আবার দুই ভাগ হয়ে গিয়েছে। এবার ডানপাশে গেলে সর্পপ্রপাত ঝর্ণা পাবেন, আর বামে গেলে হাঁটুভাঙ্গা ঝর্ণার দেখা মিলবে।

ভ্রমণ টিপস

হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল যাওয়ার উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। শুকনো মৌসুমে এখানে পানি খুব কম থাকে। তাই বর্ষাতেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। বাজারের পর আর কোথাও খাবার দোকান পাবেন না। নিজের সাথে খাবার বহন করুন। বাজারের পর রেললাইনের পাশে যেসব বাড়ির দেখা পাবেন ওখান থেকে ছোট কাউকে গাইড হিসেবে নিতে পারেন। তাকে ২০০ টাকা দিলেই হবে। ভ্রমণ সম্পর্কিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডকে বলা যায় লেক – ঝর্ণার উপত্যকা। বাওয়াছড়া লেক তথা নীলাম্বর লেক গেলে একইদিন হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল সহ আশেপাশে আরো কয়েকটা ঝর্ণা ও ট্রেইলে যেতে পারবেন। পুরোটা নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। আশেপাশে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে এই রুটের সবচেয়ে দীর্ঘ ট্রেইল এর ঝরঝরি ঝর্ণা। সবচেয়ে এডভেঞ্চারাস সোনাইছড়ি ট্রেইল,  বড়তাকিয়া বাজারের কাছে আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নদুয়ারী বাজারের কাছে  নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা। আর চট্টগ্রামের দিকে দশ বারো কিলোমিটার গেলে পড়বে চন্দ্রনাথ পাহাড় কিংবা গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত।

 

আরো পড়ুন

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত এর অবস্থান চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলায়। পাহাড় ঝর্ণা সমুদ্র সব মিলিয়ে সীতাকুন্ড উপজেলা প্রাকৃতিক রূপ বৈচিত্রে অনন্য। এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলো পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। তাই সারা বছরই এখানে সারা দেশ থেকে প্রচুর ভ্রমণপিপাসু মানুষ বেড়াতে আসেন। ঝাউ বাগান, জেগে উঠা ঘাসের চর, বালির মাঠ, খোলা সমুদ্রের হাওয়া সব মিলিয়ে কিছুটা সময় আপনি প্রকৃতির মাঝে কাটিয়ে দিতে পারবেন। এখানে সূর্যাস্ত অনেক বেশি মনোমুগ্ধকর। বিকেলটা আপনার কাছে বেশি ভালো লাগবে। এই বিচ এর মূল আকর্ষণ একটা লোহার ব্রিজ। এই ব্রিজ এর উপর দিয়ে আপনি সমুদ্রের উপর হাঁটতে পারবেন। বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত এর পাশে গুলিয়াখালী সৈকত নামে আরো একটি বিচ আছে।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত যাওয়ার জন্য চট্টগ্রামী বাসে উঠে সীতাকুন্ড বাজার পার হয়ে বাঁশবাড়িয়া বাজারে নামতে হবে। এটি চট্টগ্রাম এর আগেই পরবে। বাসে উঠে সুপারভাইজারকে আগে থেকে বলে রাখবেন আপনাকে যেন বাঁশবাড়িয়া নামিয়ে দেয়। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ, সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুন্ড পর্যন্ত আসতে সময় লাগে পাঁচ ঘন্টা। বাসের মান ভেদে ভাড়া ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম থেকে আসতে চাইলে চট্টগ্রামের একে খান বা অলংকার মোড় থেকে সীতাকুন্ড যাওয়ার লেগুনা পাবেন। ভাড়া জনপ্রতি ৩০/৪০ টাকা। যেতে ৪০/৪৫ মিনিটের মতো সময় লাগতে পারে। চট্টগ্রাম থেকে বাঁশবাড়িয়ার দূরত্ব ২৫ কিলোমিটারের মতো।

ট্রেনে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম মেইল নামে একটা ট্রেন আছে। এই ট্রেনটা সীতাকুন্ড দাঁড়ায়। এছাড়া সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যাবেন মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী বাসে করে সীতাকুন্ড বাজার পার হয়ে বাঁশবাড়িয়া নামতে হবে। মহিপাল থেকে বাঁশবাড়িয়ার বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১২০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে আসা চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে বাঁশবাড়িয়া বাজারে আসা যাবে।

বাঁশবাড়িয়া বাজারে নেমে সিএনজি নিয়ে ১৫ মিনিটেই বাঁশবাড়িয়া সি বিচ যেতে পারবেন। রিজার্ভ সিএনজিতে ভাড়া পড়বে ৭০ থেকে ১০০ টাকা।

কোথায় খাবেন

বাঁশ বাড়িয়া সমুদ্র সৈকত এর পাশে সম্প্রতি কিছু খাবার দোকান হয়েছে। পর্যটকদের চাপ থাকলে তখন শুধুমাত্র ওগুলো খোলা থাকে। এছাড়া সীতাকুন্ড বাজারে আপনি খেতে পারবেন। খাবারের জন্য হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের বাসে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারেন।

কোথায় থাকবেন

সীতাকুন্ড বাজারে মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ এর জন্য একটা বিকেলই যথেষ্ট। আপনি একদিনের ট্যুর প্ল্যান করলে আশেপাশে আরো অনেককিছু দেখতে পারবেন। পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেকগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান রয়েছে। বাঁশবাড়িয়ার কাছেই রয়েছে সীতাকুন্ড ইকো পার্ক,  গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, ঝরঝরি ঝর্ণা আর সোনাইছড়ি ট্রেইল। সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে আছে  সুপ্তধারা ঝর্ণা, সহস্রধারা ঝর্ণা। কাছেই চন্দ্রনাথ পাহাড়। আপনি কতগুলো স্পট ভ্রমণ করতে পারবেন সেটা নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। আর হাইওয়ে ধরে সীতাকুন্ড থেকে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগুলে পাবেন কমলদহ ঝর্ণা। যদি বিশ কিলোমিটার যান তাহলে  খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার ট্রেইল পাড়বে। ভ্রমণ বিষয়ে আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ সতর্কতা

স্থানীয় মতামতকে কখনোই অগ্রাহ্য করবেন না। ভাটার সময় কোনোভাবেই সমুদ্রে নামবেন না। তখন সাঁতার কাজে দিবেনা। শান্ত সমুদ্রে শুধুমাত্র ভাটার সময় নামার কারণে গত কয়েক বছরে অনেকেই বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত বেড়াতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই ১৫ থেকে ২৩ বছর বয়সী। যাদেরকে ভাটার কারণ দেখিয়ে স্থানীয়রা সমুদ্রে নামতে নিষেধ করেছিলো। কিন্তু উনারা নিষেধ অমান্য করেই সমুদ্রে নেমেছে। এই বয়সে স্থানীয়দের মতামতকে অগ্রাহ্য করার প্রবণতা থাকে অনেক তরুণের মধ্যে।

আরো পড়ুন

সহস্রধারা ঝর্ণা

সীতাকুন্ড মিরসরাইকে ঝর্ণা উপত্যকা বলা যায়! পাশাপাশি এই দুই উপজেলার ২০ কিলোমিটারের মধ্যে ছড়িয়ে আছে ছোট বড় অনেকগুলো ঝর্ণা। সহস্রধারা ঝর্ণা এর অবস্থানও চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায়। এটি সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে। সহস্রধারা জলপ্রপাত এ সারা বছর কম বেশি পানি থাকে। শীতকালে একটু কম পানি থাকলেও বর্ষায় জলপ্রপাত তার রূপের পূর্ণতা পায়। সহস্রধারা ঝর্ণা এর কাছাকাছি সুপ্তধারা নামে আরো একটা ঝর্ণা আছে।

কখন যাবেন

বৃষ্টির দিনে প্রকৃতি সবচেয়ে সুন্দর থাকে। ঝর্ণা দেখার সেরা সময়ও বর্ষাকাল। বর্ষায় ঝর্ণাগুলো তার পূর্ণ যৌবন লাভ করে। বলা চলে জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সহস্রধারা ঝর্ণা যাওয়ার উপযুক্ত সময়। তখন জলপ্রপাতের সৌন্দর্য ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। সৌন্দর্যের টানে দেশের নানান প্রান্ত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা সীতাকুন্ডে ছুটে আসেন।

কিভাবে যাবেন সহস্রধারা ঝর্ণা

সহস্রধারা জলপ্রপাত এর অবস্থান সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে। তাই আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি সীতাকুন্ড আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুন্ড পর্যন্ত আসতে সময় লাগে পাঁচ ঘন্টা। বাসের মান ভেদে ভাড়া ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। বাসে এলে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ড বাজার থেকে ২ কিলোমিটার সামনে ফকিরহাট নামক জায়গায়।

চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুন্ডের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। চট্টগ্রামের কদমতলী, মাদারবাড়ি, অলংকার ও একে খান মোড় থেকে সীতাকুন্ডের বাস পাবেন। বাসে যেতে ৪০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টার মতো সময় লাগে। বাস থেকে নামতে হবে সীতাকুন্ডের আগে ফকিরহাট স্টপেজে।

ট্রেনে সীতাকুন্ড

ঢাকা থেকে সহস্রধারা ঝর্ণা তথা সীতাকুন্ড যাওয়ার একটাই ট্রেন আছে। চট্টগ্রাম মেইল। এছাড়া সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যাবেন মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী বাসে করে সীতাকুন্ড বাজার পার হয়ে ফকিরহাট নামতে হবে। মহিপাল থেকে সীতাকুন্ডের বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে আসা চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে সীতাকুন্ড বাজারে আসা যাবে।

কোথায় থাকবেন

সীতাকুন্ড পৌরসভায় থাকার জন্য মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে আপনাকে ৪০ কিলোমিটার দূরের চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে।

কোথায় খাবেন

হালকা নাস্তা করার মতো কয়েকটি দোকান আছে সহস্রধারা ঝর্ণা যাওয়ার আগে সীতাকুন্ড ইকোপার্কের প্রবেশ মুখে। আর ভারী খাবার খেতে চাইলে আপনাকে সীতাকুন্ড বাজারে আসতে হবে। খাবারের জন্য হোটেল আল আমিন, সৌদিয়া ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ডাল, ভর্তা,  সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা জনপ্রতি ১৩০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের গাড়িতে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারবেন।

সহস্রধারা ঝর্ণা ভ্রমণ টিপস

সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর আশাপাশে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। সারাদিনে অনেকগুলো স্পটে ঘুরে দেখতে চাইলে একটা সিএনজি রিজার্ভ নিয়ে নিন। সারাদিনের জন্য রিজার্ভ নিলে ভাড়া পড়বে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। রাতের বাসে গেলে বেশ ভোরে পৌঁছে যাবেন। সেক্ষেত্রে ফকিরহাট পর্যন্ত না গিয়ে সীতাকুন্ড বাজারে নামুন। সীতাকুন্ডে নাস্তা সেরে তারপর রওয়ানা করুন। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না। এটা আপনার পার্সোনালিটিকে রিপ্রেজেন্ট করে।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ড প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। সীতাকুন্ড গেলে সুপ্তধারা ও সহস্রধারা ঝর্ণা বাদেও  আরো অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। আপনি কয়টা স্পট ভ্রমণ করতে পারবেন এটা নির্ভর করবে আপনার ম্যানেজমেন্টের উপর।  চন্দ্রনাথ পাহাড় আর গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত সীতাকুন্ড ইকো পার্কের পাঁচ কিলোমিটার এর মধ্যে। কাছেই আছে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত। আর হাইওয়ে ধরে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগুলে পাবেন কমলদহ ঝর্ণা। যদি বিশ কিলোমিটার যান তাহলে  খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার ট্রেইল পাড়বে। ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য সম্পর্কে আপডেট থাকতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

আরো পড়ুন

সুপ্তধারা ঝর্ণা

সুপ্তধারা ঝর্ণা (Suptadhara Waterfall) এর অবস্থান চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার চন্দ্রনাথ রিজার্ভ ফরেস্ট এর ভিতরে। বিশাল চিরসবুজ বনভূমি, বন্যপ্রাণী ও হরেক রকম বৃক্ষরাজির মনোরম পরিবেশেকে অন্য একটা মাত্রা দিয়েছে এই ঝর্ণা। সারা বছরই এখানে কম বেশি পানি থাকে। শীতকালে সুপ্তধারা জলপ্রপাত এ পানি একটু কম থাকলেও বর্ষায় দানবীয় হয়ে উঠে। সুপ্তধারা ঝর্ণার কাছাকাছি সহস্রধারা নামে আরো একটা ঝর্ণা আছে। এই ঝর্ণা উপত্যকার সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের নানান প্রান্ত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা সীতাকুন্ডে ছুটে আসেন।

কখন যাবেন

ঝর্ণা দেখার উত্তম সময় বর্ষাকাল। বর্ষায় ঝর্ণাগুলো তার পূর্ণ যৌবন ফিরে পায়। অর্থাৎ জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সুপ্তধারা ঝর্ণা যাওয়ার উপযুক্ত সময়। তখন জলপ্রপাতের সৌন্দর্য ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন। তবে টানা কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি হলে ঝর্ণায় না যাওয়াই ভালো। ওইসময় ঝিরিতে পানির তীব্র স্রোত থাকে। ঝিরিপথেই যেহেতু ঝর্ণার কাছে যেতে হয়, সেমময় ঝর্ণার কাছাকাছি পর্যন্ত নাও যেতে পারতে পারেন। শুধুমাত্র কয়েকদিন টানা ভারী বর্ষন হলেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

কিভাবে যাবেন সুপ্তধারা ঝর্ণা

সুপ্তধারা জলপ্রপাত এর অবস্থান সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে। সুপ্তধারা ঝর্ণা যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি সীতাকুন্ড আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুন্ড পর্যন্ত আসতে সময় লাগে পাঁচ ঘন্টা। বাসের মান ভেদে ভাড়া ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। বাসে এলে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ড বাজার থেকে ২ কিলোমিটার সামনে ফকিরহাট নামক জায়গায়।

চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুন্ডের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। চট্টগ্রামের কদমতলী, মাদারবাড়ি, অলংকার ও একে খান মোড় থেকে সীতাকুন্ডের বাস আছে। বাসে যেতে ৪০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টার মতো সময় লাগে। বাস থেকে নামতে হবে সীতাকুন্ডের আগে ফকিরহাট স্টপেজে।

ট্রেনে সীতাকুন্ড

ঢাকা থেকে সুপ্তধারা তথা সীতাকুন্ডের সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যাবেন মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী বাসে করে সীতাকুন্ড বাজার পার হয়ে ফকিরহাট নামতে হবে। মহিপাল থেকে সীতাকুন্ডের বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে আসা চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে সীতাকুন্ড বাজারে আসা যাবে।

কোথায় খাবেন

হালকা নাস্তা করার মতো কয়েকটি দোকান আছে সুপ্তধারা জলপ্রপাত যাওয়ার আগে ইকোপার্কের প্রবেশ মুখে। আর ভারী খাবারের জন্য আপনাকে সীতাকুন্ড বাজারে আসতে হবে। খাবারের জন্য হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের বাসে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারেন।

কোথায় থাকবেন

সীতাকুন্ড বাজারে মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

সুপ্তধারা ঝর্ণা ভ্রমণ টিপস

সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর আশাপাশে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। সারাদিনে অনেকগুলো স্পটে ঘুরতে চাইলে একটা সিএনজি রিজার্ভ নিয়ে নিন। সারাদিনের জন্য রিজার্ভ নিলে ভাড়া পড়বে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। রাতের বাসে গেলে অনেক ভোরবেলা পৌঁছে যাবেন। সেক্ষেত্রে ফকিরহাট না নেমে সীতাকুন্ড বাজারে নামুন। সীতাকুন্ডে নাস্তা সেরে তারপর রওয়ানা করুন। যেখানে সেখানে আপনি নিশ্চই ময়লা ফেলেন না। এটা আপনার ব্যক্তিত্বকে রিপ্রেজেন্ট করে।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেকগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান রয়েছে। সীতাকুন্ড ইকোপার্ক গেলে সুপ্তধারা ঝর্ণা বাদেও সহস্রধারা ঝর্ণা দেখতে পারবেন। এর বাইরে নিচের যেকোনো একটি বা দুইটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন একইদিন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর।  চন্দ্রনাথ পাহাড় আর গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত সীতাকুন্ড ইকো পার্কের পাঁচ কিলোমিটার এর মধ্যে। কাছেই আছে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত। আর হাইওয়ে ধরে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগুলে পাবেন কমলদহ ঝর্ণা। যদি বিশ কিলোমিটার যান তাহলে  খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার ট্রেইল পাড়বে। ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যের নিয়মিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

আরো পড়ুন

ভ্রমণে বমির সমস্যা হলে করণীয়

বছরজুড়ে আমরা কোথাও না কোথাও ঘুরতে বের হই। প্রায় সবাই ঈদে গ্রামের বাড়িতে যাই। চাকুরির সুবাদে কাউকে যেতে হয় দূরবর্তী কোনো শহরে। আর প্রকৃতির টানে এখন সবাই কিছুদিন পরপর ছুটে যায় সাগর, পাহাড়, ঝর্ণা কিংবা হাওরে। এর জন্য আমাদেরকে গাড়িতে বা বাসে ভ্রমণ করতে হয়। কিন্তু অনেকেই ভ্রমণে বমি করেন। এই কারণে ভ্রমণের আনন্দ মাটি হয়ে যায়। অথচ জার্নি খুবই চমৎকার উপভোগ্য একটি বিষয়। জার্নিতে বমি হওয়ার এই সমস্যাকে “মোশন সিকনেস” বলে। এই কারণে অনেকের জার্নির ক্ষেত্রে ভীতি পর্যন্ত চলে আসে।

ভ্রমণে বমি কেন হয়

বমির জন্য দায়ী আমাদের কানের ভিতরের অংশের সমন্বয়হীনতা। কানের ভিতরে এক ধরণের তরল (ফ্লুইড) আছে। চলন্ত বাসের ঝাঁকুনিতে এই ফ্লুইড নড়াচড়া করে। যার কারণে আমাদের অন্তঃকর্ণ ব্রেইনকে সিগনাল পাঠায় বডি নড়াচড়া করছে। কিন্তু একই সময়ে চোখ আবার ব্রেইনকে ইনফরমেশন পাঠায় বডি স্থির আছে। দুই রকম ইনফরমেশনের জন্য ব্রেইনে সমন্বয়হীনতা সৃষ্টি হয়। এই ধরণের পরিস্থিতিকে ব্রেইন বিষ হিসেবে চিহ্নিত করে। তখন ব্রেইন চেষ্টা করে শরীর থেকে বিষগুলো বের করে দিতে, সেটা বমি আকারে। তখন ভ্রমণে বমি বমি ভাব হয়।

জার্নিতে বমির সমস্যা রোধে করণীয়

⦿ বাসে ঘুমিয়ে গেলে আর জার্নিতে বমি হয়না। কারণ তখন চোখ মস্তিষ্ককে কোনো ইনফরমেশন দেয়না। তাই ভ্রমণে বমি প্রতিরোধে বাসে উঠে অন্তত চোখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করুন।

⦿গাড়িতে সামনের দিকে বসুন। দৃষ্টি গাড়ির বাইরের দিকে প্রসারিত করুন। গাড়িতে আড়াআড়ি বা উল্টো হয়ে বসবেন না। এতে বমি বমি ভাব হয়। অনেকে পরিবার বা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য পেছনে ফিরে থাকেন। এটা করবেন না।

⦿ গাড়ির পিছনের সিটে বসা থেকে বিরত থাকুন। গাড়ির পেছনের দিকে ঝাঁকি বেশি হয়। আপনার মোশন সিকনেস বেশি হবে এতে। সম্ভব হলে জানালা খুলে দিন। বাতাসে ভালো লাগবে।

⦿ যাত্রাপথে ভারী খাবার থেকে বিরত থাকুন। ভ্রমণে বমি রোধে লেবু অথবা আদা চা খেতে পারেন। আদা মৌরি, দারুচিনি বা লবঙ্গ চিবোতে পারেন। আদা সবচেয়ে বেশি উপকারী।

⦿যাত্রাপথে বই পড়া, মোবাইলে গেমস খেলা বা ফোনে নেট ব্রাউজিং থেকে বিরত থাকুন। মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে মোশন সিকনেস বেড়ে যাবে।

⦿ গাড়িতে উঠলেই আমার বমি হবে এসব চিন্তা মাথায় আনবেন না ভ্রমণের সময়। অন্য কিছু ভেবে মনকে প্রফুল্ল রাখুন। চাইলে গান শুনতে পারেন।

⦿ ভ্রমণে বমি ভাব বন্ধ করার কিছু ওষুধ আছে। গাড়িতে উঠার আগে এই ওষুধ খেতে পারেন। সাধারণত যাত্রার ৩০ মিনিট আগে এই ওষুধ খেতে হয়। যেকোনো ফার্মেসিতেই বমির ওষুধ পাওয়া যায়। তবে ওষুধ অবশ্যই চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।

⦿যাত্রাপথে ধুমপান থেকে বিরত থাকুন।

আরো ট্রাভেল টিপস পড়ুন

⦿ কম্পাস ছাড়া দিক নির্ণয়
⦿ গর্ভাবস্থায় ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য
⦿ সলো ট্রাভেল বা একা ভ্রমণ এর টিপস
⦿ ট্রাভেল ফটোগ্রাফি টিপস
⦿ বিদেশ ভ্রমণ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

ভ্রমণ করতে আমরা সবাই ভালোবাসি। ভ্রমণ আমাদের মনকে বড় করে, নিজেকে প্রশান্ত করে। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল Green Belt The Travelers এ। হ্যাপি ট্রাভেলিং।

লালাখাল

লালাখাল (Lalakhal) এর অবস্থান সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী জৈন্তিয়াপুর উপজেলায়। সিলেট জেলাশহর থেকে এর দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। নীল পানির সাথে নদীর দুপাশের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য – ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করে। নাম লালাখাল হলেও এর পানির রং স্বচ্ছ নীল, মনে হবে মালদ্বীপের সাগরের পানির হুবুহু প্রতিচ্ছবি দেখছেন। এখানে লালাখাল মিশে গেছে সারি নদীর সাথে। লালাখাল এর তামাবিল অংশের নাম সারি নদী।  স্বচ্ছ নীল জলরাশী, দুপাশের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য, সবুজ বন, পাহাড়, বালুচর, চা বাগান – কি নেই লালাখালে। ৪৫ মিনিটের দারুন এক নৌকাভ্রমণ এর সাথে প্রকৃতির অপরুপ দৃশ্যের সাক্ষী হতে একটা দিন লালাখাল এ কাটানো যেতেই পারে। লালাখাল ভ্রমণের সাথে একইদিনে জাফলং, সারিঘাট, সহ কাছাকাছি আরো কয়েকটি পর্যটন স্পট ঘুরে আসতে পারবেন। এই পোস্ট এর শেষের দিকে সেই বিষয়ে দিক নির্দেশনা থাকবে।

কিভাবে লালাখাল যাবেন

লালাখাল যাওয়ার জন্য দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে চায়ের দেশ সিলেট আসতে হবে। বাস, ট্রেন অথবা উড়োজাহাজে করে আপনি সিলেট আসতে পারবেন। বাসে এলে ঢাকার সায়েদাবাদ, মহাখালী ও ফকিরাপুল বাসস্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত বিরতিতে সিলেটের বাস ছাড়ে। ইউনিক, শ্যামলী, গ্রিন লাইন, সৌদিয়া, এনা পরিবহন ও লন্ডন এক্সপ্রেস সহ দেশের সব বড় কোম্পানির বাস আছে ঢাকা সিলেট রুটে। এই রুটে নন এসি বাসের ভাড়া ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা। এসি বাস এর ভাড়া ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা। বাসে ঢাকা থেকে সিলেট পৌঁছাতে সময় লাগে সাড়ে ৫ থেকে ৭ ঘন্টার মতো।

ঢাকা থেকে ট্রেনে সিলেট

ঢাকা সিলেট রুটে প্রতিদিন ৪টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। কমলাপুর থেকে সকাল ৬:৪০ মিনিটে পারাবত, দুপুর ১২:০০ টায় জয়ন্তিকা, বিকাল ৪:০০টায় কালনী এবং রাত ৯:৫০ মিনিটে উপবন এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়। ট্রেনের ভাড়া পড়বে আসনভেদে জনপ্রতি ২৬৫ টাকা থেকে ১১০০ টাকা। ঢাকা থেকে ট্রেনে সিলেট যেতে ৭/৮ ঘন্টা সময় লাগে। সেক্ষেত্রে রাতের উপবন এক্সপ্রেসে যাওয়া সুবিধাজনক। সারারাত জার্নি করে ভোরে সিলেট পৌঁছানো যায়।

চট্টগ্রাম থেকে সিলেট

চট্টগ্রাম থেকে সৌদিয়া, বিআরটিসি ও এনা পরিবহণের সিলেট রুটে বাস রয়েছে। ভাড়া ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে সোমবার বাদে প্রতিদিন সকাল ৮:১৫ মিনিটে পাহাড়িকা এবং শনিবার বাদে প্রতিদিন রাত ৯:৪৫ মিনিটে উদয়ন এক্সপ্রেস সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ভাড়া সিটের শ্রেণীভেদে ১৪৫ থেকে ১২০০ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে সিলেট যেতে সময় লাগে ৯ থেকে ১১ ঘন্টা।

সিলেট থেকে লালাখাল

সিলেট শহর থেকে লালাখাল যাওয়ার জন্য প্রথমে জৈন্তাপুর আসতে হবে। জাফলংগামী যেকোনো বাসে উঠলে আপনাকে সারিঘাট নামিয়ে দিবে। ওসমানী শিশু পার্কের সামনে থেকে জাফলংয়ের বাস, মাইক্রোবাস বা লোকাল সিএনজি পাওয়া যায়। যেতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘন্টার মতো। রিজার্ভ মাইক্রোবাস ভাড়া পড়বে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। রিজার্ভ সিএনজি ভাড়া ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা।

লোকাল ট্রান্সপোর্টে সারিঘাট পর্যন্ত গেলে সেখান থেকে লালাখাল যাওয়ার লেগুনা ও সিএনজি পাওয়া যায়। চাইলে সেখান থেকে নৌপথেও যেতে পারবেন। রিজার্ভ নৌকা ভাড়া পড়বে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা।

কখন যাবেন

লালাখাল যাওয়ার আদর্শ সময় হচ্ছে শীতকাল। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যে গেলে লালাখাল এর নীল জলরাশির সবচেয়ে সুন্দর রূপটা দেখতে পাবেন। শীতের সময় লালাখালের পানি এতটাই স্বচ্ছ থাকে যে, উপর থেকে একদম নদীর তলদেশ পর্যন্ত দেখা যায়। শীতকালে নদীর দুপাশের দৃশ্য আরো বেশি মনমুগ্ধকর হয়ে উঠে। প্রকৃতি তখন নতুন আমেজে সেজে উঠে। তাই এককথায় বলা চলে শীতকাল লালাখাল ভ্রমণ এর উপযুক্ত সময়।

লালাখাল কি কি দেখবেন

নীল জলরাশী, সবুজ বন, দুপাশের চমৎকার দৃশ্য, চা বাগান, জিরো পয়েন্ট ইত্যাদি আপনাকে মুগ্ধ করবে। একটা দারুন নৌকা ভ্রমন করতে পারবেন। নীল জলরাশীর উপর নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াবেন, চাইলে স্পিডবোট নিয়ে ঘুরতে পারেন। নৌকা ভ্রমন এর পথে দেখতে পাবেন দারুন সব মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য। তারপর পৌঁছে যাবেন জিরো পয়েন্টে৷ ওখানে বালুচর পাবেন, বালুচর টা পায়ে হেটে উটেই পাবেন চা বাগান আর পাহাড়।

নৌকা ভাড়া

সিজন ভেদে লালখাল এ নৌকাভাড়া উঠানামা করে। লালাখাল ঘাটেই ছোট বড় সব রকমের নৌকা পাওয়া যায়। ইঞ্জিন চালিত ছোট নৌকার ভাড়া ঘন্টায় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। আর বড় নৌকাগুলোর ভাড়া ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা। এক নৌকায় ১০-১৫ জন বসা যায়।

কোথায় থাকবেন

থাকার জন্য লালাখালের কাছেই নর্দান রিসোর্টটি বেছে নিতে পারেন। বাজেট বেশি থাকলে বিলাসবহুল নাজিমগড় রিসোর্টে থাকতে পারবেন। আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এই রিসোর্টের সর্বনিন্ম রুম ভাড়া পড়বে ৭ হাজার টাকা। আর প্রেসিডেন্সিয়াল সুইট নিলে খরচ পড়বে ১৫ হাজার টাকা। এক রুমে ৩ জন থাকা যায়। সিজনে এখানে আগে থেকে রুম বুকিং দিয়ে না গেলে খালি পাওয়া মুশকিল।

তবে রাতে সন্ধ্যার দিকে সিলেটে ফিরে আসাই ভালো। এখানে কম খরচে ভালো মানের হোটেল পাবেন। সিলেট এর মাজার গেট, জিন্দাবাজার, জেল রোডে বিভিন্ন মানের অনেকগুলো হোটেল আছে। ৪০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে এখানে রুম পেয়ে যাবেন। বাংলাদেশের জেলা শহরগুলোর মধ্যে কক্সবাজারের পর সিলেটেই সবচেয়ে বেশি হোটেল আছে।

সতকর্তা

সাতার না জানলে পানিতে নামবেন না। লালাখাল এর কিছু জায়গায় পানির গভীরতা অনেক বেশি। মানুষ বেশি হলে একটু বড় নৌকা নিবেন। নৌকার ছাদের উপর বেশি মানুষ উঠবেন না। স্থানীয়দের সাথে ভালো ব্যবহার করুন। নৌকা, লেগুনা, সিএনজি, মাইক্রোবাস বা হোটেল নেওয়ার সময় ঠিকঠাক দরদাম করে নিন। যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না। এটা অভ্যাসের বিষয়।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

লালাখাল এর কাছেই রয়েছে জাফলং আর তামাবিল। জাফলং থেকে পিয়াইন নদী পার হয়ে কিছুটা সামনে গেলে সংগ্রামপুঞ্জী ঝর্ণা। এছাড়া একই দিনে চাইলে লালাখাল থেকে ঘুরে আসতে পারবেন রাতারগুল থেকে। আর বিছানাকান্দি ঘুরতে চাইলে খুব ভোরে রওয়ানা করতে হবে। এছাড়া যেতে পারেন পান্থুমাই ঝর্ণা বা ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর।

আরো পড়ুন

জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল ফেসবুক ট্রাভেল গ্রুপ Green Belt The Travelers ‘এ। লালাখাল সম্পর্কে আরো বিস্তারিত কোনো তথ্য দিতে চাইলে আমাদেরকে জানান।

সেন্টমার্টিন হোটেল রিসোর্ট রিভিউ

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দ্বীপ সেন্টমার্টিন। ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপে থাকার জন্য ছোট বড় প্রায় ১৫০টি হোটেল রিসোর্ট রয়েছে। সেন্টমার্টিন যেহেতু শুধুমাত্র শুকনো মৌসুমে যাওয়া যায়, তাই অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত এখানে পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। সেন্টমার্টিন রিসোর্ট হোটেল সমূহে থাকার জন্য রুম ভাড়া ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০০ টাকা পর্যন্ত। বন্ধের দিন গুলোতে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে চাইলে আগে থেকে হোটেল রিসোর্ট বুকিং করা লাগে।

সেন্টমার্টিনের রিসোর্ট সমূহ

সেন্টমার্টিনে থাকার জন্য যে রিসোর্ট সমূহ রয়েছে সেগুলোকে অবস্থানের ভিত্তিতে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। পূর্ব বিচ এর রিসোর্ট, পশ্চিম বিচ রিসোর্ট, এবং উত্তর বিচ রিসোর্ট। এর মধ্যে পশ্চিম বিচ হলো সেন্টমার্টিনে থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো। উত্তর বিচ হলো জেটি ঘাট এর কাছে বাজার এরিয়া। যারা কম বাজেটে রুম চাচ্ছেন তারা এই রিসোর্টে থাকতে পারেন। সেন্টমার্টিনে থাকার অনেকগুলো হোটেল ও রিসোর্ট আছে। এগুলোর ভাড়া সিজন ভেদে উঠানামা করে। তবে ডিসেম্বর জানুয়ারি ফেব্রুয়ারীতে ভাড়া সর্বোচ্চ থাকে। সেন্টমার্টিন ভ্রমণে আগে থেকে হোটেল-রিসোর্ট কনফার্ম করে যাওয়াই ভালো। কারণ সিজনের সময় সপ্তাহর মাঝামাঝিতেও ভালো রিসোর্ট গুলোতে রুম ফাঁকা থাকেনা।

ছবি : দ্বীপান্তর বিচ রিসোর্ট
দ্বীপান্তর বিচ রিসোর্ট: ভিউ ফ্যাসিলিটিজ ও কোয়ালিটি বিবেচনায় এটি সেন্টমার্টিনের সবচেয়ে সেরা রিসোর্ট। সমুদ্র লাগোয়া এই রিসোর্টের স্থাপত্যশৈলী চমৎকার। আলাদা আলাদা বিচ কটেজ বাদেও এখানে রয়েছে কাঠের ডুপ্লেক্স রুম। রয়েছে কাঠের দোতলা রেস্টুরেন্ট। যেখানে খোলা ছাদে বসে গায়ে সমুদ্রের হাওয়া মেখে সমুদ্র উপভোগ করা যায়। ফ্যামিলি নিয়ে থাকার জন্য এটি সবচেয়ে ভালো। রিসোর্টে রুম ভাড়া রুম ভেদে ৪০০০  থেকে ৮০০০ টাকা। স্টুডিও রুম ৪০০০ টাকা, এক্সক্লুসিভ কটেজ ৫০০০ টাকা, প্রিমিয়াম কাপল কটেজ ৬০০০ টাকা, এবং  ডুপ্লেক্স কটেজ ৮০০০ টাকা।
ফেসবুক পেজঃ Dwipantor Beach Resort
গুগল ম্যাপঃ Dwipantor Beach Resort
ফোন নাম্বার:  01886-363232, 01884-710723
এসকেডি রিসোর্ট: এই রিসোর্টটি পশ্চিম বিচের চমৎকার একটি বিচ রিসোর্ট। শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে সমুদ্র পাড়ের এই রিসোর্টটি পরিবার নিয়ে থাকার জন্য বেশ ভালো। তবে এটি জেটি ঘাট থেকে বেশ দূরে। এখানে রুম ভাড়া পাওয়া যাবে ২৫০০ থকে ৩৫০০ টাকায়। ফোন নাম্বার: 01717000966
ব্লু মেরিন রিসোর্ট : সেন্টমার্টিনের আরেকটি সুন্দর রিসোর্ট হলো ব্লু মেরিন রিসোর্ট। এখানে আরো কিছু বাড়তি সুযোগ সুবিধা ব্যবস্থা আছে যেমন পার্টি জোন, হল রুম ইত্যাদি। কর্পোরেট ট্যুরের জন্য এটি বেশি ব্যবহৃত হয়। রুম ভাড়া ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা।
ফোন নাম্বার: 01713-399001
সীমানা পেরিয়ে রিসোর্ট: এই রিসোর্টের অবস্থান পশ্চিম বিচে, ভ্যানে করে যেতে হবে। এতে চোদ্দটি রুম ও একটি নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্ট আছে। এর ভাড়া এক হাজার পাঁচশো থেকে দুই হাজার পাঁচশো টাকা।
ফোন নাম্বার: 01911-121292
কোরাল ভিউ রিসোর্ট: এই রিসোর্টটি নৌবাহিনী পরিচালনা করে। এটি সেন্টমার্টিনের পূর্ব বিচে। জেটি থেকে বেশ খানিকটা দূরে বলে ভ্যান/বোট নিয়ে যেতে হবে। এর আয়তন অনেক বড়ো এবং রুমগুলো থেকে মোটামুটি সমুদ্র দেখা যায়। এর রুমপ্রতি ভাড়া দুই হাজার পাঁচশো টাকা থেকে ছয় হাজার টাকা।
ফোন নাম্বার: 01859-397045
হ্যাভেন বিচ রিসোর্ট: এই হোটেলটির অবস্থান সেন্টমার্টিন এর জেটি ঘাট এর কাছে উত্তর বিচে। রুম ভাড়া ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকা। ফোন নাম্বার: 01868066339
দ্য আটলান্টিক রিসোর্ট: (আগের নাম ছিলো লাবিবা বিলাস) সুপ্রশস্ত এই দ্বিতল রিসোর্টে এর অবস্থান উত্তর বিচে।  রুম ভাড়া রুম ভেদে দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা। আটলান্টিক রিসোর্ট সেন্টমার্টিন হোটেল ফোন নাম্বার : 01719584899
সমুদ্র বিলাস রিসোর্ট: পশ্চিম বিচের এর রিসোর্টটি সাদামাটা আর দশটা রিসোর্টের মতোই। তবে এর একটি বিশেষত্ব আছে। এটি মূলত হুমায়ূন আহমেদ এর বাড়ি। এখানে রুম ভাড়া সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা।
ফোন নাম্বার: 01911-920666
প্রাসাদ প্যারাডাইস: জেটি ঘাট এর কাছে এটি আরেকটি বিচ রিসোর্ট। রুম পরিচ্ছন্ন। রুম ভাড়া পড়বে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। ফোন নাম্বার: 01556347711
নীল দিগন্তে রিসোর্ট: সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত সুন্দর একটি রিসোর্ট। এখানে সবগুলো রুমই টিনশেড। রুম ভাড়া দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা। কোনো বিচ ভিউ রুম নেই।
ফোন নাম্বার: 01730-051005
সি ভিউ রিসোর্ট এন্ড স্পোর্টস: এই রিসোর্টের অবস্থান জেটি ঘাট এর পাশে উত্তর বিচেই। কম খরচে থাকার জন্য এটি ভালো একটি রিসোর্ট। রুম ভাড়া দেড় থেকে তিন হাজার টাকা।
ফোন নাম্বার:  01840-477957
হোটেল প্রাসাদ প্যারাডাইজ: এই দ্বিতল হোটেলটির অবস্থান ব্লু মেরিনের কিছুটা উত্তরে। কম খরচে থাকার জন্য এটিও ভালো একটি রিসোর্ট। বিচ থেকে একটু দূরে বলে অল্প কয়েকটি রুম থেকে সমুদ্রের খানিকটা দেখা যায়। প্রাসাদ প্যারাডাইজের প্রতিটি রুমের ভাড়া দুই হাজার থেকে চারহাজার টাকা।
ফোন নাম্বার: 01556-347711
হোটেল সী ইন: সেন্টমার্টিন বাজারের মূল রাস্তা ধরে পাঁচ মিনিট হাটলেই এই হোটেলটির অবস্থান। স্টুডেন্ট বা কম খরচে যারা থাকতে চান তাদের জন্য এটি ভালো একটি হোটেল। এখানে রুম ভাড়া ১২০০ থেকে ২৫০০ টাকা।
ফোন নাম্বার: 01764-190586
সমুদ্র কুটির: এটি পশ্চিম বিচ এর একটি বিচ রিসোর্ট। সেন্টমার্টিন জেটি ঘাট থেকে কিছুটা দূরে হলেও এটি বেশ ভালো একটি বিচ রিসোর্ট। রুম ভাড়া পড়োবে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা। ফোন নাম্বার : 01858222521
সি প্রবাল রিসোর্ট: উত্তর বিচে কম খরচে থাকার আরেকটি ভালো রিসোর্ট সি প্রবাল। এর রুম ভাড়া ১২শ থেকে ২৫শ পর্যন্ত। স্টুডেন্ট কিংবা যারা কম খরচে থাকতে চান তারা এই রিসোর্টে থাকতে পারবেন। 
ফোন নাম্বার: 01756-208383
প্রিন্স হ্যাভেন রিসোর্ট: জেটি ঘাটের কাছে সেন্টমার্টিন হোটেল প্রিন্স হ্যাভেন একটি বাজেট রিসোর্ট। যারা কম খরচে সেন্টমার্টিন যেতে চান তারা এই রিসোর্টটি বেছে নিতে পারেন। রুম ভাড়া ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। ফোন নাম্বার +8801601222456
এগুলো ছাড়াও সেন্টমার্টিন দ্বীপে রাত্রিযাপনের জন্য কোরাল ব্লু, ড্রিম নাইট, সায়রি, অবকাশ, স্যান্ড শোর, ব্লু লেগুন, সিটিবি ইত্যাদি রিসোর্ট পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়।

আরো পড়ুন

ট্রাভেল বিষয়ে নিয়মিত আপডেট থাকতে, কক্সবাজার সাজেক সেন্টমার্টিন হোটেল ফোন নাম্বার সহ বিস্তারিত জানতে জয়েন করুন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল Green Belt The Travelers ফেসবুক গ্রুপে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- সেন্টমার্টিন এর কোনো হোটেল বা রিসোর্ট এর সাথে কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন নিজ দায়িত্বে করতে হবে। আর্থিক লেনদেন এর বিষয়ে গ্রিন বেল্ট কোনো দায় দায়িত্ব বহন করবে না।

ভারতীয় ভিসা

একই সময়ে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা। উত্তর ভারতে যখন বরফ পড়ে; দক্ষিণে তখন গরম। একপাশে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। অন্যপাশে পাহাড় আর মরুভূমি। এই হচ্ছে বাংলাদেশের পাশের দেশ ভারতের দৃশ্য। শিক্ষা চিকিৎসা, বানিজ্য কিংবা ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের ভারতে যাওয়া হয়ে থাকে। কিছু নিয়মাবলীর মেনে খুব সহজেই ভারতে যাওয়া যায়৷ এর জন্য সর্ব প্রথম প্রয়োজন ভারতীয় ভিসা।

বাংলাদেশীদের জন্য ভারতীয় স্টেট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে ১৫টি ভারতীয় ভিসা আবেদনপত্র কেন্দ্র বা আইভ্যাক আছে। সেগুলো হচ্ছে ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্ক, যশোর, খুলনা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, সাতক্ষীরা, বগুড়া, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা এ অবস্থিত। ভারত ভ্রমণ এর বিস্তারিত গাইডলাইন নিয়ে আমরা আজকে আলোচনা করবো।

ভারতীয় ভিসা আবেদন এর নিয়মাবলী

সব ধরণের ভারতীয় ভিসা ওয়াক-ইন পদ্ধতিতে কোন অনলাইন সাক্ষাতের তারিখ ছাড়া গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী যারা চট্টগ্রাম বিভাগ, রাজশাহী বিভাগ,  সিলেট বিভাগ, খুলনা বিভাগ ব্যতীত অন্যান্য বিভাগ বসবাস করছে তারা ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্ক, ময়মনসিংহ, যশোর এবং বরিশালে ভিসা আবেদনপত্র কেন্দ্র থেকে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারে। যেসব পাসপোর্টধারী চট্টগ্রাম বিভাগ এর বাসিন্দা কুমিল্লা, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া তারা চট্টগ্রামের ভিসা আবেদনপত্র কেন্দ্র থেকে  ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। বাংলাদেশী নাগরিক, যারা রাজশাহী বিভাগে বাস করছে, তারা রাজশাহী বা  রংপুরের ভিসা আবেদনপত্র কেন্দ্র থেকে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

যারা সিলেট বিভাগে আওতাভুক্ত বসবাসকারী তারা সিলেট মিশন বরাবর আবেদন করবে। যারা খুলনা জেলা আওতাভুক্ত বসবাসকারী তারা খুলনা মিশন বরাবর আবেদন করবে। ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদনকারী বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদেরও কোন ভিসা ফি প্রয়োজন নেই।

বাংলাদেশের যেকোন আইভ্যাক (Indian Visa Application Center)  এ ভিসার জন্য আবেদন পত্র জমা দেয়ার আগেই আবেদনকারী সকল ব্যক্তিবর্গেরও ভিসা প্রসেসিং ফি  পরিশোধ করতে হবে। আপনি বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও যদি আপনার কাছে অন্যদেশের পাসপোর্ট থাকে তবে বৈদেশিক পাসপোর্ট দ্বারা ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

ভিসা আবেদনপত্র প্রত্যাখ্যান

আপনার ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান হতে পারে যদি আপনি জীবনের জন্য হুমকীসরূপ কোন রোগে ভোগেন, মানসিক রোগে ভোগেন। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র চিকিৎসার জন্য ভারত ভ্রমণ করতে পারবেন। এছাড়া মাদকাসক্ত বা মাদক পাচার করেন, অপরাধী বা কোন দেশে কোন অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে থাকেন, কোন দেশ হতে দ্বীপান্তুরিত বা বহিষ্কৃত হয়ে থাকেন, অপর্যাপ্ত/ অসম্পূর্ণ/ মিথ্যা কাগজপত্র দিয়ে থাকেন, অবৈধ ভ্রমণ নথির অধিকারী হয়ে থাকেন, প্রাসঙ্গিক কোন তথ্য গোপন করে থাকেন অথবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতে এমন কোন ভিত্তিতে, যা আবেদনকারীকে ভিসার জন্য অযোগ্য হিসাবে পেশ করবে। কোনো কারণে ভিসা আবেদন রিজেক্ট হলে কী কারণে রিজেক্ট হলো তা আবেদনকারীর কাছে মৌখিকভাবে বা লিখিতভাবে জানানো হবেনা।

ভারতীয় ভিসা আবেদন পদ্ধতি

ভারতীয় টুরিস্ট ভিসা আবেদন এর নিয়মাবলী ও আবেদন এর জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে এগুলো হলো-

⦿ পাসপোর্ট এর ফটোকপি। (প্রথম দুই পেজ)

⦿ ভোটার আইডি কার্ড/ জন্মনিবন্ধন/ স্মার্ট কার্ড এর ফটোকপি (যে ডকুমেন্ট দিয়ে পাসপোর্ট করেছেন।)

⦿ বিদ্যুৎ বিল অথবা ওয়াসার বিল অথবা টেলিফোন বিল এর ফটোকপি।

⦿ যেখানে কর্মরত আছেন সেই কোম্পানির নাম এবং ডেজিগনেশন। শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর আইডি কার্ড। যিনি অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি তার ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত কাগজপত্র থাকতে হবে। ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে তার ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। গৃহিনী হলে বাড়তি কিছু লাগবেনা।

⦿ ইন্ডিয়ান ভিসা সাইজ ছবি। ( ২ ইঞ্চি বাই ২ ইঞ্চি সাইজের রঙিন ছবি। ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা হতে হবে এবং ছবি পূর্বের কোন ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে এমন হওয়া যাবে না। )

⦿ যেইদিন ভিসার আবেদন করবেন আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ সেইদিন থেকে কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে।  অন্তত দু’টি সাদা পাতা থাকতে হবে পাসপোর্টে।

⦿ পুরাতন পাসপোর্ট থাকলে নতুন পাসপোর্টের সাথে পুরোনো পাসপোর্টও জমা দিতে হবে।

⦿ আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ স্বরূপ পাসপোর্টে কমপক্ষে ১৫০ মার্কিন ডলার সমমানের বৈদেশিক মুদ্রার এসডোর্সমেন্ট করতে হবে। ক্রেডিট কার্ড থাকলে কার্ডে এনডোর্স করলেই হবে।

⦿ সর্বশেষ ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর অনুলিপি দিতে হবে। একাউন্টে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা ব্যালেন্স থাকলে ভালো হয়।

⦿ আবেদনকারীকে তাদের ছবি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে অনলাইন এপ্লিকেশন ফরম এ দেয়া নির্ধারিত স্থানে। আবেদনকারীকে অবশ্যই নিশ্চিত থাকতে হবে যেন বর্তমান পাসপোর্টের জন্মতারিখ এবং জন্মস্থান এর সাথে পুরোনো পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং/ অথবা জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্যের মিল থাকে। আবেদনপত্র পূরণ করার পর অবশ্যই ৮ দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে |

⦿ ভারতে শিক্ষার্থী ভিসার উপর আগত ১৮ বছরের নীচের সন্তানের বাবা-মা / আইনী অভিভাবকরা এন্ট্রি ভিসা বিভাগের অধীনে আবেদন করতে পারেন, ১৮ বছরেরও বেশি বয়সের সন্তানের বাবা-মা ভারত ভ্রমণের জন্য পর্যটন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

ভারতীয় বিজনেস ভিসা

ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে ভারত গমনে ইচ্ছুক ব্যাক্তিগণ চাইলে ভারতের বিজনেস ভিসা নিতে পারবেন। বিজনেস ভিসার জন্য যে সকল প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত  ডকুমেন্ট প্রয়োজন সেগুলো হলো-

⦿ বাংলাদেশে আবেদনকারীর প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ের নাম, ঠিকানা ও যোগাযোগের নম্বর। ভারত থেকে যে প্রতিষ্ঠান/ কোম্পানী স্পন্সর করছে, তার চিঠি।

⦿ বাংলাদেশের স্বীকৃত কোন চেম্বার অব কমার্স থেকে সুপারিশ চিঠি, কোন ভারতীয় কোম্পানীর সাথে হয় শেষ ব্যবসায়িক লেনদেন এর ব্যাপারে, নতুবা ব্যবসায়িক লেনদেনের আবেদনপত্র।

⦿ টিন সহ ট্রেড লাইসেন্স এর একটি কপি, সফরের উদ্দেশ্য এবং ব্যবসায়িক চুক্তির প্রকৃতি বর্ণনা করে সহায়ক পত্র, বিগত ছয় মাসের আবেদনকারীর কোম্পানীর ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর কপি।

⦿ কোন কোম্পানী বা প্রাইভেট ফার্মে কর্মরত থাকলে, কর্মসংস্থান চুক্তিপত্রের কপি যেটাতে আবেদনকারীর চুক্তিবদ্ধ হওয়ার তারিখ, অধিষ্ঠিত পদ এবং মাসিক বেতন উল্লেখ থাকবে |

⦿ ভারতে কোন বাণিজ্য / ব্যবসায় প্রদর্শনী/মেলায় অংশগ্রহণ করতে বা ঘুরতে গেলে, অংশগ্রহণের ধরণের বর্ণনা এবং ফেডারেশনের  সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অথবা প্রদর্শনী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ পত্র। স্বল্পমেয়াদী একক সফর ভিসা।

ভারতীয় মেডিকেল ভিসা

⦿ টুরিস্ট ভিসার সাধারণ কাগজপত্র (উপরে উল্লেখিত আছে)।

⦿ নির্দিষ্ট তারিখ দিয়ে ভারত থেকে মেডিকেল আমন্ত্রণ পত্র, সব ঔষধ মূল নথি,পেশা প্রমাণ। স্বীকৃত হাসপাতাল/ ডাক্তার এর কাছ থেকে রোগীর চিকিৎসাধীন অবস্থার বিশদ নির্দেশ সহকারে চিকিৎসার মূল সনদপত্র।

⦿ প্রথম ভ্রমণের ক্ষেত্রে, বিদেশে চিকিৎসা সুবিধা উপভোগের জন্য উপস্থিত ডাক্তারের কাছ থেকে সুপারিশ।

⦿ হাসপাতালে ভর্তি বা দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার জন্য, আর্থিক সম্পদের প্রমাণ, যেমনটি প্রয়োজন হতে পারে: ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর কপি (বিগত ৬ মাসের) ও ব্যাংক থেকে সচ্ছলতার সনদ।

পাসপোর্টে ডলার এন্ডোর্স

সরকারি বেসরকারি যেকোন ব্যাংক থেকেই আপনি ডলার এনডোর্স্মেন্ট করতে পারেন। তবে সাধারণত সরকারি সোনালি ব্যাংক থেকে করাটাই সুবিধাজনক ও বেশিরভাগ মানুষ করে থাকে। কারণ সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট থাকা লাগে না।

আপনি পাসপোর্ট নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে বললেই হবে যে আপনি ডলার কিনবেন। তাহলে ওরা আপনাকে ওইদিনের রেট অনুযায়ী টাকা হিসেব করে আর সার্ভিস ফি নিয়ে ডলার দিবে ও পাসপোর্টের শেষের দিকে পাতায় সিল মেরে দিবে। সাথে একটা কাগজ দিবে এটা হল ‘এনডোর্স্মেন্ট সার্টিফিকেট’।

বর্ডার ও ইমিগ্রেশন

যারা স্থলপথে ভারত যান, বেশিরভাগ মানুষই সাধারণত বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করেন। সবগুলো স্থলবন্দরেই মূল নিয়মাবলী একই। আগে থেকে ট্রাভেল ট্যাক্স জমা না দিয়ে থাকলে প্রথমে বর্ডারে গিয়ে সোনালী ব্যাংকে ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দিতে হবে। এরপর প্রথমে কাস্টমস ও পরে ইমিগ্রেশন এর লাইনে দাঁড়িয়ে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে হয়। সব কাজ শেষ করে বর্ডার ক্রস করতে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা সময় লাগতে পারে। ভারতে যাওয়া ও ফেরার সময় ভারতীয় কাস্টমস প্রায়ই বাংলাদেশী যাত্রীদের হয়রানি করে। কোনো কারণ ছাড়াই ১/২শ রুপি/টাকা ঘুষ দাবি করে। আপনার কাছে চাইলে এর প্রতিবাদ করুন।

বৈদেশিক মুদ্রা

অনেকেরই প্রশ্ন থাকে একজন যাত্রী সর্বোচ্চ কত ডলার পর্যন্ত সাথে করে নিয়ে যেতে পারবে? ভারত ভ্রমণ এর ক্ষেত্রে আপনি বছরে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ডলার নিতে পারবেন। ১২ বছরের কম বয়সী যাত্রী একজন প্রাপ্তবয়স্ক যাত্রীর অর্ধেক পরিমান ডলার সাথে নিতে পারবে।

বাংলাদেশে ফেরার সময় আপনি যে কোন অংকের বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্গে আনতে পারবেন। এনডোর্সমেন্ট লাগবেনা। তবে ৫,০০০ মার্কিন ডলার বা এর বেশি হলে নির্ধারিত FMJ ফরমে শুল্ক কর্তৃপক্ষের নিকট ঘোষণা দিন আপনার কাছে এর বেশি পরিমান টাকা আছে। এর জন্য কোনো শুল্ক প্রদান করতে হবেনা।

চিকিৎসার কাজে ডাক্তারি কাগজপত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে ১০,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত নেয়া যাবে। তার অতিরিক্ত দরকার হলে যেকোন অথরাইজড ব্যাংককে প্রয়োজনীয় কাজগপত্র দেখালেই চলবে! প্রয়োজন সাপেক্ষে অতিরিক্ত মুদ্রার অনুমোদন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তাঁরাই নিয়ে দিবেন। শিক্ষাজনিত কাজে নেয়া যাবে ভ্রমণ কোটার সমান ডলার। তবে  টিউশন ফি, হোস্টেল ফি এসব ব্যাংকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পরিমাণ মুদ্রা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আগেভাগেই জমা দেয়া যাবে কোটার বাইরে। ফরেইনার, এনআরবি’দের আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশি মুদ্রা সীমার শর্ত ছাড়া অন্য কোটা শর্ত খাটবেনা। যেই পরিমাণ বোইদেশিক মুদ্রা নিয়ে দেশে এসেছেন অনধিক সেই পরিমাণ মুদ্রা পাসপোর্টে এনডোর্স ছাড়াই নিয়ে যেতে পারবেন।

আরো পড়ুন

ট্রাভেল সংক্রান্ত তথ্য সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল Green Belt The Travelers এ।

সাজেক ভ্যালি রিসোর্ট রিভিউ

সাজেক ভ্যালিতে থাকার জন্য ছোট বড় প্রায় ১০০টি রিসোর্ট রয়েছে। সাজেক ভ্যালি রিসোর্ট সমূহে থাকার জন্য জনপ্রতি সর্বনিন্ম খরচ হয় ৬শ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। শুক্রবার বা ছুটির দিন এর সাথে অন্যান্য দিনের রুম ভড়ায় পার্থক্য থাকে। ভালো রিসোর্টগুলো সাধারণত  সপ্তাহে ৭ দিনই ফুল বুক থাকে। তাই ভালো রিসোর্টে থাকতে চাইলে আগে থেকে রুম বুকিং দিয়ে যাওয়াই ভালো। সাজেক রিসোর্ট ও কটেজ গুলো নিয়ে আজকের রিভিউ।

সাজেকের ভ্যালি রিসোর্ট ও কটেজ এর ফোন নাম্বার

রিসোর্ট বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রিসোর্টের কোয়ালিটি ও রিসোর্টের অবস্থানকে প্রাধান্য দিবেন। ভিউ খুব একটা ইমপর্টেন্ট না। কারণ সব রিসোর্ট থেকেই কমবেশি ভিউ পাওয়া যায়। রিসোর্ট থেকে বের হলে ভিউতো আছেই। অনেক সময় এরকম দেখা যায় রিসোর্টের ভিউ ভালো, কিন্তু কোয়ালিটির কারণে ওয়াশরুমে ঢোকা যাচ্ছেনা। কিংবা বিছানা ও রুম এতটাই নোংরা, যে থাকার অনুপযোগী। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রিসোর্টের অবস্থান। কিছু রিসোর্ট আছে সাজেকের বাইরে। আবার কিছু রিসোর্ট এমন একটা অবস্থানে যেখান থেকে মূল পয়েন্টে আসতে অনেক বেশি সময় নষ্ট হবে। তাই এই আর্টিকেলে আমরা রিসোর্টের কোয়ালিটি, অবস্থান এবং ভিউ এর সমন্বয় রাখার চেষ্টা করেছি।

রুংরাং রিসোর্ট


রিসোর্ট রুংরাং:
সাজেকের বেস্ট রিসোর্ট গুলোর মধ্যে একটি রিসোর্ট রুংরাং। রিসোর্টের বারান্দা থেকে দিগন্তজোড়া পাহাড়সারি ও মেঘ দেখতে পাবেন। এর অবস্থান আর্মি রিসোর্টের উল্টো পাশে প্রিমিয়াম লোকেশনে। এই রিসোর্টের ইন্টেরিয়র এবং ওয়াশরুম সাজেকের অন্যতম সেরা। রিসোর্টে কাপল ডাবল মিলিয়ে ৮টি রুম আছে। শুক্রবারে এর রুম ভাড়া পড়বে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার মতো। অন্যান্য দিন ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে রুম পাবেন। রুংরাংয়ের বুকিং নাম্বার: 01869-649817, 01632-698158, 01884-710723। ফেসবুক পেজ: Resort RungRang

সাজেক রিসোর্ট: এই রিসোর্টটি বাংলাদেশ আর্মি কর্তৃক পরিচালিত। রুম ভেদে এসি ও নন এসি রুমের ভাড়া পড়বে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো। সাজেক রিসোর্টের রয়েছে নিজস্ব রেস্টুরেন্ট। সেনাবাহিনী বা প্রথম সারির সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য এখানে ডিসকাউন্ট এর ব্যবস্থা রয়েছে। সাজেক রিসোর্টে রুম ভাড়া নেওয়ার জন্য আর্মির রেফারেন্স লাগে। রুম বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন 01859-025694, 01847-070395 অথবা 01769-302370 নাম্বারে।

রুন্ময় রিসোর্ট (Runmoy Resort) : এটি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দ্বারা পরিচালিত রিসোর্ট। এই রিসোর্টের মোট ৫ টি রুম আছে। প্রতিটি রুমে সর্বোচ্চ ২ জন থাকার ব্যবস্থা আছে। ৬০০ টাকা বাড়তি পরিশোধ করলে রুমে অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করা হয়। নিচতলার রুম ভাড়া ৪৪৫০ টাকা, উপরের তলার রুম ভাড়া ৪৯৫০ টাকা। বুকিংয়ের জন্য ফোন করতে পারেন 0186547688 নাম্বারে।

মেঘ মাচাং (Megh Machang): ব্র্যান্ডিং বিবেচনায় এটি সাজেকের অন্যতম একটি রিসোর্ট। এর ভিউ সাজেকের অন্যতম সেরা। মেঘ মাচাংয়ের রুম রয়েছে ৫টি। এখানে রুম বুকিং দেওয়ার জন্য অনেক আগে থেকে ফোন করতে হয়। রুম ভাড়া ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন 01822-168877 নাম্বারে।

মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট: সাজেকের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন রিসোর্ট। এর অবস্থান সাজেক ভ্যালির মাঝামাঝিতে। এই রিসোর্টে রয়েছে ৪টি রুম। রুম ভাড়া পড়বে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। বুকিং নাম্বার 01884-208060

জুমঘর রিসোর্ট: এটি সাজেকের আরেকটি ভালো রিসোর্ট। এর অবস্থান সাজেক ভ্যালির চার্চের কাছাকাছি। জুমঘর রিসোর্ট এর রুম ভাড়া পড়বে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন 01884-208060 নাম্বারে।

সাজেক রিসোর্ট বুকিং এজেন্ট: সাজেকের রিসোর্ট গুলো বুকিংয়ের জন্য অনেকগুলো বুকিং এজেন্ট আছে। আপনার বাজেটের মধ্যে চাহিদামতো রুম বুকিং করে দিতে পারবেন উনারা। উনাদের নিজেদেরও সাজেকে ৩টি রিসোর্ট রয়েছে। ফোন নাম্বার- 01810137002

রিসোর্ট রুংরাং: সাজেকের অন্যতম সেরা একটি রিসোর্ট রুংরাং। রিসোর্টের বারান্দা থেকে দিগন্তজোড়া পাহাড়সারি ও মেঘ দেখতে পাবেন। এর অবস্থান আর্মি রিসোর্টের উল্টো পাশে প্রিমিয়াম লোকেশনে। এই রিসোর্টের ইন্টেরিয়র এবং ওয়াশরুম সাজেকের অন্যতম সেরা। শুক্রবারে এর রুম ভাড়া পড়বে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার মতো। অন্যান্য দিন ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে রুম পাবেন। রুংরাংয়ের বুকিং নাম্বার: 01869-649817

ম্যাডভেঞ্চার রিসোর্ট: লোকেশন ও ভিউ বিবেচনায় সাজেক এর ভালো একটি রিসোর্ট। এর অবস্থান আর্মি নিয়ন্ত্রণাধীন সাজেক রিসোর্ট এর উল্টোপাশে।  এখানে রুম ভাড়া পড়বে ২০০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকার মতো। গ্রিন বেল্ট এর রেফারেন্স দিলে বিশেষ ডিস্কাউন্ট সুবিধা পাওয়া যাবে। ফোন নাম্বার +8801885424242

হাফং তং: এটিও বাজেটের মধ্যে ভালো একটি রিসোর্ট। এই রিসোর্টে ৫টি রুম রয়েছে। রুম ভাড়া পড়বে। ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন 01875-999678 নাম্বারে।

মেঘ বাড়ি হিল কটেজ: কম খরচে থাকার জন্য এটি সাজেকের আরেকটি ভালো রিসোর্ট। ৬টি রুম রয়েছে এই রিসোর্টে। এখানে রুম ভাড়া পড়বে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে। এখানে রুম বুকিংয়ের সময় গ্রিন বেল্ট এর রেফারেন্স দিলে বিশেষ ডিস্কাউন্ট সুবিধা পাওয়া যাবে।  রুম বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন 01884-710723 নাম্বারে।

আলো রিসোর্ট:  আলো রিসোর্ট সাজেক ভ্যালি কটেজ গুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন। এটি সাজেক এর প্রথম কটেজ। কম খরচে থাকার জন্য এটি একটি ভালো রিসোর্ট। কোনো ভিউ নাই। এই রিসোর্টে রুম রয়েছে ৬টি। রুম ভাড়া পড়বে প্রতিরাতের জন্য ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা। বুকিং দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন 01841-000645 নাম্বারে।

লুসাই কটেজ (TGB Lushai Cottage): কাপল ডাবল সব রকম রুম আছে এই রিসোর্টে। মধ্যম মানের ভালো একটি রিসোর্ট। রুম ভাড়া পড়বে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকার মতো। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন 01634-198005 নাম্বারে।

সাম্পারি রিসোর্ট: খোলামেলা পরিবেশ এর জন্য এই রিসোর্ট এর সুনাম আছে। রিসোর্টের ভিউ ভালো। এটি পাহাড়ী আদিবাসী মালিকানাধীন একটি রিসোর্ট।এর রুম ভাড়া ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা। ফোন নাম্বার 01849889055

সালকা রিসোর্ট: পাহাড়ি মালিকানায় পরিচালিত সালকা কটেজ আরেকটি ভালো রিসোর্ট। এখানে ৪টি রুম আছে। রুম ভাড়া পড়োবে ২৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। ফোন নাম্বার +8801847356781

পাহাড়িকা রিসোর্ট: কম বাজেটের মধ্যে এটি আরেকটি ভালো রিসোর্ট। স্টুডেন্ট বাজেট ট্রাভেলাররা এই রিসোর্টে কম খরচে থাকতে পারেন।পাহাড়িকা রিসোর্টে ১২টির মতো রুম রয়েছে। রুম ভাড়া পড়বে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এর বেশি চাইলে না নেওয়াই ভালো। বুকিং নাম্বার 01724-658766, 01871-771777

হিল কটেজ: বাজেটের মধ্যে ভালো একটি রিসোর্ট। এই রিসোর্টের লোকেশন বেশ ভালো। রিসোর্টের সামনেই ফুল ভিউ আছে। রুম ভাড়া ২০০০ টাকা থেকে ২৮০০ টাকা পর্যন্ত। ফোন নাম্বার 01869-649817

খাসরাং রিসোর্ট: সাজেকের সবচেয়ে লাক্সারিয়াস রিসোর্ট। এখানে রুম ভাড়া ১০ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা। ফোন নাম্বার- +8801838049742, +8801568496708

রক প্যারাডাইস: যারা কংলাক পাড়ার উপরে রাত্রি যাপন করতে চান তারা বেছে নিতে পারেন রক প্যারাডাইস কটেজ। তবে মনে রাখা দরকার এটি সাজেক ভ্যালির বাইরে আলাদা একটি পাড়ায়। নিরিবিলিতে থাকার জন্য ভালো রিসোর্ট। ফোন নাম্বার +8801855470477

আদিবাসী ঘর: আপনি ব্যাকপ্যাকার হলে কম খরচে আদিবাসীদের ঘরে থাকতে পারেন। জনপ্রতি ২০০ – ৪০০ টাকার মধ্যে হয়ে যাবে। ফ্যামিলি নিয়ে থাকার জন্য আদিবাসী ঘর ভালো চয়েস হবেনা। তবে বন্ধু বান্ধব মিলে চাইলে থাকা যায়। পরিবার নিয়ে গেলে সাজেক ভ্যালি রিসোর্ট Sajek Valley Resort গুলোতে থাকা উচিত।

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ

সাজেক ভ্যালিতে থাকা খাওয়া কিছুটা খরচ সাপেক্ষ। তাই নিজেরা গ্রুপ করে গেলে খরচ কমানো যেতে পারে। তারপরও খরচ সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া যাক। জিপ ভাড়া ৮ থেকে ১১ হাজার টাকা। আপনি কী কী ঘুরবেন তার উপর জিপ ভাড়া নির্ভর করে। এক জিপে দশ থেকে বারো জন বসা যায়। খাবার জন্য প্রতি বেলা খরচ হবে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। বিভিন্ন এন্ট্রি ফি ও জিপ পার্কিং চার্জ বাবদ খরচ হতে পারে জনপ্রতি ১৫০ টাকা। মনে রাখা দরকার সাজেকে রবি এবং এয়ারটেল ছাড়া আর কোনো ফোনের নেটওয়ার্ক নেই। সাজেক ভ্রমণ এর টিপস সহ পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেতে নিচে দেওয়া গাইডলাইন পড়ুন। ট্যুর প্যাকেজ চাইলে এখানে দেখুন

আরো পড়ুন

ট্রাভেল বিষয়ে নিয়মিত আপডেট থাকতে জয়েন করুন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল Green Belt The Travelers ফেসবুক গ্রুপে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- কোনো কটেজ বা রিসোর্ট এর সাথে কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন নিজ দায়িত্বে করতে হবে। আর্থিক লেনদেন এর বিষয়ে গ্রিন বেল্ট কোনো দায় দায়িত্ব বহন করবে না।

সাজেক ভ্যালি রিসোর্ট রুংরাং

সাজেক ভ্যালি ঘুরতে গেলে আপনার প্রথমেই দরকার পড়বে রিসোর্ট বা কটেজ এর। একটি ভালো রিসোর্ট আপনার ভ্রমণকে আনন্দময় করে তুলতে পারে। সাজেকে ছোট বড় অনেকগুলো রিসোর্ট আছে। এছাড়া থাকার জন্য রয়েছে আদিবাসীদের ঘর। তবে ফ্যামিলি সহ বেড়াতে গেলে আদিবাসী ঘরে থাকা উচিত হবেনা। আজকে আমরা কথা বলবো রুংরাং রিসোর্ট নিয়ে।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। প্রতিটি মৌসুমে সাজেক ভ্যালির আলাদা আলাদা সৌন্দর্য চোখে পড়ে। বর্ষাকালে সাজেক ভ্যালির সৌন্দর্য একরকম, শরতে একরকম আর শীতে অন্যরকম। তাই ভ্রমণপিপাসুরা বছরজুড়ে সাজেকে ছুটে আসেন।  তবে বর্ষার শুরু থেকে শীতের শুরু পর্যন্ত, অর্থাৎ মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রকৃতি সবচেয়ে সতেজ থাকে বলে এসময় সাজেক বেশি সুন্দর। বর্ষাকালে সাজেক ভ্যালিতে সারাদিন মেঘ ভেসে বেড়ায় এখানে সেখানে। মেঘ এসে আপনাকে ঢেকে দিতে পারে যখন তখন।

রুংরাং রিসোর্ট

সাজেক এর প্রানকেন্দ্রে আর্মি রিসোর্ট থেকে কয়েকশ গজের মধ্যেই Sajek Valley Resort রিসোর্ট রুংরাং – Resort RungRang‘এর অবস্থান। দোতলা রিসোর্টের তিন পাশে খোলা বারান্দা। যতদূর চোখ যায় পাহাড়ের সারি। আর ভোর বেলা বারান্দা থেকে দেখা যায় মেঘের মিছিল! রুংরাংয়ের সামনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও পেছনের বারান্দা থেকে সূর্যাস্ত দেখা যায়। একই রিসোর্ট থেকে সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয় উপভোগ করার মতো কটেজ সাজেকে আর খুব একটা নেই।
রুংরাং রিসোর্টে বিদ্যুত সংযোগ আছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক সৌর বিদ্যুৎ এবং বিদ্যুত না থাকলে জেনারেটর এর ব্যবস্থা আছে। সাজেক ভ্যালির বিভিন্ন রিসোর্টে যেখানে পানির সমস্যা, সেখানে এই রিসোর্টে রয়েছে সার্বক্ষণিক পানির ব্যবস্থা। রয়েছে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দৃষ্টিনন্দন ইন্টেরিওর এর কথা বিবেচনায় নিলে রুংরাং রিসোর্ট প্রথম সারিতে থাকবে। আর ওয়াশরুম যাদের অন্যতম কনসার্ন তাদের জন্য রুংরাং’এর রয়েছে সাজেকের সবচেয়ে অত্যাধুনিক ওয়াশরুম। ৪টি ফ্যামিলি এবং ৪টি কাপল রুমের প্রতিটির সাথেই এটাচ ওয়াশরুম রয়েছে।
রুম ভাড়া সিজন ভেদে উঠানামা করে। সাধারণত রুম ভাড়া ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। রুম বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করা যাবে নিচের ফোন নাম্বারে।
রিসোর্ট রুংরাং
রুইলুই পাড়া, সাজেক ভ্যালি।
ফোন নাম্বার:
0186 9649 817
01810-137002
সাজেক ভ্রমণ এর ক্ষেত্রে আর্মি স্কর্ট গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আর্মি স্কর্ট এর সময় জানার জন্য আগে থেকে রিসোর্টে কথা বলে নিন। চান্দের গাড়ি ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রেও রিসোর্টের সহায়তা নেওয়া যায়।
error: Content is protected !!
Exit mobile version