ভ্রমণে বমি

ভ্রমণে বমির সমস্যা হলে করণীয়

বছরজুড়ে আমরা কোথাও না কোথাও ঘুরতে বের হই। প্রায় সবাই ঈদে গ্রামের বাড়িতে যাই। চাকুরির সুবাদে কাউকে যেতে হয় দূরবর্তী কোনো শহরে। আর প্রকৃতির টানে এখন সবাই কিছুদিন পরপর ছুটে যায় সাগর, পাহাড়, ঝর্ণা কিংবা হাওরে। এর জন্য আমাদেরকে গাড়িতে বা বাসে ভ্রমণ করতে হয়। কিন্তু অনেকেই ভ্রমণে বমি করেন। এই কারণে ভ্রমণের আনন্দ মাটি হয়ে যায়। অথচ জার্নি খুবই চমৎকার উপভোগ্য একটি বিষয়। জার্নিতে বমি হওয়ার এই সমস্যাকে “মোশন সিকনেস” বলে। এই কারণে অনেকের জার্নির ক্ষেত্রে ভীতি পর্যন্ত চলে আসে।

ভ্রমণে বমি কেন হয়

বমির জন্য দায়ী আমাদের কানের ভিতরের অংশের সমন্বয়হীনতা। কানের ভিতরে এক ধরণের তরল (ফ্লুইড) আছে। চলন্ত বাসের ঝাঁকুনিতে এই ফ্লুইড নড়াচড়া করে। যার কারণে আমাদের অন্তঃকর্ণ ব্রেইনকে সিগনাল পাঠায় বডি নড়াচড়া করছে। কিন্তু একই সময়ে চোখ আবার ব্রেইনকে ইনফরমেশন পাঠায় বডি স্থির আছে। দুই রকম ইনফরমেশনের জন্য ব্রেইনে সমন্বয়হীনতা সৃষ্টি হয়। এই ধরণের পরিস্থিতিকে ব্রেইন বিষ হিসেবে চিহ্নিত করে। তখন ব্রেইন চেষ্টা করে শরীর থেকে বিষগুলো বের করে দিতে, সেটা বমি আকারে। তখন ভ্রমণে বমি বমি ভাব হয়।

জার্নিতে বমির সমস্যা রোধে করণীয়

⦿ বাসে ঘুমিয়ে গেলে আর জার্নিতে বমি হয়না। কারণ তখন চোখ মস্তিষ্ককে কোনো ইনফরমেশন দেয়না। তাই ভ্রমণে বমি প্রতিরোধে বাসে উঠে অন্তত চোখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করুন।

⦿গাড়িতে সামনের দিকে বসুন। দৃষ্টি গাড়ির বাইরের দিকে প্রসারিত করুন। গাড়িতে আড়াআড়ি বা উল্টো হয়ে বসবেন না। এতে বমি বমি ভাব হয়। অনেকে পরিবার বা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য পেছনে ফিরে থাকেন। এটা করবেন না।

⦿ গাড়ির পিছনের সিটে বসা থেকে বিরত থাকুন। গাড়ির পেছনের দিকে ঝাঁকি বেশি হয়। আপনার মোশন সিকনেস বেশি হবে এতে। সম্ভব হলে জানালা খুলে দিন। বাতাসে ভালো লাগবে।

⦿ যাত্রাপথে ভারী খাবার থেকে বিরত থাকুন। ভ্রমণে বমি রোধে লেবু অথবা আদা চা খেতে পারেন। আদা মৌরি, দারুচিনি বা লবঙ্গ চিবোতে পারেন। আদা সবচেয়ে বেশি উপকারী।

⦿যাত্রাপথে বই পড়া, মোবাইলে গেমস খেলা বা ফোনে নেট ব্রাউজিং থেকে বিরত থাকুন। মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে মোশন সিকনেস বেড়ে যাবে।

⦿ গাড়িতে উঠলেই আমার বমি হবে এসব চিন্তা মাথায় আনবেন না ভ্রমণের সময়। অন্য কিছু ভেবে মনকে প্রফুল্ল রাখুন। চাইলে গান শুনতে পারেন।

⦿ ভ্রমণে বমি ভাব বন্ধ করার কিছু ওষুধ আছে। গাড়িতে উঠার আগে এই ওষুধ খেতে পারেন। সাধারণত যাত্রার ৩০ মিনিট আগে এই ওষুধ খেতে হয়। যেকোনো ফার্মেসিতেই বমির ওষুধ পাওয়া যায়। তবে ওষুধ অবশ্যই চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।

⦿যাত্রাপথে ধুমপান থেকে বিরত থাকুন।

আরো ট্রাভেল টিপস পড়ুন

⦿ কম্পাস ছাড়া দিক নির্ণয়
⦿ গর্ভাবস্থায় ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য
⦿ সলো ট্রাভেল বা একা ভ্রমণ এর টিপস
⦿ ট্রাভেল ফটোগ্রাফি টিপস
⦿ বিদেশ ভ্রমণ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

ভ্রমণ করতে আমরা সবাই ভালোবাসি। ভ্রমণ আমাদের মনকে বড় করে, নিজেকে প্রশান্ত করে। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল Green Belt The Travelers এ। হ্যাপি ট্রাভেলিং।