সোনাইছড়ি ট্রেইল

সোনাইছড়ি ট্রেইল এর অবস্থান চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলায়। মিরসরাই সীতাকুন্ডে যতগুলো ট্রেইল আছে তার মধ্যে এই ট্রেইলটি সবচেয়ে এডভেঞ্চারাস, সবচেয়ে দূর্গম এবং সবচেয়ে সুন্দর! তিন্দুর মতো বড় বড় পাথরের বোল্ডার আছে সোনাইছড়ি ট্রেইলে। বৃষ্টির দিনে পাথরগুলো বেশ পিচ্ছিল হয়ে যায়। খাড়া পাহাড়ের পাথরের দেয়াল আর বাদুইজ্জাকুম এর ভয়ঙ্কর সুন্দর পথ রোমাঞ্চকর অনুভূতি দেয়। এই ট্রেইলের বাদুইজ্জাকুম বা বাঁদরে কুম সরু অথচ গভীর একটি কুম। এর দুইপাশে ১০০ থেকে ১৫০ ফুট উঁচু পাথরের দেয়াল। কুমে শত শত বাদুরের বসবাস। উপরে গাছপালা ও খাড়া দেয়ালের জন্য নিচে সূর্যের আলো আসেনা সব জায়গায়।  এই দীর্ঘ পথ পার হয়ে ট্রেইলের শেষ মাথায় সোনাইছড়ি ঝর্ণা এর দেখা মিলবে। তখন ট্রেকিংয়ের সব ক্লান্তি নিমিষে উবে যাবে। সোনাইছড়ি ট্রেইলের দৈর্ঘ্য ২৮ কিলোমিটার!

কিভাবে যাবেন সোনাইছড়ি ট্রেইল

সোনাইছড়ি ঝর্ণা দেখতে হলে আপনাকে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার হাদি ফকির হাট বাজারে আসতে হবে। এরপর হাদি ফকিরহাটের জামে মসজিদের সামনে থেকে সিএনজি নিয়ে বড় পাথর স্থানে চলে আসুন। এখান থেকেই ট্রেকিং শুরু। পুরো সোনাইছড়ি ট্রেইল শেষ করে আসতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। যেতে ৪ ঘন্টা লাগলে, ফিরতে ১ ঘন্টা সময় লাগবে। পাহাড়ের উপর দিয়ে ফেরার শর্টকাট রাস্তা আছে।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রামী বাসে উঠে মিরসরাই এর হাদি ফকিরহাট বাজারে নামবেন। বাসে উঠে সুপারভাইজারকে আগে থেকে বলে রাখবেন আপনাকে যেন হাদি ফকিরহাট নামিয়ে দেয়। সীতাকুন্ডের পর আরো একটি ফকিরহাট আছে। আপনি নামবেন মিরসরাই হাদি ফকির হাট। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। বাসের মান ভেদে ভাড়া ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম থেকে সোনাইছড়ি ট্রেইল আসতে হলে চট্টগ্রামের কদমতলী, মাদারবাড়ি, অলংকার ও একে খান মোড় থেকে ফেনী বারৈয়ারহাটের বাস আছে। বাসে হাদি ফকিরহাট পর্যন্ত যেতে ১ থেকে ১.৫ ঘন্টার মতো সময় লাগবে। চট্টগ্রাম থেকে হাদি ফকির হাটের দূরত্ব ৫০ কিলোমিটারের মতো।

ট্রেনে সোনাইছড়ি ট্রেইল

ঢাকা থেকে সোনাইছড়ি ট্রেইল তথা হাদি ফকিরহাটের সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যাবেন মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী বাসে করে মিরসরাই বাজার পার হয়ে হাদি ফকিরহাট নামতে হবে। মহিপাল থেকে হাদি ফকিরহাট বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে আসা চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে হাদি ফকিরহাট বাজারে আসা যাবে।

ছবি: শাহাদাত

কোথায় খাবেন

গাইডের সাথে কথা বলে স্থানীয় কোনো বাড়িতে বাজার করে দেওয়ার বিনিময়ে দুপুরের খাবার খেতে পারেন। এছাড়া হাদি ফকিরহাট বাজারে খাবার পাওয়া যাবে। আরেকটু ভালো খাবার চাইলে নিকটস্থ  মিরসরাই বাজার আছে। সেখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে জনপ্রতি ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মতো।

কোথায় থাকবেন

সোনাইছড়ি ট্রেইল গেলে থাকার জন্য আপনাকে সীতাকুন্ড বাজারে আসতে হবে। সীতাকুন্ডে মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

সোনাইছড়ি ট্রেইল ভ্রমণ টিপস

ফকিরহাট বাজার থেকে স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবে নিয়ে নিন। গাইড ফি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। ঝর্ণার ট্রেইলে সবসময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ট্রেইলে প্রতিটা স্টেপে নিজের কমনসেন্স ব্যাবহার করুন। গ্রুপ করে ঘুরতে যাওয়াই ভালো। ভ্রমণ সম্পর্কিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডকে বলা যায় ঝর্ণা উপত্যকা। সোনাইছড়ি ট্রেইল এর আশেপাশে আরো অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। এগুলোর মধ্যে এগুলোর মধ্যে রয়েছে বাওয়াছড়া লেক, হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল। আশেপাশে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে কমলদহ ঝর্ণা,  বড়তাকিয়া বাজারের কাছে আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নদুয়ারী বাজারের কাছে  নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা। আর চট্টগ্রামের দিকে দশ বারো কিলোমিটার গেলে পড়বে চন্দ্রনাথ পাহাড় কিংবা গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত।

আরো পড়ুন

ঝরঝরি ঝর্ণা ট্রেইল

ঝরঝরি ঝর্ণা ট্রেইল হলো সীতাকুন্ড মিরসরাই রেঞ্জের অন্যতম এডভেঞ্চারাস একটি ট্রেইল। এর অবস্থান চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায়। সবুজে ঘেরা পাহাড়ি পথ দিয়ে হেঁটে যখন আপনি ঝর্ণার কাছে পৌঁছাবেন তখন আপনার সমস্ত ক্লান্তি উবে যাবে। ঝরঝরি ঝর্ণার পাশ দিয়ে পাহাড় বেয়ে উপরে গেলে আরো কয়েকটি ক্যাসকেড পাবেন। এর মধ্যে স্বর্গের সিঁড়ি নামে একটি ক্যাসকেড আপনাকে মুগ্ধ করবে। এটি দেখতে অনেকটা খাঁজকাটা সিঁড়ির মতো। এই ট্রেইলের শেষে রয়েছে মূর্তি ঝর্ণা নামে আরো একটি ক্যাসকেড।

কিভাবে যাবেন ঝরঝরি ঝর্ণা

ঝরঝরি ঝর্ণা যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার পন্থিছিলা বাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামী বাসে উঠে মিরসরাই এর পরে পন্থিছিলা বাজারে নামবেন। এটি সীতাকুন্ডের আগেই পড়বে। বাসে উঠে সুপারভাইজারকে আগে থেকে বলে রাখবেন আপনাকে যেন পন্থিছিলা নামিয়ে দেয়। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে পন্থিছিলা পর্যন্ত আসতে সময় লাগে পাঁচ ঘন্টা। বাসের মান ভেদে ভাড়া ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম থেকে ঝরঝরি ঝর্ণা আসতে হলে চট্টগ্রামের কদমতলী, মাদারবাড়ি, অলংকার ও একে খান মোড় থেকে ফেনী বারৈয়ারহাটের বাস আছে। বাসে পন্থিছিলা পর্যন্ত যেতে ১ থেকে দেড় ঘন্টার মতো সময় লাগবে। চট্টগ্রাম থেকে পন্থিছিলার দূরত্ব ৪৫ কিলোমিটারের মতো।

ট্রেনে সীতাকুন্ড

ঢাকা থেকে পন্থিছিলা তথা সীতাকুন্ডের সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যাবেন মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী বাসে করে মিরসরাই বাজার পার হয়ে পন্থিছিলা নামতে হবে। মহিপাল থেকে পন্থিছিলার বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে আসা চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে পন্থিছিলা বাজারে আসা যাবে।

পন্থিছিলা থেকে ঝরঝরি ঝর্ণা

পন্থিছিলা বাজার থেকে পূর্বদিকে কিছুদূর হেঁটে গেলে রেললাইন পাবেন। রেললাইন ধরে বামদিকে ৫/৭ মিনিট হাঁটলে একটা মাটির রাস্তা দেখবেন ডান দিকে চলে গেছে। এই রাস্তা দিয়ে ২০ মিনিট গেলে কানি ঝিরির দেখা মিলবে। তারপর হাঁটতে থাকলে কিছুক্ষণ পর একটা পাহাড় ডিঙাতে হবে। ৩০ মিনিট হাঁটলে ঝরঝরি ঝর্ণা আপনার সামনে চলে আসবে। ঝিরি ধরে আরো ২০ মিনিট সামনে গেলে স্বর্গের সিঁড়ি নামক মায়াবী ক্যাসকেড পাবেন। এরপর আরো ঘন্টাখানেক হাঁটার পর মানুষের মূর্তি আকৃতির একটা ঝর্ণা পাবেন। যেটি মূর্তি ঝর্ণা নামে পরিচিত। পন্থিছিলা বাজার থেকে ঝরঝরি ঝর্ণা পর্যন্ত যেতে ১ ঘন্টা সময় লাগে। আর পুরো ট্রেইল শেষ করতে ৫/৬ ঘন্টা সময় লাগতে পারে।

কোথায় খাবেন

ঝরঝরি ঝর্ণা এর আশেপাশে খাবার মতো দোকান নেই। গাইডের সাথে কথা বলে স্থানীয় কোনো বাড়িতে বাজার করে দেওয়ার বিনিময়ে দুপুরের খাবার খেতে পারবেন। এছাড়া আরেকটু ভালো খাবার চাইলে  সীতাকুন্ড বাজারে খাওয়া যায়। সীতাকুন্ড বাজারে হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো।

কোথায় থাকবেন

পন্থিছিলার কাছে সীতাকুন্ড বাজারে মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

ভ্রমণ টিপস

পন্থিছিলা বাজার থেকে স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবে নিয়ে নিন। গাইড ফি ৩০০/৪০০ টাকা। ঝরঝরি ঝর্ণায় যাওয়ার উপযুক্ত সময় বর্ষার শেষে। ভরা বর্ষায় ঝরঝরির পর বাকি ঝর্ণাগুলো একটু দূর্গম হয়ে যায়। নতুন ট্রেকার হলে আপনি ট্রেইল নাও শেষ করতে পারতে পারেন। ঝর্ণার ট্রেইল যত সহজ মনে হোক না কেন, ঝর্ণা মানেই এদিক ওদিক বিপদ ওৎ পেতে থাকে। এজন্য সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ট্রেইলে প্রতিটা স্টেপে নিজের কমনসেন্স ব্যাবহার করুন। গ্রুপ করে ঘুরতে যাওয়াই ভালো। ভ্রমণ সম্পর্কিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডকে বলা যায় ঝর্ণা উপত্যকা। ঝরঝরির ঝর্ণার আশেপাশে আরো অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বাওয়াছড়া লেক, হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল সহ আশেপাশে আরো কয়েকটা ঝর্ণা। আশেপাশে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে কমলদহ ঝর্ণা,  বড়তাকিয়া বাজারের কাছে আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নদুয়ারী বাজারের কাছে  নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা। আর চট্টগ্রামের দিকে দশ বারো কিলোমিটার গেলে পড়বে চন্দ্রনাথ পাহাড় কিংবা গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত। মিরসরাইতে আছে এই রেঞ্জের সবচেয়ে এডভেঞ্চারাস ঝর্ণা সোনাইছড়ি ট্রেইল

আরো পড়ুন

বাওয়াছড়া লেক

বাওয়াছড়া লেক এর অবস্থান চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ওয়াহেদপুর গ্রামে। ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়ে থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দুরত্বে। স্থানীয় বাওয়াছড়া লেক অনেকের কাছে নীলাম্বর লেক নামে পরিচিত। বারমাসি ছড়ার কাছাকাছি অবস্থানের কারণে স্থানীয়রা একে বাওয়াছড়া লেক নামে চিনে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই লেকের চারপাশ ঘন সবুজে ঢাকা, পাখির কলতানে মুখরিত থাকে চারপাশ। জায়গাটা পাহাড় লেক ঝিরির অপূর্ব মিলনস্থল। জোছনা রাতে ক্যাম্পিং করার জন্য এটা উপযুক্ত একটা স্থান। বাওয়াছড়া লেক থেকে কিছুদূর সামনে গেলে পাবেন হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল। যেখানে আছে ছোট ঝর্ণা ক্যাসকেড আর মনমুগ্ধকর ঝিরিপথ।

কিভাবে যাবেন বাওয়াছড়া লেক

বাওয়াছড়া লেক যাওয়ার জন্য প্রথমে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ছোট কমলদহ বাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি ছোট কমলদহ আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে মীরসরাইয়ের ছোট কমলদহ বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে ছোট কমলদহ পর্যন্ত যেতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া এসি – নন এসি মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

যারা চট্টগ্রাম থেকে আসবেন তারা ফেনী বা বারৈয়ারহাটগামী যেকোনো বাসে কমলদহ আসতে পারবেন। অলংকার ও একে খান থেকে ফেনী বারৈয়ারহাট এর বাস ছাড়ে। ভাড়া পড়োবে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। যেতে দেড় ঘন্টার মতো সময় লাগতে পারে।

ঢাকা থেকে ট্রেনে

ঢাকা থেকে ছোট কমলদহ এর সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই ছোট কমলদহ যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে ছোট কমলদহ এর বাস ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

ছোট কমলদহ থেকে বাওয়াছড়া লেক

ছোট কমলদহ থেকে রাস্তার পূর্বদিকে গেলে ঈদগাহ পাবেন। ঈদগাহ পার হয়ে আরো পূর্ব দিকে গেলে রেললাইন পড়বে। মেইন রোড থেকে রেললাইন পর্যন্ত হেঁটে যেতে ২০ মিনিট সময় লাগে। রেললাইন পৌঁছানোর পর হাতের ডান পাশে ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে সরু একটা মাটির রাস্তা দেখা যায়। সর্বোচ্চ ২ হাত চওড়া এই রাস্তা ধরে ১০ মিনিট সামনে গেলে কয়েকটা বাড়ি দেখবেন। ওখানে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই বাওয়াছড়া লেক দেখিয়ে দিবে। সেখান থেকে ৫ মিনিটের পথ। অনেকেই এটিকে নীলাম্বর লেক নামে চিনতে পারে।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

বাওয়াছড়া লেক যাওয়ার উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। শুকনো মৌসুমে এখানে পানি খুব কম থাকে। তাই বর্ষাতেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। বাজারের পর আর কোথাও খাবার দোকান পাবেন না। নিজের সাথে খাবার বহন করুন। বাজারের পর রেললাইনের পাশে যেসব বাড়ির দেখা পাবেন ওখান থেকে ছোট কাউকে গাইড হিসেবে নিতে পারেন। তাকে ২০০ টাকা দিলেই হবে। ভ্রমণ সম্পর্কিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডকে বলা যায় লেক – ঝর্ণার উপত্যকা। বাওয়াছড়া লেক তথা নীলাম্বর লেক গেলে একইদিন হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল সহ আশেপাশে আরো কয়েকটা ঝর্ণা ও ট্রেইলে যেতে পারবেন। পুরোটা নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। আশেপাশে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে পন্থিছিলার ঝরঝরি ঝর্ণা, কমলদহের  কমলদহ ঝর্ণা,  বড়তাকিয়া বাজারের কাছে আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নদুয়ারী বাজারের কাছে  নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা। আর চট্টগ্রামের দিকে দশ বারো কিলোমিটার গেলে পড়বে চন্দ্রনাথ পাহাড় কিংবা গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত।

 

আরো পড়ুন

হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল

হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল এর অবস্থান মিরসরাই এর ছোট কমলদহে। মিরসরাই সীতাকুন্ডে যতগুলো ট্রেইল আছে তার মধ্য হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল সবচেয়ে সহজ একটি ট্রেইল। একসময় এখানে ঝর্ণার কুমে পানি খেতে আসা হরিণ শিকার করা হতো। তাই এর নাম হরিণমারা। এই ট্রেইল এর আরো একটি ছোট ঝর্ণার নাম সর্পপ্রপাত। সর্পপ্রপাত এর পাশেই পড়বে বাওয়াছড়ার মুখ। ট্রেইলের ঝর্ণাগুলো আকারে ছোট বলে এগুলোকে ক্যাসকেড বলাই ভালো। জায়গাটা পাহাড় লেক ঝিরির অপূর্ব মিলনস্থল। রুট এর শুরুতেই আছে নীলাম্বর লেক। যেখানে আপনি চাইলে ক্যাম্পিং করতে পারবেন।

কিভাবে যাবেন

হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ছোট কমলদহ বাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি ছোট কমলদহ আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে মীরসরাইয়ের ছোট কমলদহ বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে ছোট কমলদহ পর্যন্ত যেতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া এসি – নন এসি মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

যারা চট্টগ্রাম থেকে আসবেন তারা ফেনী বা বারৈয়ারহাটগামী যেকোনো বাসে কমলদহ আসতে পারবেন। অলংকার ও একে খান থেকে ফেনী বারৈয়ারহাট এর বাস ছাড়ে। ভাড়া পড়োবে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। যেতে দেড় ঘন্টার মতো সময় লাগতে পারে।

ঢাকা থেকে ট্রেনে

ঢাকা থেকে ছোট কমলদহ এর সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই ছোট কমলদহ যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে ছোট কমলদহ এর বাস ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

কমলদহ থেকে হারিণমারা ট্রেইল

ছোট কমলদহ থেকে রাস্তার পূর্বদিকে গেলে ঈদগাহ পাবেন। ঈদগাহ পার হয়ে আরো পূর্ব দিকে গেলে রেললাইন পড়বে। মেইন রোড থেকে রেললাইন পর্যন্ত হেঁটে যেতে ২০ মিনিট সময় লাগবে।রেললাইন পৌঁছানোর পর হাতের ডান পাশে ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে সরু একটা মাটির রাস্তা দেখতে পাবেন। সর্বোচ্চ ২ হাত চওড়া এই রাস্তা ধরে ১০ মিনিট সামনে গেলে কয়েকটা বাড়ি দেখবেন। বাড়িগুলোর পর ৫ মিনিট সামনে গেলেই নীলাম্বর লেক পাবেন। এরপর আরো কিছুদূর সামনে গেলেই ঝিরিপথের দেখা পাবেন। হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল এর শুরু এখানে।

ঝিরি ধরে কিছুটা সামনে গেলে দেখবেন ঝিরিপথ দুই ভাগ হয়ে গিয়েছে। বামের দিকে গেলে পাবেন হরিণমারা ঝর্ণা। আর ডানের দিকে এগুলে কিছুদূর পর দেখবেন ঝিরি আবার দুই ভাগ হয়ে গিয়েছে। এবার ডানপাশে গেলে সর্পপ্রপাত ঝর্ণা পাবেন, আর বামে গেলে হাঁটুভাঙ্গা ঝর্ণার দেখা মিলবে।

ভ্রমণ টিপস

হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল যাওয়ার উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। শুকনো মৌসুমে এখানে পানি খুব কম থাকে। তাই বর্ষাতেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। বাজারের পর আর কোথাও খাবার দোকান পাবেন না। নিজের সাথে খাবার বহন করুন। বাজারের পর রেললাইনের পাশে যেসব বাড়ির দেখা পাবেন ওখান থেকে ছোট কাউকে গাইড হিসেবে নিতে পারেন। তাকে ২০০ টাকা দিলেই হবে। ভ্রমণ সম্পর্কিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডকে বলা যায় লেক – ঝর্ণার উপত্যকা। বাওয়াছড়া লেক তথা নীলাম্বর লেক গেলে একইদিন হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল সহ আশেপাশে আরো কয়েকটা ঝর্ণা ও ট্রেইলে যেতে পারবেন। পুরোটা নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। আশেপাশে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে এই রুটের সবচেয়ে দীর্ঘ ট্রেইল এর ঝরঝরি ঝর্ণা। সবচেয়ে এডভেঞ্চারাস সোনাইছড়ি ট্রেইল,  বড়তাকিয়া বাজারের কাছে আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নদুয়ারী বাজারের কাছে  নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা। আর চট্টগ্রামের দিকে দশ বারো কিলোমিটার গেলে পড়বে চন্দ্রনাথ পাহাড় কিংবা গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত।

 

আরো পড়ুন

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত এর অবস্থান চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলায়। পাহাড় ঝর্ণা সমুদ্র সব মিলিয়ে সীতাকুন্ড উপজেলা প্রাকৃতিক রূপ বৈচিত্রে অনন্য। এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলো পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। তাই সারা বছরই এখানে সারা দেশ থেকে প্রচুর ভ্রমণপিপাসু মানুষ বেড়াতে আসেন। ঝাউ বাগান, জেগে উঠা ঘাসের চর, বালির মাঠ, খোলা সমুদ্রের হাওয়া সব মিলিয়ে কিছুটা সময় আপনি প্রকৃতির মাঝে কাটিয়ে দিতে পারবেন। এখানে সূর্যাস্ত অনেক বেশি মনোমুগ্ধকর। বিকেলটা আপনার কাছে বেশি ভালো লাগবে। এই বিচ এর মূল আকর্ষণ একটা লোহার ব্রিজ। এই ব্রিজ এর উপর দিয়ে আপনি সমুদ্রের উপর হাঁটতে পারবেন। বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত এর পাশে গুলিয়াখালী সৈকত নামে আরো একটি বিচ আছে।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত যাওয়ার জন্য চট্টগ্রামী বাসে উঠে সীতাকুন্ড বাজার পার হয়ে বাঁশবাড়িয়া বাজারে নামতে হবে। এটি চট্টগ্রাম এর আগেই পরবে। বাসে উঠে সুপারভাইজারকে আগে থেকে বলে রাখবেন আপনাকে যেন বাঁশবাড়িয়া নামিয়ে দেয়। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ, সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুন্ড পর্যন্ত আসতে সময় লাগে পাঁচ ঘন্টা। বাসের মান ভেদে ভাড়া ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম থেকে আসতে চাইলে চট্টগ্রামের একে খান বা অলংকার মোড় থেকে সীতাকুন্ড যাওয়ার লেগুনা পাবেন। ভাড়া জনপ্রতি ৩০/৪০ টাকা। যেতে ৪০/৪৫ মিনিটের মতো সময় লাগতে পারে। চট্টগ্রাম থেকে বাঁশবাড়িয়ার দূরত্ব ২৫ কিলোমিটারের মতো।

ট্রেনে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম মেইল নামে একটা ট্রেন আছে। এই ট্রেনটা সীতাকুন্ড দাঁড়ায়। এছাড়া সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যাবেন মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী বাসে করে সীতাকুন্ড বাজার পার হয়ে বাঁশবাড়িয়া নামতে হবে। মহিপাল থেকে বাঁশবাড়িয়ার বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১২০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে আসা চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে বাঁশবাড়িয়া বাজারে আসা যাবে।

বাঁশবাড়িয়া বাজারে নেমে সিএনজি নিয়ে ১৫ মিনিটেই বাঁশবাড়িয়া সি বিচ যেতে পারবেন। রিজার্ভ সিএনজিতে ভাড়া পড়বে ৭০ থেকে ১০০ টাকা।

কোথায় খাবেন

বাঁশ বাড়িয়া সমুদ্র সৈকত এর পাশে সম্প্রতি কিছু খাবার দোকান হয়েছে। পর্যটকদের চাপ থাকলে তখন শুধুমাত্র ওগুলো খোলা থাকে। এছাড়া সীতাকুন্ড বাজারে আপনি খেতে পারবেন। খাবারের জন্য হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের বাসে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারেন।

কোথায় থাকবেন

সীতাকুন্ড বাজারে মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ এর জন্য একটা বিকেলই যথেষ্ট। আপনি একদিনের ট্যুর প্ল্যান করলে আশেপাশে আরো অনেককিছু দেখতে পারবেন। পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেকগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান রয়েছে। বাঁশবাড়িয়ার কাছেই রয়েছে সীতাকুন্ড ইকো পার্ক,  গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, ঝরঝরি ঝর্ণা আর সোনাইছড়ি ট্রেইল। সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে আছে  সুপ্তধারা ঝর্ণা, সহস্রধারা ঝর্ণা। কাছেই চন্দ্রনাথ পাহাড়। আপনি কতগুলো স্পট ভ্রমণ করতে পারবেন সেটা নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। আর হাইওয়ে ধরে সীতাকুন্ড থেকে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগুলে পাবেন কমলদহ ঝর্ণা। যদি বিশ কিলোমিটার যান তাহলে  খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার ট্রেইল পাড়বে। ভ্রমণ বিষয়ে আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ সতর্কতা

স্থানীয় মতামতকে কখনোই অগ্রাহ্য করবেন না। ভাটার সময় কোনোভাবেই সমুদ্রে নামবেন না। তখন সাঁতার কাজে দিবেনা। শান্ত সমুদ্রে শুধুমাত্র ভাটার সময় নামার কারণে গত কয়েক বছরে অনেকেই বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত বেড়াতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই ১৫ থেকে ২৩ বছর বয়সী। যাদেরকে ভাটার কারণ দেখিয়ে স্থানীয়রা সমুদ্রে নামতে নিষেধ করেছিলো। কিন্তু উনারা নিষেধ অমান্য করেই সমুদ্রে নেমেছে। এই বয়সে স্থানীয়দের মতামতকে অগ্রাহ্য করার প্রবণতা থাকে অনেক তরুণের মধ্যে।

আরো পড়ুন

সহস্রধারা ঝর্ণা

সীতাকুন্ড মিরসরাইকে ঝর্ণা উপত্যকা বলা যায়! পাশাপাশি এই দুই উপজেলার ২০ কিলোমিটারের মধ্যে ছড়িয়ে আছে ছোট বড় অনেকগুলো ঝর্ণা। সহস্রধারা ঝর্ণা এর অবস্থানও চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায়। এটি সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে। সহস্রধারা জলপ্রপাত এ সারা বছর কম বেশি পানি থাকে। শীতকালে একটু কম পানি থাকলেও বর্ষায় জলপ্রপাত তার রূপের পূর্ণতা পায়। সহস্রধারা ঝর্ণা এর কাছাকাছি সুপ্তধারা নামে আরো একটা ঝর্ণা আছে।

কখন যাবেন

বৃষ্টির দিনে প্রকৃতি সবচেয়ে সুন্দর থাকে। ঝর্ণা দেখার সেরা সময়ও বর্ষাকাল। বর্ষায় ঝর্ণাগুলো তার পূর্ণ যৌবন লাভ করে। বলা চলে জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সহস্রধারা ঝর্ণা যাওয়ার উপযুক্ত সময়। তখন জলপ্রপাতের সৌন্দর্য ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। সৌন্দর্যের টানে দেশের নানান প্রান্ত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা সীতাকুন্ডে ছুটে আসেন।

কিভাবে যাবেন সহস্রধারা ঝর্ণা

সহস্রধারা জলপ্রপাত এর অবস্থান সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে। তাই আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি সীতাকুন্ড আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুন্ড পর্যন্ত আসতে সময় লাগে পাঁচ ঘন্টা। বাসের মান ভেদে ভাড়া ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। বাসে এলে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ড বাজার থেকে ২ কিলোমিটার সামনে ফকিরহাট নামক জায়গায়।

চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুন্ডের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। চট্টগ্রামের কদমতলী, মাদারবাড়ি, অলংকার ও একে খান মোড় থেকে সীতাকুন্ডের বাস পাবেন। বাসে যেতে ৪০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টার মতো সময় লাগে। বাস থেকে নামতে হবে সীতাকুন্ডের আগে ফকিরহাট স্টপেজে।

ট্রেনে সীতাকুন্ড

ঢাকা থেকে সহস্রধারা ঝর্ণা তথা সীতাকুন্ড যাওয়ার একটাই ট্রেন আছে। চট্টগ্রাম মেইল। এছাড়া সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যাবেন মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী বাসে করে সীতাকুন্ড বাজার পার হয়ে ফকিরহাট নামতে হবে। মহিপাল থেকে সীতাকুন্ডের বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে আসা চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে সীতাকুন্ড বাজারে আসা যাবে।

কোথায় থাকবেন

সীতাকুন্ড পৌরসভায় থাকার জন্য মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে আপনাকে ৪০ কিলোমিটার দূরের চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে।

কোথায় খাবেন

হালকা নাস্তা করার মতো কয়েকটি দোকান আছে সহস্রধারা ঝর্ণা যাওয়ার আগে সীতাকুন্ড ইকোপার্কের প্রবেশ মুখে। আর ভারী খাবার খেতে চাইলে আপনাকে সীতাকুন্ড বাজারে আসতে হবে। খাবারের জন্য হোটেল আল আমিন, সৌদিয়া ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ডাল, ভর্তা,  সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা জনপ্রতি ১৩০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের গাড়িতে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারবেন।

সহস্রধারা ঝর্ণা ভ্রমণ টিপস

সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর আশাপাশে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। সারাদিনে অনেকগুলো স্পটে ঘুরে দেখতে চাইলে একটা সিএনজি রিজার্ভ নিয়ে নিন। সারাদিনের জন্য রিজার্ভ নিলে ভাড়া পড়বে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। রাতের বাসে গেলে বেশ ভোরে পৌঁছে যাবেন। সেক্ষেত্রে ফকিরহাট পর্যন্ত না গিয়ে সীতাকুন্ড বাজারে নামুন। সীতাকুন্ডে নাস্তা সেরে তারপর রওয়ানা করুন। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না। এটা আপনার পার্সোনালিটিকে রিপ্রেজেন্ট করে।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ড প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। সীতাকুন্ড গেলে সুপ্তধারা ও সহস্রধারা ঝর্ণা বাদেও  আরো অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। আপনি কয়টা স্পট ভ্রমণ করতে পারবেন এটা নির্ভর করবে আপনার ম্যানেজমেন্টের উপর।  চন্দ্রনাথ পাহাড় আর গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত সীতাকুন্ড ইকো পার্কের পাঁচ কিলোমিটার এর মধ্যে। কাছেই আছে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত। আর হাইওয়ে ধরে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগুলে পাবেন কমলদহ ঝর্ণা। যদি বিশ কিলোমিটার যান তাহলে  খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার ট্রেইল পাড়বে। ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য সম্পর্কে আপডেট থাকতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

আরো পড়ুন

সুপ্তধারা ঝর্ণা

সুপ্তধারা ঝর্ণা (Suptadhara Waterfall) এর অবস্থান চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার চন্দ্রনাথ রিজার্ভ ফরেস্ট এর ভিতরে। বিশাল চিরসবুজ বনভূমি, বন্যপ্রাণী ও হরেক রকম বৃক্ষরাজির মনোরম পরিবেশেকে অন্য একটা মাত্রা দিয়েছে এই ঝর্ণা। সারা বছরই এখানে কম বেশি পানি থাকে। শীতকালে সুপ্তধারা জলপ্রপাত এ পানি একটু কম থাকলেও বর্ষায় দানবীয় হয়ে উঠে। সুপ্তধারা ঝর্ণার কাছাকাছি সহস্রধারা নামে আরো একটা ঝর্ণা আছে। এই ঝর্ণা উপত্যকার সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের নানান প্রান্ত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা সীতাকুন্ডে ছুটে আসেন।

কখন যাবেন

ঝর্ণা দেখার উত্তম সময় বর্ষাকাল। বর্ষায় ঝর্ণাগুলো তার পূর্ণ যৌবন ফিরে পায়। অর্থাৎ জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সুপ্তধারা ঝর্ণা যাওয়ার উপযুক্ত সময়। তখন জলপ্রপাতের সৌন্দর্য ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন। তবে টানা কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি হলে ঝর্ণায় না যাওয়াই ভালো। ওইসময় ঝিরিতে পানির তীব্র স্রোত থাকে। ঝিরিপথেই যেহেতু ঝর্ণার কাছে যেতে হয়, সেমময় ঝর্ণার কাছাকাছি পর্যন্ত নাও যেতে পারতে পারেন। শুধুমাত্র কয়েকদিন টানা ভারী বর্ষন হলেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

কিভাবে যাবেন সুপ্তধারা ঝর্ণা

সুপ্তধারা জলপ্রপাত এর অবস্থান সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে। সুপ্তধারা ঝর্ণা যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি সীতাকুন্ড আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুন্ড পর্যন্ত আসতে সময় লাগে পাঁচ ঘন্টা। বাসের মান ভেদে ভাড়া ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। বাসে এলে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ড বাজার থেকে ২ কিলোমিটার সামনে ফকিরহাট নামক জায়গায়।

চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুন্ডের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। চট্টগ্রামের কদমতলী, মাদারবাড়ি, অলংকার ও একে খান মোড় থেকে সীতাকুন্ডের বাস আছে। বাসে যেতে ৪০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টার মতো সময় লাগে। বাস থেকে নামতে হবে সীতাকুন্ডের আগে ফকিরহাট স্টপেজে।

ট্রেনে সীতাকুন্ড

ঢাকা থেকে সুপ্তধারা তথা সীতাকুন্ডের সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যাবেন মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী বাসে করে সীতাকুন্ড বাজার পার হয়ে ফকিরহাট নামতে হবে। মহিপাল থেকে সীতাকুন্ডের বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে আসা চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে সীতাকুন্ড বাজারে আসা যাবে।

কোথায় খাবেন

হালকা নাস্তা করার মতো কয়েকটি দোকান আছে সুপ্তধারা জলপ্রপাত যাওয়ার আগে ইকোপার্কের প্রবেশ মুখে। আর ভারী খাবারের জন্য আপনাকে সীতাকুন্ড বাজারে আসতে হবে। খাবারের জন্য হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের বাসে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারেন।

কোথায় থাকবেন

সীতাকুন্ড বাজারে মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

সুপ্তধারা ঝর্ণা ভ্রমণ টিপস

সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর আশাপাশে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। সারাদিনে অনেকগুলো স্পটে ঘুরতে চাইলে একটা সিএনজি রিজার্ভ নিয়ে নিন। সারাদিনের জন্য রিজার্ভ নিলে ভাড়া পড়বে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। রাতের বাসে গেলে অনেক ভোরবেলা পৌঁছে যাবেন। সেক্ষেত্রে ফকিরহাট না নেমে সীতাকুন্ড বাজারে নামুন। সীতাকুন্ডে নাস্তা সেরে তারপর রওয়ানা করুন। যেখানে সেখানে আপনি নিশ্চই ময়লা ফেলেন না। এটা আপনার ব্যক্তিত্বকে রিপ্রেজেন্ট করে।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেকগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান রয়েছে। সীতাকুন্ড ইকোপার্ক গেলে সুপ্তধারা ঝর্ণা বাদেও সহস্রধারা ঝর্ণা দেখতে পারবেন। এর বাইরে নিচের যেকোনো একটি বা দুইটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন একইদিন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর।  চন্দ্রনাথ পাহাড় আর গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত সীতাকুন্ড ইকো পার্কের পাঁচ কিলোমিটার এর মধ্যে। কাছেই আছে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত। আর হাইওয়ে ধরে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগুলে পাবেন কমলদহ ঝর্ণা। যদি বিশ কিলোমিটার যান তাহলে  খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার ট্রেইল পাড়বে। ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যের নিয়মিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

আরো পড়ুন

গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত

গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায়। সীতাকুন্ড মানেই একপাশে সাগর আর অন্যপাশে পাহাড়। সীতাকুন্ড বাজার থেকে গুলিয়াখালী সি বিচ এর দুরত্ব ৫ কিলোমিটার। স্থানীয়দের কাছে এই সৈকত “মুরাদপুর সী বিচ” নামে পরিচিত। গুলিখালীর অন্যতম বৈশিষ্ট হলো এখানকার পুরো সমুদ্র পাড় ঢেকে আছে গালিচার মতো সবুজ ঘাসে! সৈকতের তিনদিকে শোভা বর্ধন করছে ছোট ছোট ম্যানগ্রোভ বন। আর অন্যদিকে অসীম সমুদ্র। বনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালার মধ্যে কেওড়া অন্যতম। ম্যানগ্রোভ বনের শ্বাসমূল ছড়িয়ে আছে সৈকত জুড়ে। তার মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে বড় ছোট অনেকগুলো খাল। জোয়ারের সময় খালগুলো পানিতে ভরে যায়। গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত কিছুটা কম পরিচিত হওয়ায় বেশিরভাগ সময়ই এখানে পর্যটক থাকেনা। তাই আপনি সমুদ্রের বাতাসের সাথে নিরবতা উপভোগ করতে পারবেন মন ভরে। গুলিয়াখালি সী বিচ এর কাছাকাছি জেলে পল্লী থাকায় শুনশান সৈকতও নিরাপদ। গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত এর কাছেই আছে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত

কিভাবে যাবেন গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত

গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি সীতাকুন্ড আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুন্ড পর্যন্ত যেতে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

ট্রেনে সীতাকুন্ড

ঢাকা থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত তথা সীতাকুন্ডের সরাসরি একটি ট্রেন আছে চট্টলা একপ্রেস নামে। এছাড়া সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই সীতাকুন্ড বাজার যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে সীতাকুন্ডের বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে সীতাকুন্ড বাজারে আসা যাবে।

সীতাকুন্ড থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত

সীতাকুন্ড বাজারের হাইওয়ে ওভারপাসের নিচ থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত যাওয়ার সিএনজি পাওয়া যায়। বাজার থেকে সমুদ্রের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। রিজার্ভ সিএনজিতে ভাড়া পড়বে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। যেতে সময় লাগে ২৫/৩০ মিনিট। সিএনজি নেওয়ার সময় ঠিকঠাক দরদাম করে নিবেন। চাইলে  আপডাউন রিজার্ভও করতে পারেন। গুলিয়াখালীর কাছে বেড়িবাঁধে সিএনজি আপনাকে নামিয়ে দিবে। ওখান থেকে হেঁটে সমুদ্রপাড়ে গেলে ১০/১২ মিনিট লাগে। ঘুরতে গিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলে অনেক সময় ফেরার সিএনজি পাওয়া যায়না। তাই নামার সময় ড্রাইভারের ফোন নাম্বার নিয়ে রাখুন।

কোথায় থাকবেন

সীতাকুন্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

কোথায় খাবেন

সীতাকুন্ড বাজারে খাবারের অনেকগুলো দোকান আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের বাসে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারেন।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে বিকেলে গেলে ভালো লাগবে। সীতাকুন্ড থেকে ঘুরে আসতে সব মিলিয়ে দুই তিন ঘন্টা সময়ই যথেষ্ট। তাই সারাদিনের জন্য সীতাকুন্ডের প্ল্যান থাকলে সকালটা আশেপাশের অন্য কোনো দর্শনীয় স্থানে কাটাতে পারেন। ভ্রমণের সময় জোয়ার ভাটার টাইম জেনে নিন। স্থানীয় জেলেরাও এই ব্যাপারে ভালো ধারণা দিতে পারবে। জোয়ারের সময় সমুদ্রের কাছে না থাকাই ভালো। কারণ খালগুলো জোয়ারের পানিতে ভরে গেলে ফিরতে অসুবিধা হবে। সন্ধ্যার মধ্যেই সীতাকুন্ড বাজারে ফিরে আসুন। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা ছোটলোকি। ভুলেও এই কাজ করবেন না, গোপনেও না। জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেকগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান রয়েছে। গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত গেলে একইদিন নিচের যেকোনো একটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। গুলিয়াখালী সি বিচ এর একদম কাছাকাছি আছে বাঁশ বাড়িয়া সমুদ্র সৈকত আর চন্দ্রনাথ পাহাড় । কাছাকাছি আছে এই রুটের সবচেয়ে এডভেঞ্চারাস ট্রেইল সোনাইছড়ি। সীতাকুন্ড ইকো পার্ক এর ভিতরে আছে সুপ্তধারা আর সহস্রধারা জলপ্রপাত।  আর হাইওয়ে ধরে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগুলে পাবেন কমলদহ ঝর্ণা। যদি বিশ কিলোমিটার যান তাহলে  খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার ট্রেইল পাড়বে।

আরো পড়ুন

সীতাকুন্ড ইকোপার্ক

সীতাকুন্ড ইকোপার্ক চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায়। পাহাড়ে পাহাড়ে বিশাল বনভূমি, বন্যপ্রাণী ও হরেক রকম বৃক্ষরাজির মনোরম পরিবেশে একটা দিন কাটানোর জন্য প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক পর্যটক এখানে ছুটে আসেন। ইকোপার্কের ভিতরে সুপ্তধারাসহস্রধারা নামের দুইটি ঝর্ণা আছে। ঝর্ণায় যেতে হলে পাহাড় দিয়ে কিছুটা উঠানামা করা লাগে। এখানে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামও এসেছিলেন। পাহাড় ও ঝর্ণার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তিনি “আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ঐ” নামে বিখ্যাত গানটি রচনা করেন। যার ফলক এখনো ইকো পার্কের ভিতরে আছে। বোটানিক্যাল গার্ডেন এর ভিতরে পাহাড়ের উপর থেকে বঙ্গোপসাগরও দেখা যায়।

কিভাবে যাবেন সীতাকুন্ড ইকোপার্ক

সীতাকুন্ড ইকোপার্ক যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি সীতাকুন্ড আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুন্ড পর্যন্ত যেতে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া মান ভেদে ৪০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

ট্রেনে সীতাকুন্ড

ঢাকা থেকে সীতাকুন্ড ইকোপার্ক যাওয়ার সরাসরি ট্রেন হলো চট্টলা এক্সপ্রেস। এছাড়া সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই সীতাকুন্ড বাজার যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে সীতাকুন্ডের বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১৫০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে সীতাকুন্ড বাজারে আসা যাবে। চট্টগ্রাম থেকে এলে অলংকার বা  একে খান বাস স্ট্যান্ড থেকে সীতাকুন্ডের বাস আছে। ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা।

সীতাকুন্ড থেকে ইকোপার্ক

সীতাকুন্ড বাজার থেকে হাইওয়ে ধরে চট্টগ্রামের দিকে ২ কিলোমিটার গেলে ফকিরহাট বাজার পড়োবে। ফকিরহাট থেকে হাইওয়ের পূর্ব দিকের রাস্তা দিয়ে দেড় কিলোমিটার গেলেই সীতাকুন্ড বোটানিক্যাল গার্ডেন অর্থাৎ সীতাকুন্ড ইকোপার্ক। জনপ্রতি প্রবেশ ফি ৫০ টাকা। সিএনজি নিয়ে প্রবেশ করলে বাড়োতি ৮০ টাকা দিতে হয়। জীব বৈচিত্র ও প্রাণী বৈচিত্রের সাথে পরিচিত হতে প্রতি বছর শিক্ষা সফরে দেশের নানান প্রান্ত থেকে প্রচুর ছাত্রছাত্রী এখানে আসেন। সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে বিশুদ্ধ পানি ও ওয়াশরুমের সুব্যবস্থা আছে।

কোথায় থাকবেন

সীতাকুন্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

কোথায় খাবেন

হালকা নাস্তা করার মতো কয়েকটি দোকান আছে সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর প্রবেশ মুখে। ভারী খাবারের জন্য আপনাকে সীতাকুন্ড বাজারে আসতে হবে। খাবারের জন্য হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের বাসে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারেন।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেকগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান রয়েছে। সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে রয়েছে সুপ্তধারা ও সহস্রধারা নামে দুইটি ঝর্ণা। এছাড়া ইকো পার্ক এর বাইরে নিচের যেকোনো একটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন একইদিন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর।  চন্দ্রনাথ পাহাড় আর গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত সীতাকুন্ড ইকো পার্কের পাঁচ কিলোমিটার এর মধ্যে। কাছেই বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত। আর হাইওয়ে ধরে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগুলে পাবেন কমলদহ ঝর্ণা। যদি বিশ কিলোমিটার যান তাহলে  খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার ট্রেইল পাড়বে। জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

আরো পড়ুন

মহামায়া লেক

মহামায়া লেক (Mohamaya Lake) চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ একটি কৃত্রিম হ্রদ। ১১ বর্গ কিলোমিটার এর এই লেকের অবস্থান মিরসরাইয়ের ঠাকুরদীঘি ইউনিয়নে। বিস্তীর্ণ লেকের মধ্যে ডুবে আছে অনেকগুলো পাহাড়, আছে পাহাড়ি ঝর্ণা। টলটলে পানি আর সবুজ প্রকৃতির মাঝে নৌকা নিয়ে এসব পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে ঘুরে বেড়ানো যায়। কায়াকিং এর ব্যাবস্থাও আছে এই লেকে। রাতে থাকতে চাইলে এখানে ক্যাম্পিং করা যাবে। মহামায়া লেক মূলত একটি রাবার ড্যাম এর জন্য সৃষ্টি হয়েছে। লেকটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে আছে।

কিভাবে যাবেন মহামায়া লেক

মহামায়া লেক যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ঠাকুরদীঘি বাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি ঠাকুরদীঘি আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে মিরসরাই এর ঠাকুরদীঘি বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে ঠাকুরদীঘি পর্যন্ত যেতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

ট্রেনে মহামায়া লেক

ঢাকা থেকে ঠাকুরদীঘির সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই ঠাকুরদীঘি বাজার যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে ঠাকুরদীঘির বাস ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে ঠাকুরদীঘি বাজারে আসা যাবে। আর চট্টগ্রাম থেকে আসতে চাইলে চট্টগ্রামের অলংকার বা সিটি গেইট থেকে ফেনী বা বারৈয়ারহাট এর বাসে উঠলেই হবে। বারৈয়ারহাট এর সরাসরি চয়েস বাস আছে। ভাড়া ৮০ টাকা।

ঠাকুরদীঘি বাজারে নেমে সিএনজিতে করে মহামায়া ইকো পার্ক এ আসা যাবে। ইকো পার্ক এর ভিতরেই মহামায়া লেক। লোকাল সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ১৫/২০ টাকা। আর রিজার্ভ নিলে খরচ পড়বে ৮০ থেকে ১২০ টাকা।

মহামায়া লেকে কায়াকিং

মহামায়া লেকে কায়াকিং করার ব্যবস্থা আছে। এক কায়াক বোটে ২ জন বসতে পারবেন। ঘন্টাপ্রতি কায়াক ভাড়া ৩০০ টাকা। আধা ঘন্টার জন্য ২০০ টাকা। স্টুডেন্টদের জন্য ডিসকাউন্ট অফার করে তারা। স্টুডেন্টরা আধা ঘন্টার ভাড়াতেই এক ঘন্টা কায়াকিং এর সুযোগ পেয়ে থাকে। কায়াকিং ছাড়াও এখানে ইঞ্জিন বোটে ঘুরতে পারবেন আপনি। ১০ জন বসার মতো একটা ইঞ্জিন বোটের ভাড়া ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা। ইঞ্জিন নৌকা আপনাকে পুরো মহামায়া লেক ঘুরে দেখাবে।

কোথায় থাকবেন

থাকার জন্য ঠাকুরদীঘি বা নিকটস্থ বারৈয়ারহাট বাজারে কোনো হোটেল নাই।  থাকতে চাইলে সেখানে ক্যাম্পিং করতে পারবেন। অথবা থাকার হোটেলের জন্য আপনাকে যেতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। সীতাকুন্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। ঠাকুরদীঘি বাজার থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৬০ কিলোমিটারের মতো।

কোথায় খাবেন

মহামায়া লেক এর আশেপাশে কোনো খাবার দোকান নাই। ঘুরতে গেলে আপনাকে খাবার নিয়ে যেতে হবে। ঠাকুরদীঘি বাজারে কিছু খাবারের দোকান পাবেন। তবে ভালো মানের খাবারের জন্য আপনাকে আসতে হবে বারৈয়ারহাট বাজারে। এখানে ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে দুপুরের খাবার খেতে পারবেন। মেনু হিসেবে ভাত মাছ মাংস ভর্তা ইত্যাদি পাওয়া যাবে।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেক দর্শনীয় স্থান আছে। মহামায়া লেক ভ্রমণে গেলে একইদিন নিচের যেকোনো একটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। মহামায়ার একদম কাছাকাছি আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা ও কমলদহ ঝর্ণা। বিশ কিলোমিটার দূরের সীতাকুন্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত কিংবা চন্দ্রনাথ পাহাড়ও চাইলে একই দিন কাভার করতে পারবেন। যেতে পারেন সীতাকুন্ড ইকোপার্ক। যার ভিতরে আছে সুপ্তধারাসহস্রধারা নামে মায়াবী দুইটা ঝর্ণা। জয়েন করুন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার ফেসবুক গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

আরো পড়ুন 

চন্দ্রনাথ পাহাড়

চন্দ্রনাথ পাহাড় চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায়। একপাশে সাগর আর অন্যপাশে পাহাড়; এই দুই মিলে সীতাকুন্ডের প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্রকে করেছে অনন্য। সীতাকুন্ড বাজার থকে এর দুরত্ব ৪ কিলোমিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় ১১৫২ ফুট। পাহাড় চূড়া থেকে সমুদ্র দর্শনের চমৎকার অভিজ্ঞতা পাবেন এই ভ্রমণে। চন্দ্রনাথের চূড়ায় হিন্দু ধর্মালম্বীদের একটি মন্দির আছে। যেটি চন্দ্রনাথ মন্দির নামে পরিচিত। চট্টগ্রাম সহ এই অঞ্চলটি দীর্ঘকাল আরাকানের দখলে ছিলো। পরবর্তীতে দখল এর নেয় পর্তুগীজরা। ষোড়শ শতকে মোঘলরা পর্তুগীজ ও আরাকানীদের হটিয়ে এই অঞ্চল দখলমুক্ত করেন।

কিভাবে যাবেন চন্দ্রনাথ পাহাড়

চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। এই অঞ্চলকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার বলা যায়। চন্দ্রনাথ পাহাড় যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি সীতাকুন্ড আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুন্ড পর্যন্ত যেতে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

ট্রেনে সীতাকুন্ড

ঢাকা থেকে সীতাকুন্ডের সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই সীতাকুন্ড বাজার যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে সীতাকুন্ডের বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে সীতাকুন্ড বাজারে আসা যাবে।

সীতাকুন্ড থেকে চন্দ্রনাথ পাহাড়

সীতাকুন্ড থেকে চন্দ্রনাথ পাহাড় এর গেট ৪ কিলোমিটার। রিকশা বা সিএনজিতে করে গেট পর্যন্ত যেতে পারবেন। পাহাড়ে উঠার আগে ছোট্ট একটি ঝর্ণা (ক্যাসকেড) পাবেন। এখান থেকে রাস্তা রাস্তা দুই ভাগ হয়ে গেছে। বাম পাশের রাস্তা পাহাড়ি, আর ডান পাশের রাস্তায় সিড়ি করা আছে। উপরে উঠার সময় পাহাড়ি পথ দিয়ে উঠাই সুবিধাজনক। সময়ও কম লাগে। আর নামার সময় সিঁড়ি পথ দিয়ে নামুন, এতে সুবিধা হবে। পাহাড়ের গোড়া থেকে চূড়া পর্যন্ত উঠতে সর্বোচ্চ দেড় ঘন্টা সময় লাগবে রিলাক্সে উঠতে। এটি মূলত আপনার হাঁটার গতির উপর নির্ভর করে। উপরে উঠা কিছুটা পরিশ্রমসাধ্য কাজ হলেও, চূড়ায় উঠার পর চারপাশের সৌন্দর্য দেখে আপনি সব কষ্ট ভুলে যাবেন। সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ হবেন। পাহাড়ের শুরুতে মাঝখানে ও চূড়ায় টং দোকান আছে। হালকা খাবার খেতে পারবেন এখান থেকে।

কোথায় থাকবেন

সীতাকুন্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

কোথায় খাবেন

সীতাকুন্ড বাজারে বেশ কিছু খাবারের দোকান আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের বাসে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারেন।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

চন্দ্রনাথ পাহাড় এর তিন পাশে ঘন জঙ্গল। কোনো লোকালয় নেই। রাতের বাসে চন্দ্রনাথ পাহাড় ভ্রমণে গেলে ভোর পাঁচটার মধ্যেই সীতাকুন্ড বাজারে পৌঁছে যাবেন। ভোরের আলো ফোটার পরপরই চন্দ্রনাথ রওনা করবেন না। এর আগে আকাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে ভোরে পাহাড়ে চলে যাওয়ার কারণে। তাই অন্তত সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর রওনা করুন। এর আগে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে নিন স্থানীয় কোনো রেস্টুরেন্টে। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা ছোটলোকি। ভুলেও এই কাজ করবেন না, গোপনেও না। জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেকগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান রয়েছে। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে গেলে একইদিন নিচের যেকোনো একটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। চন্দ্রনাথ পাহাড় এর একদম কাছাকাছি আছে সীতাকুন্ড ইকোপার্ক। ইকোপার্ক এর ভিতরে আছে সুপ্তধারাসহস্রধারা নামে আলাদা দুইটা জলপ্রপাত। আছে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত। গুলিয়ালীর কাছাকাছি বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত। আর হাইওয়ে ধরে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগুলে পাবেন কমলদহ ঝর্ণা। যদি বিশ কিলোমিটার যান তাহলে  খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার ট্রেইল পাড়বে। মিরসরাইতে আরো আছে এই রুটের সবচেয়ে এডভেঞ্চারাস সোনাইছড়ি ট্রেইল

আরো পড়ুন

নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা ও ট্রেইল

নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা (Napittachora Waterfalls) চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় অবস্থিত। এডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে সাম্প্রতিক সময়ে এই ঝর্ণাটি খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। নাপিত্তাছড়া ট্রেইলে একাধিক ঝর্ণা ও কুম আছে কাছাকাছি। এগুলো হলো বান্দরকুম, কুপিকাটাকুম, বাঘবিয়ানি ঝর্ণা, টিপরাকুম। চারপাশে পাহাড়, ঘন জঙ্গল, ঝিরিপথ আর মনোমুগ্ধকর ট্রেইল এই ঝর্ণাকে অনন্যতা দিয়েছে। ৪/৫ ঘন্টা সময় নিয়ে গেলে পুরো ট্রেইল সুন্দরভাবে শেষ করে আসা সম্ভব। খৈয়াছড়া আর নাপিত্তাছড়া জলপ্রপাত এই রেঞ্জের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রেইল।

কিভাবে যাবেন নাপিত্তাছড়া

নাপিত্তাছড়া ঝর্ণায় যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার নয়দুয়ারী (ন’দুয়ারী) বাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি নয়দুয়ারী আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে মিরসরাই এর নয়দুয়ারী বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে নয়দুয়ারী পর্যন্ত যেতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

ট্রেনে নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা

ঢাকা থেকে নয়দুয়ারী বাজারের সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই নয়দুয়ারী বাজার যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে নয়দুয়ারীর বাস ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে নয়দুয়ারী বাজারে আসা যাবে।

নাপিত্তাছড়া ট্রেইল

নয়দুয়ারী বাজারে নেমে হাইওয়ের পূর্ব পাশে একটা রাস্তা চলে গেছে। সেই রাস্তা ধরে ২০/২৫ মিনিট হাঁটলে রেললাইন। রেল লাইন পার হয়ে আবার সোজা ২০/২৫ মিনিট গেলে নাপিত্তাছড়া নামের একটা ত্রিপুরা পাড়া পাবেন। এখান থেকে ট্রেইল ও ঝিরিপথের শুরু। প্রথম ক্যাসকেড হিসেবে স্বাগত জানাবে টিপরা কুম। এরপর কুপিকাটা কুম। কুপিকাটা কুমের ডান পাশদিয়ে পাহাড়ের উপর উঠে কিছুদূর হেঁটে গেলে আবার ঝিরিপথ পাবেন। এই ঝিরিপথের শেষে বাগবিয়ানি ঝর্ণা, তার আগে পাবেন ট্রেইলের সবচেয়ে সুন্দর ঝর্ণা বান্দরকুম।

যারা ট্রেকিংয়ে অভিজ্ঞ তারা সহজেই পথ চিনতে পারবেন। অভিজ্ঞতা না থাকলে নয়দুয়ারী বাজার বা রেললাইনের আশেপাশে কোনো বাড়ি থেকে কাউকে গাইড হিসেবে নিতে পারেন। গাইডকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দিতে হতে পারে। গাইড নিয়ে গেলে সবগুলো খুম, ক্যাসকেড ও ঝর্ণা সুন্দর ভাবে ঘুরে আসা যাবে কম সময়ে।

কোথায় থাকবেন নাপিত্তাছড়া

থাকার জন্য নয়দুয়ারী বাজারে কোনো হোটেল নাই। নিকটস্থ থাকার হোটেলের জন্য আপনাকে যেতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। সীতাকুন্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। বড়তাকিয়া থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৬০ কিলোমিটারের মতো।

কোথায় খাবেন

নয়দুয়ারী বাজার থেকে কিছুদূর গেলে একটা খাবারের দোকান আছে। যাওয়ার সময় খাবার অর্ডার করে গেলে ফেরার পথে খেতে পারবেন। সেখানে খাবার না পেলে মিরসরাই বাজারে এসে খেতে হবে। তাই সাথে কিছু শুকনো খাবার ও পানি বহন করুন।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

নাপিত্তাছড়া ঝর্ণায় যাওয়ার উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। শুকনো মৌসুমে এখানে পানি থাকেনা। তাই বর্ষাতেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। ঝর্ণার ট্রেইল যত সহজ মনে হোক না কেন, ঝর্ণা মানেই এদিক ওদিক বিপদ ওৎ পেতে থাকে। এজন্য প্রতি পদে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ট্রেইলে প্রতিটা স্টেপে নিজের কমনসেন্স ব্যাবহার করুন। গ্রুপ করে ঘুরতে যাওয়াই ভালো। ক্যাম্পিং করতে চাইলে ক্যাম্পিং এর বেসিক জেনে যাবেন। রাতে আগুন জ্বালালে সকালে সেগুলোর ছাই পরিষ্কার করে আসতে হবে। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা ছোটলোকি। ভুলেও এই কাজ করবেন না, গোপনেও না। জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডকে বলা যায় ঝর্ণা উপত্যকা। নাপিত্তাছড়া ট্রেইলে গেলে একইদিন নিচের যেকোনো একটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। নাপিত্তাছড়ার একদম কাছাকাছি আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর কমলদহ ঝর্ণা। এছাড়া বিশ কিলোমিটার দূরের চন্দ্রনাথ পাহাড় কিংবা গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতেও যেতে পারেন। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের কাছেই সীতাকুন্ড ইকোপার্ক। ইকোপার্ক এর ভিতরে আছে সুপ্তধারা ও  সহস্রধারা নামে দুইটা মায়াবী জলপ্রপাত।

আরো পড়ুন

কমলদহ ঝর্ণা

চট্টগ্রামের মিরসরাই সীতাকুন্ড রেঞ্জকে বলা যায় ঝর্ণা উপত্যাকা। মীরসরাই ও সীতাকুন্ডে রয়েছে ছোট বড় অসংখ্য ঝর্ণা, ঝিরি, ট্রেইল ও ক্যাসকেড। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি ঝর্ণা হলো কমলদহ ঝর্ণা।  এটি মোটামোটি সহজ ট্রেইল। তাই অল্প সময়ে এই ঝর্ণা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে। কমলদহ ট্রেইলে অনেকগুলো ঝর্ণা আছে। প্রথম ঝর্ণার উপরে উঠে কিছুদূর গেলে ট্রেইল ভাগ হয়ে গেছে ডানে বাঁয়ে। যেদিকেই যান ছোটছোট আরো কিছু ঝর্ণা আর ক্যাসকেডের দেখা মিলবে।

কিভাবে যাবেন

কমলদহ ঝর্ণায় যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার বড় দারোগাহাট বাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি বড়দারোগারহাট আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ডের দারোগাহাট বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে দারোগাহাট পর্যন্ত যেতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

ট্রেনে কমলদহ ঝর্ণা

ঢাকা থেকে বড়দারোগাট এর সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই বড়দারোগাহাট যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে বড়দারোগারহাট এর বাস ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

কমলদহ ঝর্ণা ট্রেইল

বড়দারোগাহাট থেকে মহাসড়ক ধরে ঢাকার দিকে কিছুদূর হাঁটলে রাস্তার ডান পাশে একটি ইটভাটার দেখা মিলবে। ইট ভাটার পাশ দিয়েই একটি মাটির রাস্তা নেমে গেছে। সেই রাস্তা ধরে সোজা বিশ মিনিট হেঁটে গেলে ঝিরিপথ পাবেন। এই ঝিরি থেকেই মূলত কমলদহ ট্রেইলের শুরু। ঝিরিপথ ধরেই বাকিপথটুকু হাঁটতে হবে। মোটামুটি একঘন্টার হাঁটাপথ।

কমলদহ ঝর্ণার তিনটি ধাপ। নিচ থেকে শুধু প্রথম ধাপই দেখা যায়। বাকি ধাপগুলো দেখতে ঝর্ণার উপরে উঠা লাগবে। ঝর্ণার উপরে উঠে কিছুদূর গেলে দেখবেন ঝিরিপথ ডানে বামে দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। বামের ঝিরিপথ দিয়ে কিছুদূর গেলে আবারো ঝিরিপথ ডানে বামে ভাগ হয়ে যাবে। এবার বামের দিকে কিছুদূর গেলে ছাগলকান্দা ঝর্ণা পাবেন। আর ডানের দিকে গেলে শেষমাথায় নামহীন সুন্দর দুইটি ঝর্ণা চোখে পড়বে।

কোথায় থাকবেন

থাকার জন্য বড়দারোগাহাট বাজারে কোনো আবাসিক হোটেল নাই। তবে সীতাকুন্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। বড়দারোগাহাট থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৫০ কিলোমিটারের মতো।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

কমলদহ ঝর্ণায় যাওয়ার উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। শুকনো মৌসুমে এখানে পানি খুব কম থাকে। তাই বর্ষাতেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। বড়দারোগাহাট এর পর কোথাও খাবার দোকান পাবেন না। নিজের সাথে খাবার বহন করুন। ঝর্ণার ট্রেইল যত সহজ মনে হোক না কেন, ঝর্ণা মানেই এদিক ওদিক বিপদ ওৎ পেতে থাকে। এজন্য প্রতি পদে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ট্রেইলে প্রতিটা স্টেপে নিজের কমনসেন্স ব্যাবহার করুন।

গ্রুপ করে ঘুরতে যাওয়াই ভালো। ঝিরিপথ যেখান থেকে শুরু সেখানে কয়েকটি বাড়িঘর আছে। প্রয়োজন বোধ করলে সেখান থেকে কোনো ছেলেকে গাইড হিসেবে নিতে পারেন। ক্যাম্পিং করতে চাইলে ক্যাম্পিং এর বেসিক জেনে যাবেন। রাতে আগুন জ্বালালে সকালে সেগুলোর ছাই পরিষ্কার করে আসতে হবে। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা ছোটলোকি। ভুলেও এই কাজ করবেন না, গোপনেও না। জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডকে বলা যায় ঝর্ণা উপত্যকা। কমলদহ ট্রেইলে গেলে একইদিন নিচের যেকোনো একটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। কমলদহ ঝর্ণা এর ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার আগে আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা। আর চট্টগ্রামের দিকে দশ কিলোমিটার গেলে পড়োবে চন্দ্রনাথ পাহাড় কিংবা গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত। চন্দ্রনাথ এর কাছেই সীতাকুন্ড ইকোপার্ক। আর ইকোপার্ক এর ভিতরে আছে সুপ্তধারাসহস্রধারা নামে দুইটি মায়াবী ঝর্ণা।

 

আরো পড়ুন

খৈয়াছড়া ঝর্ণা

খৈয়াছড়া ঝর্ণা (Khoiyachora Waterfalls) চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় অবস্থিত। বড়তাকিয়া বাজার থেকে এর দূরত্ব ৪.২ কিলোমিটার।  গঠনগত দিক দিয়ে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর ঝর্ণা গুলোর একটি। চারপাশে পাহাড়, ঘন জঙ্গল, ঝিরিপথ আর মনোমুগ্ধকর ট্রেইল এই ঝর্ণাকে অনন্যতা দিয়েছে। আপনি যখন ট্রেকিং করে ক্লান্ত অবস্থায় ঝর্ণার সামনে এসে দাঁড়াবেন তখন এক নিমিষে আপনার সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। এডভেঞ্চারপ্রেমীদের অনেকে খৈয়াছড়াকে ঝর্ণার রাণী হিসেবে আখ্যায়িত করেন। খৈয়াছড়া ঝর্ণায় মোট নয়টি ধাপ রয়েছে। প্রত্যেকটা ধাপেরই আছে আলাদা সৌন্দর্য! কোনোদিন জোছনা রাতে যদি এখানে ক্যাম্পিং করতে পারেন, তাহলে সেই সময়গুলো আপনার আজীবন মনে থাকবে। চাঁদের আলো, ঝিঝির ডাক, জোনাক পোকা আর ঝর্ণার জলের অবিরাম শব্দ আপনাকে বিমোহিত করে রাখবে পুরোটা সময়। নাপিত্তাছড়া ও খৈয়াছড়া এই রেঞ্জের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঝর্ণা।

 

 

কিভাবে যাবেন

খৈয়াছড়া ঝর্ণায় যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া বাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি বড়তাকিয়া আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে মিরসরাই এর বড়তাকিয়া বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে বড়তাকিয়া পর্যন্ত যেতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

ট্রেনে খৈয়াছড়া ঝর্ণা

ঢাকা থেকে বড়তাকিয়ার সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই বড়তাকিয়া বাজার যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে বড়তাকিয়ার বাস ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।

যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে বড়তাকিয়া বাজারে আসা যাবে।

খৈয়াছড়া ঝর্ণা ট্রেইল

বড়তাকিয়া বাজারে নেমে সিএনজিতে করে খৈয়াছড়া ঝর্ণার ঝিরিপথ পর্যন্ত আসা যাবে। সিএনজি ভাড়া নিবে ১০০ টাকা। চাইলে এই পথটুকু হেঁটেও আসতে পারবেন। স্থানীয় যে কাউকে বললে পথ দেখিয়ে দিবে। বাজার থেকে ঝিরিপথের দূরত্ব প্রায় আড়াই কিলোমিটার। যেখান থেকে ঝিরিপথ শুরু, সেখান থেকে ট্রেকিংও শুরু।

শুরুতে বাড়িঘর, ধানক্ষেত, তারপর পাহাড় জঙ্গলের মঝখান দিয়ে ট্রেইল। প্রায় ৪৫ মিনিট হাঁটার পর আপনি ঝর্ণার প্রথম ধাপে পৌঁছে যাবেন। এখানে পথ হারানোর ভয় নেই। ছুটির দিনগুলোতে সাধারণত অনেক পর্যটকের দেখা পাবেন একই পথে। ঝিরিপথের শুরুতে অনেক বাড়িঘর আছে। চাইলে সেখান থেকে কাউকে গাইড হিসেবে নিতে পারে। গাইড ফি দিতে হবে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।

ঝর্ণার প্রথম ধাপে পৌঁছানোর পর বাকি ধাপগুলোতে উঠার রাস্তা পেয়ে যাবেন একটু খেয়াল করলে। তবে সাবধানে ট্রেকিং করতে হবে। সামান্য সাবধান হয়ে ট্রেকিং করা কোনো পর্যটকের এখন পর্যন্ত কোনো দূর্ঘটনা ঘটেনি খৈয়াছড়াতে। কিন্তু অতিরিক্ত এডভেঞ্চার করতে যাওয়া, হৈ হল্লা লম্ফঝম্প করা প্রচুর পর্যটক সেখানে গিয়ে দূর্ঘটনায় পড়েছে। তাই এমন কিছু থেকে বিরত থাকুন।

কোথায় থাকবেন

থাকার জন্য খৈয়াছড়া বা বড়তাকিয়া বাজারে কোনো হোটেল নাই। খৈয়াছড়া গ্রামে কারো বাড়িতে থাকতে চাইলে স্থানীয় চেয়ারম্যান এর অনুমতি নিতে হবে।  অথবা নিকটস্থ থাকার হোটেলের জন্য আপনাকে যেতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। সীতাকুন্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। বড়তাকিয়া থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৬০ কিলোমিটারের মতো।

কোথায় খাবেন

ঝিরিপথের শুরুতে বেশ কিছু খাবারের দোকান আছে। যাওয়ার সময় খাবার অর্ডার করে গেলে ফেরার পথে খেতে পারবেন। এসব খাবারের দোকানে মাছ মাংস ভাত ডাল ইত্যাদি পাবেন। অন্যান্য দোকানের সাথে সেখানে রয়েছে ফখরুল মিয়ার দোকান। ফখরুলকে গ্রিন বেল্ট ট্রাভেল গ্রুপ এর রেফারেন্স দিলে আপনি দিকনির্দেশনা সহ সব কিছুতে ভালো আতিথেয়তা পাবেন।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

খৈয়াছড়া ঝর্ণায় যাওয়ার উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। শুকনো মৌসুমে এখানে পানি কমে যায়। তাই বর্ষাতেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। ঝর্ণার ট্রেইল যত সহজ মনে হোক না কেন, ঝর্ণা মানেই এদিক ওদিক বিপদ ওৎ পেতে থাকে। এজন্য প্রতি পদে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ট্রেইলে প্রতিটা স্টেপে নিজের কমনসেন্স ব্যাবহার করুন। গ্রুপ করে ঘুরতে যাওয়াই ভালো। ক্যাম্পিং করতে চাইলে ক্যাম্পিং এর বেসিক জেনে যাবেন। রাতে আগুন জ্বালালে সকালে সেগুলোর ছাই পরিষ্কার করে আসতে হবে। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা ছোটলোকি। ভুলেও এই কাজ করবেন না, গোপনেও না।

কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডকে বলা যায় ঝর্ণা উপত্যকা। খৈয়াছড়া ঝর্ণা অভিযানে গেলে একইদিন নিচের যেকোনো একটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। খৈয়াছড়ার একদম কাছাকাছি আছে নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা ও কমলদহ ঝর্ণা। বিশ কিলোমিটার দূরের গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত কিংবা চন্দ্রনাথ পাহাড়ও চাইলে একই দিন কাভার করতে পারবেন। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের কাছে আছে সীতাকুন্ড ইকোপার্ক। ইকোপার্ক এর ভিতরে আছে সুপ্তধারাসহস্রধারা নামে দুইটা ঝর্ণা।  আর ঝর্ণায় গিয়ে ক্লান্ত থাকায় আবার পাহাড়ে যেতে না চাইলে মহামায়া লেকে ঘুরে আসতে পারেন।

আরো পড়ুন

error: Content is protected !!
Exit mobile version