পদ্মা রিসোর্ট মুন্সীগঞ্জ

পদ্মা রিসোর্ট

মুন্সীগঞ্জ জেলার পদ্মা নদীর পাড়ে গড়ে উঠা নয়নাভিরাম একটি রিসোর্টের নাম পদ্মা রিসোর্ট। যারা কর্মব্যস্ত শহরের গন্ডি পেরিয়ে কিছুটা সময় প্রকৃতি আর নদীর সান্নিধ্যে কাটাতে চান তাদের জন্য এটি আদর্শ একটি স্থান। জীবনের শত ধরাবাঁধা নিয়ম, শব্দ আর বায়ুদূষন, নাগরিক কোলাহল থেকে কিছুটা প্রশান্তি এনে দিতে পারে পদ্মা নদীর মাঝখানে জেগে উঠা চরে গড়া নির্মিত এই পদ্মা রিসোর্ট। পরিবার নিয়ে কিংবা বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠার জন্য এটি আদর্শ একটি জায়গা। ঢাকা থেকে পদ্মা রিসোর্ট এর দূরত্ব মাত্র ৫০ কিলোমিটার। সাথে গাড়ি থাকলে যেতে সময় লাগে দেড় ঘন্টা। পদ্মা রিসোর্ট গড়ে উঠেছে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার লৌহজং থানার পাশে পদ্মা নদীর বুকে।

কিভাবে যাবেন পদ্মা রিসোর্ট

পদ্মা রিসোর্টে যেতে হলে ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে লৌহজং আসতে হবে। ঢাকার গুলিস্তান থেকে ছেড়ে আসা গাংচিল অথবা ইলিশ পরিবহনে সরাসরি লৌহজং থানা মসজিদ পর্যন্ত আসতে পারবেন। ভাড়া নিবে জনপ্রতি ৭০ টাকা। মিরপুর ১০, ফার্মগেট বা শাহবাগ থেকে যেতে পারবেন স্বাধীন পরিবহনে। অথবা মাওয়া ঘাট রুটের বাস ‘গ্রেট বিক্রমপুর’ কিংবা ‘গোধুলী’ গেলে নামতে হবে মাওয়া ঘাটের আগেই লৌহজং থানায় যাওয়ার চৌরাস্তার মোড়ে। সেখান থেকে রিকশা বা অটোরিকশাতে ১৫ মিনিটের পথ। আর নিজের গাড়ি নিয়ে গেলে সরাসরিই যাওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে দুই জায়গায় ৬০ টাকা টোল দিতে হবে।

পদ্মা রিসোর্টে যা আছে

এখানে রিসোর্টের বাইরে আছে বিচ চেয়ার। যেখানে হেলান দিয়ে আপনি উপভোগ করতে পারবেন পদ্মা পারের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। পদ্মা রিসোর্টের রয়েছে নিজস্ব ঘোড়া। ঘোড়ায় চড়েও আপনি ঘুরে বেড়াতে পারবেন চাইলে। রিসোর্টের ভিতরে বেশ খানিকটা জায়গা নিয়ে আছে সুসজ্জিত রেস্টুরেন্ট। এখানে ১২০ জন পর্যন্ত বসতে পারে। যারা নৌকা ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি ভালো একটি জায়গা। রিসোর্টের নিজস্ব স্পিডবোট ও রিভারক্রুজের ব্যবস্থা আছে। কান্ট্রিবোটে উঠা যায় একসাথে ২০/২৫ জন। আর যাদের নদীতে মাছ ধরার শখ আছে তারা ফিশিং বোটেও চড়তে পারেন। সব বোটেই সেফটি কিট হিসেবে লাইফ জ্যাকেট আছে।

খাবারের ব্যবস্থা

খাবারের জন্য পদ্মা রিসোর্টে দৃষ্টিনন্দন রেস্টুরেন্ট আছে। সুপরিসর জায়গা নিয়ে করা এই রেস্টুরেন্টে অনায়াসে ২০০ জন মানুষ খেতে পারে। আপনি চাইলে এখানে লাঞ্চ বা ডিনার পার্টির আয়োজন করতে পারবেন। রেস্টুরেন্টে ঢোকার আগে ৩৫০টাকা দিয়ে ফুড টোকেন সংগ্রহ করতে হবে রিসোর্ট অফিস থেকে। লাঞ্চে থাকবে ভাত, ডাল, ইলিশ ফ্রাই, মুরগীর মাংস, সবজি সালাদ। আলাদা ভাবে কিনতে হবে মিনারেল ওয়াটার। দাম পড়বে প্রতি লিটার ৪০ টাকা। আর সকালের নাস্তায় খরচ পড়বে জনপ্রতি ১০০ টাকা। মেনু হিসেবে থাকবে পরোটা, সবজি, ডিম, চা।

পদ্মা রিসোর্ট থাকার খরচ

সারাদিন থাকতে চাইলে এখানে কটেজ ভাড়া পড়বে ভ্যাটসহ ২৩০০ টাকা। সারাদিন এবং একরাত কাটাতে চাইলে ভ্যাটসহ গুনতে হবে ৩৪৫০ টাকা। পদ্মায় ঘুরে বেড়ানোর জন্য স্পিডবোট নিলে ঘন্টাপ্রতি পড়বে ২৫০০ টাকা। সাম্পান নৌকায় ১২০০ টাকা। আর ট্রলারে খরচ হবে ১২০০ টাকা।

পদ্মা রিসোর্ট এর কটেজ সমূহ

থাকার জন্য এখানে ১৬ টি ডুপ্লেক্স কটেজ আছে। এর মধ্যে ১২টির নামকরণ করা হয়েছে বাংলা ১২ মাসের নামে। আর বাকি ৪টা ঋতুর নামে। প্রতিটি কটেজে একটি মাস্টারবেড রুম, দুইটি সিঙ্গেল বেডরুম, এবং একটি ড্রয়িংরুম আছে। আছে দুইটি ব্যালকনি এবং একটি বাথরুম। একটি কটেজে সর্বোচ্চ ৮ জন থাকতে পারবেন। কটেজের চাল দেওয়া হয়েছে সুন্দরী পাতা দিয়ে। ডুপ্লেক্স এইসব কটেজের নিচতলায় রয়েছে একসেট সোফা, টেবিল এবং একটি সিঙ্গেল বেড। শীতে এখানে বাহারী রঙের ফুল ফোটে। আর বর্ষায় পদ্মার অপরূপ রূপ দেখা যাবে রিসোর্টে বসেই।

ভ্রমণ টিপস

পদ্মা রিসোর্ট ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় এখানে প্রচুর পর্যটক ঘুরতে আসে। তাই আসার জন্য আগে থেকে বুকিং দিয়ে আসলে বিড়ম্বনায় পড়তে হবেনা। পর্যটন সম্পর্কিত হোটেল রিসোর্ট সমূহের ভাড়া, যানবাহন ভাড়া এবং অন্যান্য খরচ পরিবর্তিত হতে পারে সময়ের সাথে। তাই ভ্রমণ পরিকল্পনা করার আগে সর্বশেষ খরচ সম্পর্কে জেনে নিন।

যোগাযোগ
পদ্মা রিসোর্ট, লৌহজং – মুন্সীগঞ্জ
ফোন: 01712-170330, 01625-788920
ইমেইল: [email protected]
ফেসবুক : fb.com/ATrueFamilyVacation

ঢাকার আশেপাশে ডে ট্যুর

ঢাকার কাছাকাছি ডে ট্যুর এর জন্য রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো সাভারের সাদুল্লাপুর এর গোলাপ গ্রাম, দোহারের মৈনট ঘাট, কেরানিগঞ্জের সারি ঘাট,  ইত্যাদি। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে দেখুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল ফেসবুক গ্রুপ Green Belt The Travelers ‘এ।

আরো পড়ুন