নুহাশ পল্লী (Nuhash Polli) গাজীপুর জেলার পিরুজালী গ্রামে অবস্থিত। গাজীপুর জেলা সদর থেকে নুহাশ পল্লীর দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ এর স্মৃতিবিজড়িত এই পল্লীটি প্রায় ৪০ বিঘা জমির উপর নির্মিত। উনার বড় ছেলে নুহাশ এর নাম অনুসারে এই পারিবারিক অবসর যাপন কেন্দ্র ও শুটিং স্পট এর নাম রাখা হয়। জীবনের দীর্ঘ একটা সময় তিনি এখানে কাটিয়েছেন। এখানকার প্রতিটি স্থাপনায় মিশে আছে তাঁর ছোঁয়া এবং ভালোবাসা। নুহাশ পল্লী বিভিন্ন ভাবে এসেছে হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যে, নাটকে, সিনেমায়। কিংবদন্তী এই সাহিত্যিক চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে আছেন এখানকার লিচুতলায়।
কোনো এক বৃষ্টির দিনে সারাটা দিন শালবনের ভিতরে এই পল্লীতে কাটিয়ে দিতে খারাপ লাগবেনা। কদমের ঘ্রাণ এসে নাকে লাগবে। হয়তো কোথাও থেকে মৃদু সুরে ভেসে আসতে পারে ‘যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো…!’ একদিনের ডে ট্যুরে ঢাকা থেকে ঘুরে আসতে পারেন নুহাশ পল্লী থেকে।
কী দেখবেন
নুহাশ পল্লীর মূল ফটক পেরোলে সবুজ ঘাস এর গালিচা। শান্ত সৌম্য পরিবেশ। চারদিকে পরিকল্পিত ভাবে লাগানো প্রচুর ফলজ বনজ ঔষুধি ও মশলা জাতীয় বৃক্ষ। প্রত্যেকটি গাছে সাঁটানো আছে গাছের পরিচিতি ফলক। বৃক্ষরাজির ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন অবকাঠামো, কাঠের কটেজ, সুইমিংপুল। আরো কিছদূর এগিয়ে গেলে চোখে পড়বে টিনশেড এর ঘর বৃষ্টিবিলাস! ঝড় বৃষ্টির দিনে টিনের চালের মাতাল করা ঝমঝম শব্দ শুনতেই লেখকের এই আয়োজন। শিশুদের বিনোদনের জন্য আছে এখানে ভূত বিলাস নামের আরেকটি কটেজ। তার পাশেই লীলাবতী দীঘি। মাঝখানে দ্বীপ। কাঠের সাঁকো পার হয়ে দ্বীপে যাওয়া যায়। এখানককার সবকিছুতে আপনি হুমায়ূন আহমেদ এর অস্তিত্ব অনুভব করবেন।
কিভাবে যাবেন নুহাশ পল্লী
নুহাশ পল্লী যাওয়ার জন্য ঢাকার যে কোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে গাজীপুর চৌরাস্তা আসতে হবে। এরপর গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে যেতে হবে ময়মনসিংহ রোডের হোতাপাড়া। ঢাকা থেকে সরাসরি ময়মনসিংসগামী বাসে উঠলে হোতাপাড়া নামা যায়। এছাড়া ঢাকা থেকে কাপাসিয়াগামী বাসেও হোতাপাড়া নামতে পারবেন। ঢাকা থেকে হোতাপাড়ার বাস ভাড়া ৬০ থেকে ৮০ টাকা। উল্লেখ্য ময়মনসিংহ বা কাপাসিয়ার বাসগুলো গাজীপুর চৌরাস্তায় অনেকক্ষণ দেরী করে।
হোতাপাড়া থেকে নুহাশ পল্লী যাওয়ার জন্য সিএনজি, লেগুনা বা ব্যাটারি চালিত রিকশা পাওয়া যায়। সিএনজি ভাড়া নিবে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। আর লেগুনাতে ভাড়া পড়বে ৪০ টাকার মতো। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে হোতাপাড়ার দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। আর হোতাপাড়া থেকে নুহাশ পল্লীর দূরত্ব ৮ কিলোমিটারের মতো।
দর্শনার্থী প্রবেশ ফি
নুহাশ পল্লী ভ্রমণের জন্য আগে থেকে কোনো অনুমতির প্রয়োজন পড়েনা। ১২ বছরের উপরের সবার ক্ষেত্রে প্রবেশ ফি ২০০ টাকা। ১২ বছরের নিচের শিশুদের জন্য কোনো প্রবেশ ফি নেই। ড্রাইভারদেরও কোনো প্রবেশ ফি দিতে হয়না। এই টাকাটা মূলত হুমায়ূন আহমেদের নির্মিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপিঠ এর ব্যায় নির্বাহের জন্য খরচ হয়। আর কেউ হুমায়ূন আহমেদ এর কবর জিয়ারত করতে চাইলে তার জন্য কোনো প্রবেশ ফি নেই। মূল ফটকের বাইরে বাম দিকে আরেকটি ফটক আছে। সেদিক দিয়ে প্রবেশ করে যে কেউ কবর জিয়ারত করতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
নুহাশ পল্লীর ভিতরে খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। তবে বাইরে কিছু ঝুপড়ি দোকান আছে। সেখানে চা সহ মোটামুটি মানের শুকনো খাবার পাওয়া যায়। কেউ চাইলে সাথে করে খাবার নিয়ে যেতে পারবেন। নইলে দুপুরের খাবারের জন্য হোতাপাড়া বাজারে আসতে হবে।
নুহাশ পল্লী থাকার ব্যবস্থা
রাতে থাকার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই নুহাশ পল্লীতে। তবে বৃষ্টি বিলাস’এ সবার জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থা আছে। আর ভূত বিলাস নামের বাংলো বিশ্রামের জন্য নিতে চাইলে ৩০০০ থেকে ৫০০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। এছাড়া ঢাকার কাছাকাছি ডে ট্যুর এর জন্য রয়েছে অনেকগুলো জায়গা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো কেরানিগঞ্জের সারি ঘাট, বালিয়াটি জমিদার বাড়ি, চৌদ্দার চর ইত্যাদি। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে দেখুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল ফেসবুক গ্রুপ Green Belt The Travelers ‘এ। নুহাশ পল্লী সম্পর্কে আরো নির্দিষ্ট কোনো তথ্য আপনার জানা থাকলে আমাদেরকে জানাতে পারেন।
ডে ট্যুর এ ঢাকার কাছাকাছি যারা বেড়াতে পছন্দ করেন তাদের জন্য চমৎকার একটি স্থান হতে পারে গোলাপ গ্রাম। তুরাগ নদীর পাড়ে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাদুল্লাহপুর গ্রামই মূলত গোলাপ গ্রাম। খুব কম সময়ে এবং কম খরচে ঢাকা থেকে এখানে ঘুরে আসতে পারবেন। শহরের যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তির জন্য মাঝে মাঝে আমাদের কিছুটা বিশ্রামের দরকার পড়ে। সেজন্য সবসময় দূরে কোথাও যেতে হবে এমন কথা নেই। মাঝে মাঝে বেড়িয়ে আসা যায় কাছে ধারের কোনো স্থান থেকে। ঢাকার কাছাকাছি জায়গাগুলোর মধ্যে বর্তমানে গোলাপ গ্রাম খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কিভাবে যাবেন গোলাপ গ্রাম
বিভিন্ন রুট দিয়ে গোলাপ গ্রাম যাওয়া যায়। এর মধ্যে ঢাকার মিরপুর বা উত্তরা দিয়ে যাওয়াটা সুবিধাজনক। যারা মিরপুর দিয়ে যেতে চান তারা ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে মিরপুর ১ আসতে হবে। মিরপুর ১ থেকে রিকশায় দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাট। মাথায় রাখতে হবে এটা মিরপুরের দিয়াবাড়ি, উত্তরার দিয়াবাড়ি না। দিয়াবাড়ি ঘাট থেকে প্রতি ১০ মিনিট পরপর সাদুল্লাহপুরের নৌকা ছাড়ে। যেতে সময় লাগবে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। লোকাল নৌকায় ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৩০ টাকা। রিজার্ভ নিলে খরচ পড়বে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।
উত্তরা থেকে যেতে চাইলে প্রথমে উত্তরা দিয়াবাড়ি আসতে হবে। উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এর সামনে থেকে দিয়াবাড়ির লেগুনা পাওয়া যায়। দিয়াবাড়ি থেকে লোকাল ট্রান্সপোর্টে করে যেতে হবে বিরুলিয়া ব্রিজ। সেখান থেকে ২০ টাকা অটো ভাড়া দিয়ে চলে আসুন সাদুল্লাহপুর। চাইলে বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে নৌকায় করেও সাদুল্লাহপুর আসা যাবে। রিজার্ভ নৌকা ভাড়া পড়বে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এক নৌকায় অনায়াসেই ২০ জন বসা যায়।
টঙ্গী থেকে আসতে চাইলে টঙ্গীর কামারপাড়া হয়ে সিএনজি নিয়ে চলে আসুন বিরুলিয়া ব্রিজ। সেখান থেকে একই ভাবে আসতে হবে সাদুল্লাপুর। সাভার থেকে আসতে চাইলে আলিফ বা মোহনা পরিবহনে করে বিরুলিয়া ব্রিজ নামা যাবে।
সাদুল্লাপুর নেমে হেঁটেই গোলাপ গ্রাম ঘুরে দেখা যাবে। অথবা ঘুরে দেখার জন্য ঘন্টা হিসেবে রিকশাও নিতে পারেন। রিকশা ভাড়া পড়বে ঘন্টাপ্রতি ১০০ টাকা।
কি দেখবেন
পুরো গ্রামটাই এখানে গোলাপ গোলাপের বাগান দিয়ে ভরে আছে। লাল হলুদ সাদা সহ বিভিন্ন রঙের গোলাপ ফুটে থাকে বাগানগুলোতে। এখানে শুধু গোলাপ নয়- আছে রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, জারাভারা সহ বিভিন্ন জাতের ফুল। প্রতিদিন সন্ধ্যায় গোলাপের হাট বসে। শাহবাগ সহ ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তের ফুল ব্যবসায়ীরা কেনাকাটার জন্য এখানে আসেন। গ্রামীন পরিবেশে এখানে নানান জাতের ফুলের বাগান আপনাকে মুগ্ধ করবে।
যারা বিরুলিয়া ব্রিজ বা মিরপুরের দিয়াবাড়ি থেকে নৌকায় করে সাদুল্লাপুর যাবেন, তারা নৌপথের ভ্রমণটাও উপভোগ করতে পারবেন। নদীপথে যাওয়ার সময় দুইপাশে ফসলি জমি, শস্যক্ষেত আর হাঁসের খামার পড়বে।
কখন যাবেন গোলাপ গ্রাম
সাদুল্লাহপুরে সারা বছর ফুলের চাষ হয়। সারা বছরই কমবেশি ফুল ফোটে। তাই বছরের যেকোনো সময় গেলেই ফুলের দেখা পাবেন। তবে গোলাপ ফোটার উপযুক্ত সময় হলো শীতকাল। তখন সবগুলো বাগান হরেক রঙের ফুলে ভরে থাকে। ফুলগুলো আকারে বড় থাকে। এই সময় গোলাপ গ্রাম ভ্রমণ এ গেলে বেশি ভালো লাগবে।
কোথায় খাবেন
খাবার জন্য সাদুল্লাপুর ঘাটের কাছে কয়েকটি সাধারণ মানের দোকান আছে। সেখানে দুপুরের খাবার খেতে পারবেন। বেশি মানুষ একসাথে গেলে সেখানে খাবার নাও পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে গিয়ে সাথে সাথে খাবার অর্ডার করলে কিছুটা সময় নিয়ে খাবার রান্না করে দিবে। আর স্ন্যাকস জাতীয় খাবারের জন্য অনেকগুলো ঝুপড়ি চা এর দোকান আছে। সেখানে হালকা খাবার খেতে পারবেন।
ভ্রমণ টিপস ও পরামর্শ
গোলাপ গ্রাম গিয়ে বাগান থেকে গোলাপ ছিঁড়বেন না। আপনার প্রয়োজন হলে সেখান থেকে গোলাপ কিনে নিতে পারবেন। গ্রামের মানুষ বিরক্ত হয়, কিংবা গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হয়, এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সেখানে ভালো খাবারের দোকান নেই। চাইলে সাথে করে খাবার নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু খাবারের খালি প্যাকেট বা আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলে আসবেন না। মনে রাখতে হবে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাই সন্ধ্যার মধ্যেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করুন।
ঢাকার আশেপাশে ডে ট্যুর
ঢাকার কাছাকাছি ডে ট্যুর এর জন্য রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো বালিয়াটি জমিদার বাড়ি, কেরানিগঞ্জের সারি ঘাট, চৌদ্দার চর ইত্যাদি। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে দেখুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল ফেসবুক গ্রুপ Green Belt The Travelers ‘এ। গোলাপ গ্রাম সম্পর্কে আরো নির্দিষ্ট কোনো তথ্য আপনার জানা থাকলে আমাদেরকে জানাতে পারেন।
রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলায় বালিয়াটি জমিদার বাড়ি অবস্থিত। ১৯৮৭ সালে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর বালিয়াটি প্রাসাদকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করে। এই বিখ্যাত জমিদার বাড়ির গোড়াপত্তন হয় গোবিন্দ রাম সাহার হাত ধরে। ২শ বছর আগে ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ছিলেন লবণের বণিক। জমিদার পরিবারে অনেক উত্তরাধিকার ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কিশোরিলাল রায় চৌধুরী, রায়বাহাদুর হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী। শিক্ষাখাতে তাদের অবদান বিশেষ ভাবে উল্লেখ করার মতো। ঢাকার জগন্নাথ কলেজ (পরবর্তীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কিশোরিলাল রায় চৌধুরীর পিতা এবং যার নামানুসারে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি (Baliaati zamindar Bari) নামে পরিচিত এই ঐতিহাসিক স্থাপনা ৭ টি দালান নিয়ে গঠিত। সামনের চারটি প্রসাদ ব্যবহৃত হত ব্যবসায়িক কাজে। পেছনের প্রাসাদকে বলা হয় অন্দর মহল যেখানে জমিদার পরিবারের সদস্যরা বসবাস করতেন। পুরো চত্বরের আয়তন প্রায় ১৬,৫৫৪ বর্গমিটার। এই দালানগুলো একসাথে স্থাপিত হয়নি। উত্তরাধিকারগণ ১৯ শতকের মাঝামাঝি থেকে ২০ শতকের শুরুর সময়কালে নির্মান করেন। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ কর্তৃক সংরক্ষিত ও পরিচালিত।
কিভাবে যাবেন বালিয়াটি জমিদার বাড়ি
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি যেতে হলে প্রথমে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া আসতে হবে। ঢাকার গাবতলী থেকে পাটুরিয়া, আরিচা বা মানিকগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বাসে উঠে মানিকগঞ্জের ৮ কিমি আগেই সাটুরিয়া বাসস্টপে নামতে হবে। ভাড়া লাগবে ৩৫-৪০ টাকা। আর মানিকগঞ্জ থেকে সাটুরিয়া যেতে চাইলে শুভযাত্রা, পল্লীসেবা, শুকতারা ইত্যাদি বাসে চড়ে চলে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে ভাড়া লাগবে ২০ টাকার মত। সাটুরিয়া বাসস্টপে থেকে ১২ কিমি দূরে এই বালিয়াটি জমিদার বাড়ির অবস্থান। সাটুরিয়া থেকে যেতে হবে সাটুরিয়া জিরো পয়েন্ট। জিরো পয়েন্ট এর ১ কিলোমিটারের মধ্যেই বালিয়াটি জমিদার বাড়ি। সাটুরিয়া বাস স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি নিয়েও যেতে পারবেন। এছাড়া নিজস্ব গাড়ি নিয়েও ঘুরে আসতে পারেন এই ঐতিহাসিক স্থান।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি প্রবেশের সময়সীমা
গ্রীষ্মকালে (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর) বালিয়াটি জমিদারবাড়ি খোলা থাকে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ০৬টা পর্যন্ত। শীতকালে (অক্টোবর থেকে মার্চ) সকাল ০৯টা থেকে বিকেল ০৫টা পর্যন্ত খোলা পাবেন। আর প্রতিদিন দুপুর ০১টা থেকে ০১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত এবং শুক্রবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নামাজ ও খাবারের বিরতি চলে। ঐ সময়টু অফিস কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি রবিবার পূর্ণদিবস আর সোমবার অর্ধদিবস বন্ধ থাকে। অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও বন্ধ থাকে।
প্রবেশ ফি: জমিদার বাড়িতে প্রবেশ ফি জনপ্রতি ২০ টাকা। বিদেশী দর্শনার্থীদের জন্য এই ফি ২০০ টাকা। আর সার্কভূক্ত দেশের নাগরিকদের জন্য ১০০ টাকা।
কোথায় খাবেন?
জমিদার বাড়ির আশেপাশে খাওয়ার জন্য বেশকিছু রেস্টুরেন্ট ও হোটেল রয়েছে। বাস থেকে সাটুরিয়া নেমে স্থানীয় খাবার হোটেল আছে। মোটামুটি ভালো মানের খাবার পাওয়া যায়। ১২০ টাকা থেকে ২০০ টাকার মধ্যে দুপুরের খাবার খেতে পারবেন। খাবারের মেনু হিসেবে ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল সবজি ইত্যাদি পাবেন।
কোথায় থাকবেন?
ঢাকা থেকে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে যায়। তারপরও কেউ থাকতে চাইলে মানিকগঞ্জে গিয়ে থাকতে পারবেন। মানিকগঞ্জে থাকার জন্য কিছু হোটেল ও গেস্ট হাউজ আছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- মানিকগঞ্জ রেসিডেনসিয়াল বোর্ডিং, নবীন রেসিডেনসিয়াল বোর্ডিং, জেলা পরিষদ বোর্ড হাউজ (সরকারি)।
ভ্রমণ টিপস ও পরামর্শ
হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হতে পারে। তাই ভ্রমনে যাওয়ার আগে সর্বশেষ ভাড়া ও খরচ সম্পর্কে জেনে ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। ঢাকা থেকে যাতায়তের ক্ষেত্রে রাস্তায় জ্যামের হিসেব করে বের হবেন। ডে ট্যুরে কোথাও গেলে সকাল সকাল বের হয়ে যাওয়াই উত্তম। ভ্রমণে গিয়ে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে আসবেন না। পাশের জনকেও এই বিষয়ে সতর্ক করুন। এটা অভ্যাসের বিষয়।
ঢাকার আশেপাশে ডে ট্যুর
ঢাকার কাছাকাছি ডে ট্যুর এর জন্য রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো কেরানিগঞ্জের সারি ঘাট, গাজীপুর এর বেলাই বিল, সাভারের সাদুল্লাপুর এর গোলাপগ্রাম ইত্যাদি। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে দেখুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল ফেসবুক গ্রুপ Green Belt The Travelers ‘এ। বালিয়াটি জমিদার বাড়ি সম্পর্কে আরো নির্দিষ্ট কোনো তথ্য আপনার জানা থাকলে আমাদেরকে জানাতে পারেন।
মুন্সীগঞ্জ জেলার পদ্মা নদীর পাড়ে গড়ে উঠা নয়নাভিরাম একটি রিসোর্টের নাম পদ্মা রিসোর্ট। যারা কর্মব্যস্ত শহরের গন্ডি পেরিয়ে কিছুটা সময় প্রকৃতি আর নদীর সান্নিধ্যে কাটাতে চান তাদের জন্য এটি আদর্শ একটি স্থান। জীবনের শত ধরাবাঁধা নিয়ম, শব্দ আর বায়ুদূষন, নাগরিক কোলাহল থেকে কিছুটা প্রশান্তি এনে দিতে পারে পদ্মা নদীর মাঝখানে জেগে উঠা চরে গড়া নির্মিত এই পদ্মা রিসোর্ট। পরিবার নিয়ে কিংবা বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠার জন্য এটি আদর্শ একটি জায়গা। ঢাকা থেকে পদ্মা রিসোর্ট এর দূরত্ব মাত্র ৫০ কিলোমিটার। সাথে গাড়ি থাকলে যেতে সময় লাগে দেড় ঘন্টা। পদ্মা রিসোর্ট গড়ে উঠেছে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার লৌহজং থানার পাশে পদ্মা নদীর বুকে।
কিভাবে যাবেন পদ্মা রিসোর্ট
পদ্মা রিসোর্টে যেতে হলে ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে লৌহজং আসতে হবে। ঢাকার গুলিস্তান থেকে ছেড়ে আসা গাংচিল অথবা ইলিশ পরিবহনে সরাসরি লৌহজং থানা মসজিদ পর্যন্ত আসতে পারবেন। ভাড়া নিবে জনপ্রতি ৭০ টাকা। মিরপুর ১০, ফার্মগেট বা শাহবাগ থেকে যেতে পারবেন স্বাধীন পরিবহনে। অথবা মাওয়া ঘাট রুটের বাস ‘গ্রেট বিক্রমপুর’ কিংবা ‘গোধুলী’ গেলে নামতে হবে মাওয়া ঘাটের আগেই লৌহজং থানায় যাওয়ার চৌরাস্তার মোড়ে। সেখান থেকে রিকশা বা অটোরিকশাতে ১৫ মিনিটের পথ। আর নিজের গাড়ি নিয়ে গেলে সরাসরিই যাওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে দুই জায়গায় ৬০ টাকা টোল দিতে হবে।
পদ্মা রিসোর্টে যা আছে
এখানে রিসোর্টের বাইরে আছে বিচ চেয়ার। যেখানে হেলান দিয়ে আপনি উপভোগ করতে পারবেন পদ্মা পারের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। পদ্মা রিসোর্টের রয়েছে নিজস্ব ঘোড়া। ঘোড়ায় চড়েও আপনি ঘুরে বেড়াতে পারবেন চাইলে। রিসোর্টের ভিতরে বেশ খানিকটা জায়গা নিয়ে আছে সুসজ্জিত রেস্টুরেন্ট। এখানে ১২০ জন পর্যন্ত বসতে পারে। যারা নৌকা ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি ভালো একটি জায়গা। রিসোর্টের নিজস্ব স্পিডবোট ও রিভারক্রুজের ব্যবস্থা আছে। কান্ট্রিবোটে উঠা যায় একসাথে ২০/২৫ জন। আর যাদের নদীতে মাছ ধরার শখ আছে তারা ফিশিং বোটেও চড়তে পারেন। সব বোটেই সেফটি কিট হিসেবে লাইফ জ্যাকেট আছে।
খাবারের ব্যবস্থা
খাবারের জন্য পদ্মা রিসোর্টে দৃষ্টিনন্দন রেস্টুরেন্ট আছে। সুপরিসর জায়গা নিয়ে করা এই রেস্টুরেন্টে অনায়াসে ২০০ জন মানুষ খেতে পারে। আপনি চাইলে এখানে লাঞ্চ বা ডিনার পার্টির আয়োজন করতে পারবেন। রেস্টুরেন্টে ঢোকার আগে ৩৫০টাকা দিয়ে ফুড টোকেন সংগ্রহ করতে হবে রিসোর্ট অফিস থেকে। লাঞ্চে থাকবে ভাত, ডাল, ইলিশ ফ্রাই, মুরগীর মাংস, সবজি সালাদ। আলাদা ভাবে কিনতে হবে মিনারেল ওয়াটার। দাম পড়বে প্রতি লিটার ৪০ টাকা। আর সকালের নাস্তায় খরচ পড়বে জনপ্রতি ১০০ টাকা। মেনু হিসেবে থাকবে পরোটা, সবজি, ডিম, চা।
পদ্মা রিসোর্ট থাকার খরচ
সারাদিন থাকতে চাইলে এখানে কটেজ ভাড়া পড়বে ভ্যাটসহ ২৩০০ টাকা। সারাদিন এবং একরাত কাটাতে চাইলে ভ্যাটসহ গুনতে হবে ৩৪৫০ টাকা। পদ্মায় ঘুরে বেড়ানোর জন্য স্পিডবোট নিলে ঘন্টাপ্রতি পড়বে ২৫০০ টাকা। সাম্পান নৌকায় ১২০০ টাকা। আর ট্রলারে খরচ হবে ১২০০ টাকা।
পদ্মা রিসোর্ট এর কটেজ সমূহ
থাকার জন্য এখানে ১৬ টি ডুপ্লেক্স কটেজ আছে। এর মধ্যে ১২টির নামকরণ করা হয়েছে বাংলা ১২ মাসের নামে। আর বাকি ৪টা ঋতুর নামে। প্রতিটি কটেজে একটি মাস্টারবেড রুম, দুইটি সিঙ্গেল বেডরুম, এবং একটি ড্রয়িংরুম আছে। আছে দুইটি ব্যালকনি এবং একটি বাথরুম। একটি কটেজে সর্বোচ্চ ৮ জন থাকতে পারবেন। কটেজের চাল দেওয়া হয়েছে সুন্দরী পাতা দিয়ে। ডুপ্লেক্স এইসব কটেজের নিচতলায় রয়েছে একসেট সোফা, টেবিল এবং একটি সিঙ্গেল বেড। শীতে এখানে বাহারী রঙের ফুল ফোটে। আর বর্ষায় পদ্মার অপরূপ রূপ দেখা যাবে রিসোর্টে বসেই।
ভ্রমণ টিপস
পদ্মা রিসোর্ট ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় এখানে প্রচুর পর্যটক ঘুরতে আসে। তাই আসার জন্য আগে থেকে বুকিং দিয়ে আসলে বিড়ম্বনায় পড়তে হবেনা। পর্যটন সম্পর্কিত হোটেল রিসোর্ট সমূহের ভাড়া, যানবাহন ভাড়া এবং অন্যান্য খরচ পরিবর্তিত হতে পারে সময়ের সাথে। তাই ভ্রমণ পরিকল্পনা করার আগে সর্বশেষ খরচ সম্পর্কে জেনে নিন।
ঢাকার কাছাকাছি ডে ট্যুর এর জন্য রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো সাভারের সাদুল্লাপুর এর গোলাপ গ্রাম, দোহারের মৈনট ঘাট, কেরানিগঞ্জের সারি ঘাট, ইত্যাদি। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে দেখুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল ফেসবুক গ্রুপ Green Belt The Travelers ‘এ।
ছুটি রিসোর্ট এর অবস্থান ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ঘেঁষে গাজীপুরের সুকুন্দি গ্রামে। প্রায় ৫০ বিঘা জায়গা নিয়ে এই রিসোর্টটি গড়ে উঠেছে। এখানে রয়েছে নৌ ভ্রমণ এর ব্যবস্থা। বিরল প্রজাতির বৃক্ষরাজির সমন্বয়ে গড়ে উঠা এখানকার সংরক্ষিত বনে তাঁবু টানানো আছে। এখানকার দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে নানান মৌসুমি ফল। যেগুলো বিনামূল্যে সরবরাহ করে কতৃপক্ষ। অতিথিদেরকে সকালে পরিবেশন করা চালের রুটি অথবা চিতই পিঠা। সাথে সবজি ডাল ভুনা আর মুরগির মাংস। খুব কাছ থেকে বিল ঝিলের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন এখানে। ছুটি রিসোর্ট এর বড় আকর্ষণ এখানকার মাছ ধরার ব্যবস্থা। নির্দিষ্ট ফি এর বিনিময়ে রিসোর্টের লেকে মাছ ধরতে পারবেন। এইসব আয়োজন আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে নিজের শৈশবে!
কিভাবে যাবেন ছুটি রিসোর্ট
ছুটি রিসোর্ট যাওয়ার জন্য প্রথমে গাজীপুর চৌরাস্তা আসতে হবে। সেখান থেকে নিজস্ব পরিবহন বা যাত্রীবাহী বাসে করে গাজীপুর ডিসি অফিস (রাজবাড়ী) এর সামনে আসতে হবে। সেখান থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে আমতলী বাজারের কাছে সুকুন্দি গ্রামে সুকুন্দি গ্রামে ছুটি রিসোর্ট এর অবস্থান।
কি দেখবেন
দৃষ্টিনন্দন এই রিসোর্টে রয়েছে ছনের ঘর, রেগুলার কটেজ, বার্ড হাউজ, মাছ ধরার ব্যবস্থা, আধুনিক রেস্টুরেন্ট, ঔষুধি গাছের বাগান, অর্গানিক ফলের বাগান, ফুল বাগান ইত্যাদি। এছাড়া দুইটি খেলার মাঠ, দুইটি পিকনিক স্পট, গ্রামীণ পিঠা ঘর। এখানে সারাদিন পাখির ডাক শোনা যাবে। সন্ধ্যা নামলে জোনাকি পোকার মিছিল, ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। জোছনা রাতে এই রিসোর্টটি আপনার আরো ভালো লাগবে। রিসোর্টের নিয়ম অনুসারে এখানে জোছনা রাতে বাইরের বাতি জ্বালানো হয়না! জোছনা রাত কিংবা বৃষ্টির সময় এখানে একটা রাত কাটানো যেতেই পারে!
ছুটি রিসোর্ট এর ভিতরে রয়েছে একাধিক বড় লেক। এগুলো দেখলে মনে হবে বিশাল আকারের কোনো বিল ঝিল! দর্শনার্থীদের জন্য এখানে ক্রিকেট ফুটবল ও ব্যাডমিন্টন খেলার ব্যবস্থা আছে।
কোথায় খাবেন
ছুটি রিসোর্টে ট্রেডিশনাল বাংলা খাবার, ইন্ডিয়ান, থাই, চাইনিজ খাবারের জন্য রয়েছে দীঘির জল লেকভিউ রেস্তোরা। এছাড়া স্ন্যাক্স, বারবিকিউ, জুস কিংবা ট্রেডিশনাল পিঠার জন্য এখানে একটি ক্যাফে পুল রয়েছে। স্পেশাল অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য এখানে আছে ছায়াবিথী হল। সেখানে আপনার মতো খাবার কাস্টমাইজ করতে পারবেন।
ছুটি রিসোর্ট এ থাকার খরচ
থাকার জন্য মোট ১১ ধরণের রুম আছে ছুটি রিসোর্টে। এখানে আপনি আপনার পছন্দমতো রুম বেছে নিতে পারবেন। রুম গুলোর ক্যাটাগরির মধ্যে রয়েছে উডেন কটেজ, ঐতিহ্য কটেজ, ডুপ্লেক্স ভিলা, ডিলাক্স টুইন, ভাওয়াল কটেজ, ফ্যামিলি কটেজ, এক্সিকিউটিভ স্যুইট কিংবা প্লাটিনাম কিং। এই রিসোর্ট এর সবচেয়ে ব্যায়বহুল রুমটির নাম রয়েল স্যুইট।
রিসোর্ট এর রুম ভাড়া পড়বে ২৪ ঘন্টার জন্য ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা। রয়্যাল স্যুইট ১৭ হাজার টাকা। কনফারেন্স রুম ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এবং পিকনিকের জন্য ১০০ থেকে ২০০ জনের ভাড়া ৯০ হাজার টাকা। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অফিসিয়াল মিটিং কিংবা ওয়ার্কশপ করতে চাইলে সেই ব্যবস্থাও এখানে আছে।
ডে আউট প্যাকেজ
সর্বনিন্ম ৭ থেকে ৮ জন হলে এখানে ডে আউট প্যাকেজ নিতে পারবেন। এই প্যাকেজের মধ্যে পাবেন সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার, দেশীয় পিঠা, বিশ্রামের জন্য এসি রুম সহ আরো সুযোগ সুবিধা। এক্ষেত্রে জনপ্রতি গুনতে হবে ২৫৩০ টাকা। এই প্যাকেজ নিতে চাইলে আগে থেকে যোগাযোগ করতে হবে।
ছুটি রিসোর্ট ভ্রমণ এর আগে
হোটেল রিসোর্ট রুম বা যানবাহন ভাড়া সিজন ভেদে পরিবর্তন হতে পারে। তাই যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া সমপর্কে জেনে নিন। হিডেন চার্জ সমূহ সম্পর্কে জেনে নিন। খাবারের দাম সম্পর্কে একটা ধারণা নিয়ে রাখতে পারেন যাওয়ার আগে। আপনার রুম এর সাথে কমপ্লিমেন্টারি হিসেবে কোন কোন সুবিধা পাবেন সেটাও জেনে নিন। এখানকার লেক কিংবা সুইমিং পুলে নামার ব্যপারে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। রিসোর্টে পর্যাপ্ত ডাস্টবিন রয়েছে। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা থেকে বিরত থাকুন।
ঢাকার কাছাকাছি ডে ট্যুর এর জন্য রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো মানিকগঞ্জের বালিয়াটি জমিদার বাড়ি, গাজীপুরের বেলাই বিল, সাভারের সাদুল্লাপুর এর গোলাপ গ্রাম ইত্যাদি। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে দেখুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল ফেসবুক গ্রুপ Green Belt The Travelers ‘এ। ছুটি রিসোর্ট সম্পর্কে আরো কোনো তথ্য আপনার জানা থাকলে আমাদেরকে জানাতে পারেন।
গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায়। সীতাকুন্ড মানেই একপাশে সাগর আর অন্যপাশে পাহাড়। সীতাকুন্ড বাজার থেকে গুলিয়াখালী সি বিচ এর দুরত্ব ৫ কিলোমিটার। স্থানীয়দের কাছে এই সৈকত “মুরাদপুর সী বিচ” নামে পরিচিত। গুলিখালীর অন্যতম বৈশিষ্ট হলো এখানকার পুরো সমুদ্র পাড় ঢেকে আছে গালিচার মতো সবুজ ঘাসে! সৈকতের তিনদিকে শোভা বর্ধন করছে ছোট ছোট ম্যানগ্রোভ বন। আর অন্যদিকে অসীম সমুদ্র। বনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালার মধ্যে কেওড়া অন্যতম। ম্যানগ্রোভ বনের শ্বাসমূল ছড়িয়ে আছে সৈকত জুড়ে। তার মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে বড় ছোট অনেকগুলো খাল। জোয়ারের সময় খালগুলো পানিতে ভরে যায়। গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত কিছুটা কম পরিচিত হওয়ায় বেশিরভাগ সময়ই এখানে পর্যটক থাকেনা। তাই আপনি সমুদ্রের বাতাসের সাথে নিরবতা উপভোগ করতে পারবেন মন ভরে। গুলিয়াখালি সী বিচ এর কাছাকাছি জেলে পল্লী থাকায় শুনশান সৈকতও নিরাপদ। গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত এর কাছেই আছে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত।
কিভাবে যাবেন গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত
গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি সীতাকুন্ড আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুন্ড পর্যন্ত যেতে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।
ট্রেনে সীতাকুন্ড
ঢাকা থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত তথা সীতাকুন্ডের সরাসরি একটি ট্রেন আছে চট্টলা একপ্রেস নামে। এছাড়া সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই সীতাকুন্ড বাজার যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে সীতাকুন্ডের বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।
যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে সীতাকুন্ড বাজারে আসা যাবে।
সীতাকুন্ড থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত
সীতাকুন্ড বাজারের হাইওয়ে ওভারপাসের নিচ থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত যাওয়ার সিএনজি পাওয়া যায়। বাজার থেকে সমুদ্রের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। রিজার্ভ সিএনজিতে ভাড়া পড়বে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। যেতে সময় লাগে ২৫/৩০ মিনিট। সিএনজি নেওয়ার সময় ঠিকঠাক দরদাম করে নিবেন। চাইলে আপডাউন রিজার্ভও করতে পারেন। গুলিয়াখালীর কাছে বেড়িবাঁধে সিএনজি আপনাকে নামিয়ে দিবে। ওখান থেকে হেঁটে সমুদ্রপাড়ে গেলে ১০/১২ মিনিট লাগে। ঘুরতে গিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলে অনেক সময় ফেরার সিএনজি পাওয়া যায়না। তাই নামার সময় ড্রাইভারের ফোন নাম্বার নিয়ে রাখুন।
কোথায় থাকবেন
সীতাকুন্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।
কোথায় খাবেন
সীতাকুন্ড বাজারে খাবারের অনেকগুলো দোকান আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের বাসে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারেন।
ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা
গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে বিকেলে গেলে ভালো লাগবে। সীতাকুন্ড থেকে ঘুরে আসতে সব মিলিয়ে দুই তিন ঘন্টা সময়ই যথেষ্ট। তাই সারাদিনের জন্য সীতাকুন্ডের প্ল্যান থাকলে সকালটা আশেপাশের অন্য কোনো দর্শনীয় স্থানে কাটাতে পারেন। ভ্রমণের সময় জোয়ার ভাটার টাইম জেনে নিন। স্থানীয় জেলেরাও এই ব্যাপারে ভালো ধারণা দিতে পারবে। জোয়ারের সময় সমুদ্রের কাছে না থাকাই ভালো। কারণ খালগুলো জোয়ারের পানিতে ভরে গেলে ফিরতে অসুবিধা হবে। সন্ধ্যার মধ্যেই সীতাকুন্ড বাজারে ফিরে আসুন। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা ছোটলোকি। ভুলেও এই কাজ করবেন না, গোপনেও না। জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।
কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেকগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান রয়েছে। গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত গেলে একইদিন নিচের যেকোনো একটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। গুলিয়াখালী সি বিচ এর একদম কাছাকাছি আছে বাঁশ বাড়িয়া সমুদ্র সৈকত আর চন্দ্রনাথ পাহাড় । কাছাকাছি আছে এই রুটের সবচেয়ে এডভেঞ্চারাস ট্রেইল সোনাইছড়ি। সীতাকুন্ড ইকো পার্ক এর ভিতরে আছে সুপ্তধারা আর সহস্রধারা জলপ্রপাত। আর হাইওয়ে ধরে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগুলে পাবেন কমলদহ ঝর্ণা। যদি বিশ কিলোমিটার যান তাহলে খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার ট্রেইল পাড়বে।
সীতাকুন্ড ইকোপার্ক চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায়। পাহাড়ে পাহাড়ে বিশাল বনভূমি, বন্যপ্রাণী ও হরেক রকম বৃক্ষরাজির মনোরম পরিবেশে একটা দিন কাটানোর জন্য প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক পর্যটক এখানে ছুটে আসেন। ইকোপার্কের ভিতরে সুপ্তধারা ও সহস্রধারা নামের দুইটি ঝর্ণা আছে। ঝর্ণায় যেতে হলে পাহাড় দিয়ে কিছুটা উঠানামা করা লাগে। এখানে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামও এসেছিলেন। পাহাড় ও ঝর্ণার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তিনি “আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ঐ” নামে বিখ্যাত গানটি রচনা করেন। যার ফলক এখনো ইকো পার্কের ভিতরে আছে। বোটানিক্যাল গার্ডেন এর ভিতরে পাহাড়ের উপর থেকে বঙ্গোপসাগরও দেখা যায়।
কিভাবে যাবেন সীতাকুন্ড ইকোপার্ক
সীতাকুন্ড ইকোপার্ক যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি সীতাকুন্ড আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন সহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুন্ড পর্যন্ত যেতে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া মান ভেদে ৪০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।
ট্রেনে সীতাকুন্ড
ঢাকা থেকে সীতাকুন্ড ইকোপার্ক যাওয়ার সরাসরি ট্রেন হলো চট্টলা এক্সপ্রেস। এছাড়া সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই সীতাকুন্ড বাজার যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে সীতাকুন্ডের বাস ভাড়া ৮০ থেকে ১৫০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।
যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে সীতাকুন্ড বাজারে আসা যাবে। চট্টগ্রাম থেকে এলে অলংকার বা একে খান বাস স্ট্যান্ড থেকে সীতাকুন্ডের বাস আছে। ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা।
সীতাকুন্ড থেকে ইকোপার্ক
সীতাকুন্ড বাজার থেকে হাইওয়ে ধরে চট্টগ্রামের দিকে ২ কিলোমিটার গেলে ফকিরহাট বাজার পড়োবে। ফকিরহাট থেকে হাইওয়ের পূর্ব দিকের রাস্তা দিয়ে দেড় কিলোমিটার গেলেই সীতাকুন্ড বোটানিক্যাল গার্ডেন অর্থাৎ সীতাকুন্ড ইকোপার্ক। জনপ্রতি প্রবেশ ফি ৫০ টাকা। সিএনজি নিয়ে প্রবেশ করলে বাড়োতি ৮০ টাকা দিতে হয়। জীব বৈচিত্র ও প্রাণী বৈচিত্রের সাথে পরিচিত হতে প্রতি বছর শিক্ষা সফরে দেশের নানান প্রান্ত থেকে প্রচুর ছাত্রছাত্রী এখানে আসেন। সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে বিশুদ্ধ পানি ও ওয়াশরুমের সুব্যবস্থা আছে।
কোথায় থাকবেন
সীতাকুন্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।
কোথায় খাবেন
হালকা নাস্তা করার মতো কয়েকটি দোকান আছে সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর প্রবেশ মুখে। ভারী খাবারের জন্য আপনাকে সীতাকুন্ড বাজারে আসতে হবে। খাবারের জন্য হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের বাসে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারেন।
কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেকগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান রয়েছে। সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরে রয়েছে সুপ্তধারা ও সহস্রধারা নামে দুইটি ঝর্ণা। এছাড়া ইকো পার্ক এর বাইরে নিচের যেকোনো একটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন একইদিন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। চন্দ্রনাথ পাহাড় আর গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত সীতাকুন্ড ইকো পার্কের পাঁচ কিলোমিটার এর মধ্যে। কাছেই বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত। আর হাইওয়ে ধরে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগুলে পাবেন কমলদহ ঝর্ণা। যদি বিশ কিলোমিটার যান তাহলে খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার ট্রেইল পাড়বে। জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।
বগালেক বান্দরবানের রুমা উপজেলার কেওক্রাডং পাহাড় রেঞ্জে অবস্থিত একটি লেক। বান্দরবান সদর থেকে প্রায় ৭০ কিঃমিঃ ও রুমা উপজেলা থেকে ১৭ কিঃমিঃ দূরত্বে এর অবস্থান। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৪০০ ফিট উচ্চতার এই লেক ভূতত্ত্ববিদদের মতে প্রায় ২ হাজার বছর আগে উল্কাপিন্ডের পতনে প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্টি হয়। অনেকের মতে এটি মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামূখ। এটি ড্রাগন লেক ও বগাকাইন লেক নামেও পরিচিত।
দীর্ঘ ভ্রমণ ক্লান্তি শেষে এই লেকের সামনে আসার পর আপনি যাত্রাপথের সমস্ত কষ্ট ভুলে যাবেন। বগালেক ও তার আশেপাশের মোহময়ী প্রকৃতি এক নিমেষে আপনার মন ভালো করে দিবে। দিনের একেক সময় এখানে প্রকৃতি একেক রূপ ধারণ করে। সন্ধ্যার পর আপনার সামনে খুলে যাবে আকাশ ভরা নক্ষত্রের ডালি। দূষণমুক্ত পরিবেশ ও ভৌগলিক অবস্থানের কারণে প্রতিদিনই এখানে আকাশে তারার দেখা মেলে। আর কোনো এক জোছনা রাত যদি আপনি বগালেকে কাটাতে পারেন, সেটা আপনার জীবনের উল্লেখযোগ্য স্মৃতি হিসেবে থেকে যাবে। চাঁদের আলো যখন লেকের পনিতে ঢেউ খেলে, পাহাড়ি নিস্তব্ধ পরিবেশ তখন মোহনীয় রূপ ধারণ করে। চলুন জেনে নিই বগালেক ভ্রমণ এর বিস্তারিত।
বগালেক ভ্রমণ এর উপযুক্ত সময়
সৌন্দর্যের টানা বছরজুড়ে এখানে প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটে আসে। তবে বর্ষায় রুমাগামী জিপ প্রায়ই কাইক্ষংঝির পর্যন্ত যায়, এরপর ইঞ্জিন নৌকায় ১ঘন্টার বেশি পথ পড়ি দিয়ে রুমাবাজার পৌঁছাতে হয়। রুমা বাজার থেকে বগালেকের রাস্তা ভাঙাচোরা হওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থার অসুবিধা হয়। এটা পুরোটাই হাঁটতে হয়। তাই নিতান্তই এডভেঞ্চারপ্রেমী না হলে শীতকালেই বগালেক যাওয়াকে সাজেস্ট করেন ভ্রমনকারীরা। অর্থাৎ বলা চলে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত বগালেক ভ্রমণের উপযুক্ত সময়।
কিভাবে বগালেক যাবেন
বগালেক যেতে হলে প্রথমে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে আপনাকে বান্দরবান আসতে হবে। ঢাকা থেকে এসি – নন এসি সব ধরণের বাসই বান্দরবান যায়। নন এসির মধ্যে শ্যামলী, সৌদিয়া, ইউনিক, ডলফিন, সেন্টমার্টিন, এস আলম ইত্যাদি পরিবহনের বাস পাবেন। বাস ছাড়ে কলাবাগান, ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ থেকে। রাত এগারোটার মধ্যে লাস্ট বাস ছেড়ে যায়। ভাড়া ৫৮০ থেকে ৬২০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে।
ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে উঠতে হবে। সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, সূবর্ণ এক্সপ্রেস, তূর্ণা নিশীথা, মহানগর প্রভাতী ও গোধুলী সহ অনেকগুলো ট্রেইন ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ট্রেন ও আসন ভেদে ভাড়া ২০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে।
চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান যেতে হলে প্রথমে বহদ্দারহাট যেতে হবে। ওখান থেকে ৩০ মিনিট পরপর ‘পূর্বাণী’ ও ‘পূরবী’ নামে দুটি পরিবহনের বাস ছাড়ে। ভাড়া ২২০ টাকা।
বান্দরবান থেকে রুমা বাজার
বান্দরবান থেকে বগালেক যেতে হলে প্রথমে রুমা বাজার যেতে হবে। রুমা বান্দরবানের একটি উপজেলা। এটি জেলা শহর থেকে ৫০ কিঃমিঃ দূরে। বাসে বা জিপে করে আপনি রুমা বাজার যেতে পারবেন। বান্দরবান সদরের রুমা বাস স্ট্যান্ড থেকে ১ ঘন্টা পরপর রুমার বাস ছাড়ে। ভাড়া ১২০ টাকা। যেতে সময় লাগবে ৩ ঘন্টার মতো। বিকাল ৩টার মধ্যে লাস্ট বাস ছেড়ে যায়।
জিপে করে রুমা যেতে চাইলে রিজার্ভ নিতে হবে। ভাড়া পড়বে সিজন ভেদে ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে। এক জিপে ১২/১৩ জন বসা যায়। যেতে সময় লাগবে ২ ঘন্টার মতো। শীতের সিজনে এই রুটে লোকাল জিপ পাওয়া যায়। জনপ্রতি ৮০ থেকে ১২০ টাকা ভাড়া নেয়।
রুমা বাজার থেকে বগালেক
রুমা বাজার পৌঁছে আপনার প্রথম কাজ হবে বগালেক যাওয়ার জন্য গাইড ও জিপ ঠিক করা। গাইড সমিতির অফিস থেকে রেজিস্টার্ড গাইড কাউকে নিতে হবে। রেজিস্টার্ড গাইড ছাড়া আপনি বগালেকে যাওয়ার অনুমতি পাবেন না। এরপর রুমা বাজার আর্মি ক্যাম্পে আপনাকে রিপোর্ট করতে হবে। সবার নাম ফোন নাম্বার সহ বিস্তারিত লিখে জমা দিতে হবে ক্যাম্পে। আপনার হয়ে গাইডই এই কাজগুলো করে দিবে। গাইড ফি প্রতিদিনের জন্য ৬০০ টাকা। এটা আর্মি দ্বারা নির্ধারিত। তবে গাইডের থাকা খাওয়ার সকল খরচ আপনাকেই বহন করতে হবে। বগালেকের কয়েকজন রেজিস্টার্ড গাইডের নাম্বার-
রুমা বাজার থেকে বগালেক পর্যন্ত জিপ ভাড়া ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা। এক জিপে ১২/১৩ জন যাওয়া যায়। আপনার টিমে সদস্য সংখ্যা কম হলে অন্য কারো সাথে জিপ শেয়ার করতে পারবেন। এছাড়া ১ ঘন্টা পরপর লোকাল জিপ ছাড়ে। ওগুলোতেও যেতে পারবেন। ভাড়া ১০০ টাকা। বিকাল ৪টার পর রুমা যেতে বগালেকের উদ্দেশ্যে কোনো গাড়ি যেতে দেয় না আর্মি। তাইল আপনাকে সকল কাজ ৪টার আগেই শেষ করতে হবে। রুমা থেকে বগালেকের দূরত্ব ১৭ কিঃমিঃ। যেতে ১ ঘন্টার মতো সময় লাগে।
বগালেকে কোথায় থাকবেন
বগালেকে থাকার জন্য উন্নতমানের কটেজ বা রিসোর্ট নেই। স্থানীয় আদিবাসীদের ছোট ছোট কিছু কটেজ আছে। ওগুলোতেই রাত্রি যাপন করতে হবে। এতে জনপ্রতি খরচ হবে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এক রুমে ৫/৬ জন করে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। ফিমেইলদের জন্য আলাদা থাকার ব্যবস্থা। আর কাপল হলে আলাদা কাপল কটেজ পাওয়া যায়। সবকিছু আগে থেকে গাইডকে বলে রাখলে সে ব্যবস্থা করে রাখবে। অথবা আপনি চাইলে ওখানে গিয়েও ঠিক করতে পারবেন। ঢাকা থেকে কটেজ ঠিক করতে চাইলে বুুকিংয়ের জন্য ফোন দিতে পারেন লারাম বম- 01552376551, বা সিয়াম দিদির 01840721590 নাম্বারে।
খাওয়ার ব্যবস্থা আছে আদিবাসী ঘর ও কটেজগুলোতে। জনপ্রতি খাওয়ার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। খাবার হয় প্যাকেজ সিস্টেমে। মেনু হিসেবে ভাত, ডাল, ভর্তা, ডিম মুরগী ইত্যাদি পাওয়া যায়। খাবার কতজন খাবেন, কী দিয়ে খাবেন ইত্যাদি আগে থেকে অর্ডার করতে হয়। গাইডকে বললেই হবে, সে অর্ডার করে দিবে। অথবা চাইলে আপনি নিজেও কথা বলে অর্ডার করতে পারেন। কটেজগুলোতে নিজস্ব বারবিকিউর ব্যবস্থা আছে। রাতে বগালেক পাড়ে মনোরম পরিবেশে বারবিকিউ পার্টি করে নিজেদের মধ্যে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারেন চাইলে।
বগালেক ভ্রমণ টিপস
বগালেকে বিদ্যুত নেই। সোলার প্যানেলে পাওয়ার সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা আছে। তবে সাথে করে পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে গেলে ভালো।
রবি ও টেলিটক বাদে অন্য ফোনের নেটওয়ার্ক নেই বগালেকে। তাই এই সিমগুলো সাথে রাখুন।
বগালেকে গোসল করতে চাইলে সাবধানে করবেন। সবসময় সতর্ক থাকা ভালো। সাঁতার দিতে গিয়ে অতীতে একাধিক মৃত্যু দেখেছে বগালেক।
সাথে এনআইডি কার্ড রাখুন। এটা বাধ্যতামূলক নয়। যেকোনো ফটো আইডি সাথে থাকা জরুরি।
যাত্রাপথে জিপের ছাদে উঠবেন না। এটি করতে আর্মির পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আছে। তাছাড়া পাহাড়ি পথে জিপের ছাদে উঠা বিপদজনক।
আদিবাসীদের ছবি তোলার ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে ভুলবেন না। এটা সাধারণ কাণ্ডজ্ঞান। আপনার কাণ্ডজ্ঞান আপনার ব্যাক্তিত্বকে রিপ্রেজেন্ট করে।
পাহাড়িদের কালচারের প্রতি সম্মান দেখান। এমন কিছু বলবেন না, যেটি অন্যকেউ আপনাকে বললে আপনারও খারাপ লাগতো।
যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলা আপনার ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। সেটি শুধু পাহাড়ে নয়, এমনকি শহরেও।
আশেপাশে কী কী দেখার আছে
হাতে সময় থাকলে বগালেকের আশেপাশে আরো কিছু স্পট ঘুরে দেখতে পারেন। এরমধ্যে অন্যতম কেওক্রাডং। বগালেক থেকে কেওক্রাডং যেতে চাইলে ১ দিন বাড়তি সময় লাগবে। কেওক্রাডংয়ে থাকার ব্যবস্থা আছে। যাওয়ার পথে দেখতে পারবেন চিংড়ি ঝর্ণা। এছাড়া বান্দরবানের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে নীলগিরি। এটি সর্বাধিক জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। এছাড়া থানচিতে আছে নাফাখুম জলপ্রপাত এবং রোয়াংছড়িতে আছে দেবতাখুম নামে একটি গিরিখাদ উল্লেখযোগ্য।
মিনি কক্সবাজার হিসেবে খ্যাত মৈনট ঘাট ডে ট্যুর এর জন্য এটি চমৎকার একটি স্থান! পরিবার বা বন্ধুবান্ধব সহ যারা একটা দিন ঢাকার বাইরে কাটিয়ে আসতে চান, তারা মইনট ঘাট ভ্রমণ এর কথা মাথায় রাখতে পারেন। মৈনট ঘাট এর অবস্থান ঢাকা জেলার দোহার উপজেলায়। গুলিস্তান থেকে এর দূরত্ব ৬০ কিঃমিঃ এর মতো। রাজধানী ঢাকা থেকে দিনে গিয়ে দিনেই বেড়িয়ে আসতে পারবেন। এখানে এসে আপনি মুগ্ধ হবেন, বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকবেন পদ্মা নদীর অপার জলরাশির দিকে। এই বিশাল জলরাশি, পদ্মায় হেলেদুলে ভেসে বেড়ানো জেলেদের নৌকা, আর পদ্মার তীরে হেটে বেড়ানো। সব মিলিয়ে কিছুক্ষণের জন্য আপনার মনে হবে আপনি এখন ঢাকার দোহারের মইনট ঘাট এ নয়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আছেন। মূলত এই কারণেই মৈনট ঘাট অনেকের কাছে মিনি কক্সবাজার নামে পরিচিত।
কিভাবে মৈনট ঘাট যাবেন
মৈনট ঘাট ভ্রমণ করতে হলে ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে আপনাকে প্রথমে দোহারে আসতে হবে। গুলিস্তান থেকে দোহারের একাধিক বাস আছে। তবে যমুনা ডিলাক্সই শুধু মইনট ঘাট পর্যন্ত যায়। এটি গুলিস্তান মাজারের সামনে থেকে ছাড়ে। ভাড়া ৯০ টাকা। যেতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা। ফেরার পথে সন্ধ্যা ৬টায় শেষ বাস ছেড়ে আসে। তাই ছ’টার মধ্যেই বাস স্ট্যান্ডে চলে আসুন।
যমুনা পরিবন ছাড়াও “এন মল্লিক পরিবহন” গুলিস্তানের যেই স্থান থেকে ছাড়ে, একই স্থান থেকে জয়পাড়া পরিবহন নামক মিনিবাসটিও ছেড়ে আসে দোহারের জয়পাড়ার উদ্দেশ্যে। যারা প্রাইভেট কার অথবা বাইক নিয়ে আসতে চাচ্ছেন তারা এই বাসের রুটটাকে ব্যবহার করতে পারেন। আসতে সুবিধা হবে।
গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া থেকে “নগর পরিবহনে”ও আসতে পারবেন। ভাড়া ৯০ টাকা। নগর পরিবহন নবাবগঞ্জের রুট ব্যবহার করে না। এই বাসটি আসে মুন্সিগঞ্জ হয়ে। এক্ষেত্রে আপনাকে কার্তিকপুর বাজারে নামতে হবে।
সিএনজিতে মৈনট ঘাট ভ্রমণ করতে চাইলে ঢাকার বাবুবাজার ব্রীজ পার হয়ে কদমতলী থেকে লোকাল সিনজি পাওয়া যায়। ভাড়া জনপ্রতি ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। লোকাল সিএনজি কার্তিকপুর বাজার পর্যন্ত যায়। ওখান থেকে অটোরিকশায় মইনট ঘাট যাওয়া যাবে।
মোহাম্মদপুরের বসিলা থেকেও মৈনট ঘাট এর সিএনজি পাওয়া যায়। বসিলার তিন রাস্তার মোড় থেকে আপনি সিএনজি রিজার্ভ নিতে পারবেন। এই রাস্তাটা বেশ সুন্দর। রিজার্ভ সিএনজি ভাড়া নিবে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা। এই রাস্তাটা বেশ সুন্দর।
কখন যাবেন
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে সারা বছরই এখানে প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটে আসেন। পদ্মার উত্তাল রূপ ও সতেজ প্রকৃতি দেখতে চাইলে বর্ষায় আসতে হবে। আর শরৎকালে, অর্থাৎ সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে এখানে কাশফুলে ভরে যায়। তখন ছবি তোলার জন্য ভালো সময়। শীতকালে গেলে শান্ত পদ্মা পাবেন। মৈনট যাওয়ার পথে সরিষা ক্ষেত দেখতে পাবেন অনেক। শীতে পদ্মার মাঝখানে চর জেগে উঠে। নৌকা বা স্পিডবোট নিয়ে সেই চরে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।
মৈনট ঘাট কি কি দেখবেন?
মৈনট ঘাট যাওয়ার আগেই বান্দুরা এলাকায় পড়বে কোকিল প্যারি জমিদার বাড়ি। এটি স্থানীয় ভাবে কালাকোপা জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত। প্রায় ১৫০ বছরের ইতিহাসের স্বাক্ষী এই বাড়ি। ভাগ্যকুলের জমিদার যদুনাথ রায় তার সন্তানদের জন্য এই বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া কাছাকাছি জজবাড়ি, উকিলবাড়ি, আন্ধারকোঠা নামে পুরাতন জমিদার বাড়ি আছে। সবগুলোই যদুনাথের প্রতিষ্ঠা করা। পুরাকীর্তির প্রতি আকর্ষণ থাকলে এসব স্থাপনায় একটা চক্কর দিয়ে আসতে ভুলবেন না।
কোথায় খাবেন?
শুকনো মৌসুমে নদীর পাড়ে বেশ কিছু অস্থায়ী খাবারের দোকান পাবেন। পদ্মার তাজা ইলিশ দিয়ে দুপুরের লাঞ্চ সেরে নিতে পারেন এখানে। ইলিশ খেতে চাইলে দাম পড়বে ৬০ থেকে ১০০ টাকা। তবে বর্ষাকালে ঘাটে কোনো দোকান থাকেনা। তখন খাবারের জন্য নিকটস্থ কার্তিকপুর বাজারে আসতে হবে। কার্তিকপুর বাজারে মোটামোটি মানের কিছু রেস্টুরেন্ট আছে। এছাড়া কার্তিকপুরের বিখ্যাত রণজিৎ ও নিরঞ্জন মিষ্টান্ন ভান্ডারের রসগোল্লাও কিনতে পারবেন এখান থেকে। প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পড়বে পড়বে। রসগোল্লা ছাড়াও এখানে আছে সুস্বাদু দই।
ট্রলার ভাড়া
মৈনট ঘাট ভ্রমণ এ ট্রলার রিজার্ভ করে পদ্মায় ঘুরতে চাইলে ১ ঘন্টার জন্য ভাড়া পড়োবে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। ইঞ্জিনযুক্ত ছোট নৌকায় খরচ হবে ১ ঘন্টায় ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। ভাড়া নেওয়ার সময় অবশ্যই দামাদামি করে নেবেন। শুক্রবারে বা সরকারী ছুটির দিনগুলোতে পর্যটক বেশি থাকে বলে ট্রলার ভাড়া একটু বেশি হয়।
কোথায় থাকবেন
মইনট ঘাট ঢাকার কাছে হওয়ায় আপনি দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসতে পারবেন। যেতে দুই ঘন্টা সময় লাগে, ফিরতে দুই ঘণ্টা। পর্যটকদের থাকার জন্য মৈনট ঘাট এর আশপাশে কোনো হোটেল, রিসোর্ট, বোর্ডিং এখনও তৈরি করা হয়নি। তারপরও আপনি থাকতে চাইলে স্থানীয় কোনো বাসিন্দার বাড়ি ম্যানেজ করতে পারেন। না পারলে দিনে এসে দিনেই ফিরে আসুন।
সতর্কতা
সাঁতার না জানলে মৈনট ঘাট এর পদ্মা নদীতে গোসল করার সময় বেশি গভীরে যাবেন না। সিগারেট অথবা খাবারের প্যাকেট, পানির বোতল অথবা যেকোনো প্রকার ময়লা যেখানে সেখানে ফেলবেন না। পাখি মারা থেকে বিরত থাকুন। যার তার সামনে সিগারেট ফোঁকা থেকে বিরত থাকুন। দোকানদার, নৌকাচালক সহ সবার সাথে মার্জিত ব্যবহার করুন। এদেরকে ছোট করে দেখবেন না। খেয়াল রাখুন নিজের কোনো আচরণের দ্বারা কোনো নারী বিরক্ত হলো কিনা।
ঢাকার আশেপাশে ডে ট্যুর
ঢাকার কাছাকাছি ডে ট্যুর এর জন্য রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো সাভারের সাদুল্লাপুর এর গোলাপগ্রাম, , রূপগঞ্জ এর জিন্দা পার্ক, কেরানিগঞ্জের সারিঘাট, লঞ্চে চাঁদপুর ডে ট্যুর, গাজীপুর এর বেলাই বিল,ইত্যাদি। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে দেখুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল ফেসবুক গ্রুপ Green Belt The Travelers ‘এ।
ভ্রমণ মানব জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। একটা সময় আমাদের এই অঞ্চলের মানুষের ধারণা ছিলো ভ্রমণ মানেই বিলাসিতা। কালের পরিক্রমায় মানুষ গবেষণা করে বের করেছে ভ্রমণ মানে বিলাসিতা নয়। স্বাভাবিক জীবনে ভ্রমণ মানুষকে মানসিক ভাবে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। মানসিক ভাবে ভালো থাকলে কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সম্পর্কগুলো সুস্থ থাকে। যারা ভ্রমণ এর জন্য বড় ধরণের বাজেট রাখতে পারেন না, তারা মাঝে মাঝেই ডে ট্যুরে যেতে পারেন। প্রতি সপ্তাহ শেষে বা প্রতি পনের দিনে আপনি আপনার কাছের মানুষকে নিয়ে কোনো ডে ট্যুরে গেলে সর্বনিন্ম ৩০০ টাকা দিয়েও ঘুরে আসতে পারবেন। মৈনট ঘাট ছাড়াও ঢাকার আশেপাশে অন্তত ৩০ টি ডে ট্যুর দেওয়ার মতো জায়গা আছে। মাসে দুইটা ডে ট্যুরে গেলেও আপনি মাসশেষে আপনার মানসিক পরিবর্তন বুঝতে পারবেন।
কক্সবাজার বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সর্ববৃহৎ পর্যটন স্থান। পৃথিবীর দীর্ঘতম এই সমুদ্র সৈকতে দেশী বিদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে সারা বছর। বিস্তীর্ণ বালুকাবেলা, সারি বেধে থাকা ঝাউবন, ভোরে সমুদ্র ফুঁড়ে যে সূর্যের উদয় হয়, সন্ধ্যায় আবার ঢেউয়ের মাঝে বিলীন হয় তা। প্রকৃতির এই মোহনীয় রূপ আপনাকে মায়ার জালে আবদ্ধ করে ফেলবে। দেশের ভিতরে ফ্যামিলি বা বন্ধু বান্ধব সহ কোনো ট্রিপের কথা বললে প্রথমেই মাথায় আসে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত এর নাম। নানান কারণে অনেকের কক্সবাজার ট্যুর শতভাগ ভালো হয়না সুন্দর একটি গাইডলাইনের কারণে। এই আর্টিকেল আপনার কক্সবাজার ভ্রমণ আরো প্রাণবন্ত করতে সাহায্য করবে।
আপনার প্রতিষ্ঠানের কক্সবাজার কর্পোরেট ট্যুর এর জন্য যোগাযোগ করতে পারেন দেশের সবচেয়ে ফিমেইল ফ্রেন্ডলি ট্যুর অর্গানাইজার গ্রিন বেল্ট সাথে।
কক্সবাজার ভ্রমণ এর উপযুক্ত সময়
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে ঢেউয়ের গর্জন শুনতে এখানে বছরজুড়ে ভ্রমণপ্রেমীরা ছুটে আসেন। শীতকালে সবাই বেড়াতে পছন্দ করে বলে শীতেই বেশি পর্যটকমুখর থাকে কক্সবাজার। কিন্তু সমুদ্র এমন একটি জায়গা যেখানে আপনি সারা বছরই যেতে পারেন। প্রতিটা মৌসুমে সমুদ্র তার রূপ বদলায়। শীতের রাতে সৈকতে হাঁটতে আপনার যেমন ভালো লাগবে, তেমনি ঝুম বৃষ্টির কোন এক সন্ধ্যায় বৃষ্টিশেষে আপনি বিচে গেলে যে স্নিগ্ধ অনুভূতি পাবেন, কোন কিছুর সাথে তার তুলনা হবেনা। আবার হেমন্তের হেমন্তের কোনো জোছনা রাতে বিচে বসে সমুদ্রের যে রূপ লাবন্য দেখতে পাবেন, সেটা আপনার জীবনের সুন্দর স্মৃতি হয়ে থাকবে অনেককাল। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখা ভালো নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত কক্সবাজার ভ্রমণে আপনার যে পরিমাণ খরচ হবে, বছরের অন্য সময় গেলে তার থেকে ৩০ ভাগ সময় লাগবে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে কক্সবাজার সড়ক, রেল এবং আকাশপথে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী বাসগুলোর মধ্যে সৌদিয়া, এস আলম মার্সিডিজ বেঞ্জ, গ্রিন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, এস.আলম পরিবহন, মডার্ন লাইন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। শ্রেণী ভেদে বাসগুলোর প্রতি সীটের ভাড়া ৯০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার পর্যন্ত।
ঢাকা থেকে ট্রেনে কক্সবাজার ভ্রমণ করতে চাইলে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলস্টেশান হতে সোনার বাংলা, সুবর্ন এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী, চট্রগ্রাম মেইলে যাত্রা করতে পারেন। এরপর চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ এলাকা অথবা দামপাড়া বাস্ট স্ট্যান্ড থেকে এস আলম, হানিফ, ইউনিক ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণ ও মানের বাস পাবেন। বাস ভেদে ভাড়া ২৮০ থেকে ৫৫০ টাকা।
এছাড়া বাংলাদেশ বিমান, নভোএয়ার, ইউএস বাংলা সহ বেশকিছু বিমান ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। এছাড়া আকাশপথে চট্রগ্রাম এসে সড়ক পথে উপরে উল্লেখিত উপায়ে কক্সবাজার যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
ফাইভ স্টার হোটেল থেকে শুরু করে সস্তার বের্ডিং পর্যন্ত বিভিন্ন মানের প্রায় ৫০০র বেশি হোটেল মোটেল রয়েছে কক্সবাজারে। এসব হোটেলের সর্বমোট ধারণ ক্ষমতা ১.৫ থেকে ২ লাখ জন। এর মধ্যে ভালো মানের হোটেলগুলোর ধারণ ক্ষমতা ৫০ হাজার। তাই অফ সিজনে বুকিং না দিয়ে গেলেও সিজনে রুম বুকিং না করে কক্সবাজার ভ্রমণে যাওয়া ঠিক হবেনা। একদম সস্তার হোটেলগুলো বাদ দিয়ে বাকিগুলোকে প্রিমিয়াম, এক্সিকিউটিভ ও স্ট্যান্ডার্ড তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়।
প্রিমিয়াম ক্যাটারির হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে মারমেইড বিচ রিসোর্ট, সায়মন বিচ রিসোর্ট, ওশান প্যারাডাইস, লং বিচ বিচ রিসোর্ট, সি-গাল, সি প্যালেস, রয়্যাল টিউলিপ, হেরিটেজ, কক্স টুডে ইত্যাদি। এগুলোর রুম ভাড়া পড়বে ৬০০০ থেকে ১২০০০ হাজার টাকার মধ্যে।
এক্সিকিউটিভ ক্যাটাগরির রিসোর্ট এর মধ্যে আছে হোটেল সি ক্রাউন, কোরাল রিফ, নিটোল রিসোর্ট, বিচ ভিউ রিসোর্ট, আইল্যান্ডিয়া, ইউনি রিসোর্ট ইত্যাদি। এগুলোর রুম প্রতি ভাড়া পড়বে ৩০০০ থেকে ৬০০০ টাকার মধ্যে।
স্ট্যান্ডার্ড ক্যাটাগরির প্রচুর রিসোর্ট রয়েছে কক্সবাজারে। এর মধ্যে রয়েছে সি ওয়ার্ল্ড, সেন্টমার্টিন রিসোর্ট, হানিমুন রিসোর্ট, ইকরা বিচ রিসোর্ট, হোয়াইট বিচ রিসোর্ট, নীলিমা রিসোর্ট ইত্যাদি। এসব হোটেলের ভাড়া পড়বে ৮০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে।
অফ সিজনে কক্সবাজারের হোটেল ভাড়া ক্ষেত্র বিশেষ অর্ধেকেরও কমে যায়। এসময় বড় হোটেলগুলোতেও ডিসকাউন্ট অফার করে। অফসিজনে কক্সবাজার পৌঁছে একটু দেখেশুনে দরদাম করে হোটেল নিতে পারলে কম খরচে ভালো হোটেল পাওয়া যায়। কক্সবাজার পৌঁছানোর পর যে কাজটি একদমই করবেন না, সেটি হলো অটোরিকশা বা সিএনজিওয়ালার পরামর্শ মেনে কোনো হোটেল নেওয়া। এতে আপনার হোটেল ভাড়া নিশ্চিত বেশি পড়বে। কারণ হোটেল থেকে সিএনজিওয়ালা কমিশন নেয়। এছাড়া মেইন বিচ থেকে যতটা দূরে হোটেলের অবস্থান হবে, রুম ভাড়াও তত কম পড়বে। কক্সবাজারের প্রত্যেকটা হোটেলের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ রয়েছে। আপনি অগ্রিম বুকিং দিতে চাইলে সেগুলোতে যোগাযোগ করতে পারেন।
ফ্যামিলি নিয়ে কক্সবাজার যারা যাবেন, পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি হলে চাইলে ফ্ল্যাটও ভাড়া নিতে পারেন৷ দুই তিন চার বেডরুমের ফ্ল্যাট আছে কক্সবাজারে। এসি, নন এসি ও ক্যাটাগরি ভেদে এগুলোর ভাড়া পড়বে ২৫০০ থেকে ১৫০০০ টাকা পর্যন্ত।
কক্সবাজার ভ্রমণে যা যা করবেন
সমুদ্র মনকে প্রশান্ত করে। বলা হয়ে থাকে সমুদ্রের সামনে গেলে মনের দুয়ারও সমুদ্রের মতো উন্মুক্ত হয়ে যায়। আপনি সকাল বিকাল সন্ধ্যায় হয়তো সমুদ্র পাড়ে যাবেন, নির্জনে বসে হয়তো ঢেউয়ের গর্জ শুনবেন বা এলোমেলো হেঁটে বেড়াবেন সারি বেধে থাকা ঝাউবনের ভিতর। তবে সবসময় একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে সেফটি ফার্স্ট। সমুদ্রে নামার আগে জোয়ার ভাটার সময় জেনে নিন। ভাটার সময় সমুদ্রে নামবেন না।
যদি বৃষ্টির দিনে কক্সবাজার যান, তাহলে বৃষ্টির পরের সময়টা বিচে যেতে চেষ্টা করবেন। এসময় একটা স্নিগ্ধ অনুভূতি হবে। আর জোৎস্ন্যা রাতে রুপালী আলোর নিচে বসে সমুদ্রের গর্জন আপনার মন ভালো করবে। ঢেউয়ের গর্জন, মৃদু বাতাসের সাথে জোছনার মাখামাখি আপনাকে বিমুগ্ধ করবে।
কক্সবাজারের কাছেই হিমছড়ি ঝর্ণা, ইনানী বিচ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, রামু বৌদ্ধ বিহার ও সেন্টমার্টিন এর মতো পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। আপনি সময় সুযোগ ও সুবিধামতো এগুলো থেকেও বেড়িয়ে আসতে পারেন। ভ্রমণের আনন্দময় মুহূর্তগুলো ছবি তুলে স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে চান সবাই। চাইলে বিচ ফটোগ্রাফার দিয়েও আপনি ছবি তুলতে পারবেন। এছাড়া স্পিডবোট রাইড, প্যারাগ্লাইডিং সহ বিভিন্ন এক্টিভিটিজের সুযোগ আছে কক্সবাজারে।
কি খাবেন – কোথায় খাবেন
কক্সবাজারে প্রায় সব হোটেলেরই নিজস্ব খাবারের ব্যবস্থা আছে। এর বাইরেও বিচের আশেপাশে ও মেইনরোডে অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট পাবেন। এর মধ্যে রোদেলা, ধানসিড়ি, পৌউষি, ঝাউবন ইত্যাদি উল্লেখ করা যায়। খাবারের দাম পড়বে প্রতিবেলা ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। যেহেতু সমুদ্র পাড়ের শহরে গিয়েছেন সামুদ্রিক মাছ চেখে দেখতে ভুলবেন না। প্রচুর সামুদ্রিক মাছের আইটেম আছে মেনু হিসেবে এসব রেস্টুরেন্টে। আর সন্ধ্যার পর বিচের আশেপাশে ছাপড়া রেস্টুরেন্টগুলোয় স্কুইড, কাঁকড়া সহ বিভিন্ন প্রকার সামুদ্রিক তাজা মাছ পাবেন। আপনি তাজা মাছ বাছাই করার পর, ওগুলো আপনার সামনেই ফ্রাই করে দিবে।
কক্সবাজার ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা
*সমুদ্রে নামার সময় জোয়ার ভাটার সময় জেনে নিন। ভাটার সময় সমুদ্রে নামবেন না।
*কোনোকিছু খাবার আগে অবশ্যই খাবারের দাম জেনে নিবেন।
*রিকশা বা অটোরিকশায় উঠার আগে ভালোমতো দরদাম করে নিবেন।
*অফসিজনে গেলে হোটেল ভাড়া কম পড়বে। ঈদ পুজো বা এরকম টানা সরকারি ছুটির সময়ে কক্সবাজার না যাওয়াই ভালো। তখন অনেক বেশি ভিড় হয় বলে সমুদ্র উপভোগ করতে পারবেন না। খরচও অনেক বেশি হবে।
*ইনানী গেলে খালি পায়ে হাঁটা যাবেনা। কারণ প্রবাল অনেক ধারালো হয়।
*বিচে অপচনশীল কোনোকিছু ফেলবেন না। শুধু বিচে নয় এমনকি আপনার শহরেও ফেলবেন না। এটা আপনার ব্যক্তিত্বকে রিপ্রেজেন্ট করে।
*যেকোনো সহযোগিতার জন্য টুরিস্ট পুলিশের সাহায্য নিন।
মহামায়া লেক (Mohamaya Lake) চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ একটি কৃত্রিম হ্রদ। ১১ বর্গ কিলোমিটার এর এই লেকের অবস্থান মিরসরাইয়ের ঠাকুরদীঘি ইউনিয়নে। বিস্তীর্ণ লেকের মধ্যে ডুবে আছে অনেকগুলো পাহাড়, আছে পাহাড়ি ঝর্ণা। টলটলে পানি আর সবুজ প্রকৃতির মাঝে নৌকা নিয়ে এসব পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে ঘুরে বেড়ানো যায়। কায়াকিং এর ব্যাবস্থাও আছে এই লেকে। রাতে থাকতে চাইলে এখানে ক্যাম্পিং করা যাবে। মহামায়া লেক মূলত একটি রাবার ড্যাম এর জন্য সৃষ্টি হয়েছে। লেকটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে আছে।
কিভাবে যাবেন মহামায়া লেক
মহামায়া লেক যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ঠাকুরদীঘি বাজারে আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে আপনি ঠাকুরদীঘি আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে মিরসরাই এর ঠাকুরদীঘি বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে ঠাকুরদীঘি পর্যন্ত যেতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। বাস ভাড়া মান ভেদে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।
ট্রেনে মহামায়া লেক
ঢাকা থেকে ঠাকুরদীঘির সরাসরি কোনো ট্রেন নেই। তবে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী ইস্টিশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই ঠাকুরদীঘি বাজার যেতে পারবেন। মহিপাল থেকে ঠাকুরদীঘির বাস ভাড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর ঢাকা থেকে ফেনীর ট্রেন ভাড়া আসনভেদে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।
যারা সিলেট থেকে আসবেন তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একই ভাবে মহিপাল হয়ে ঠাকুরদীঘি বাজারে আসা যাবে। আর চট্টগ্রাম থেকে আসতে চাইলে চট্টগ্রামের অলংকার বা সিটি গেইট থেকে ফেনী বা বারৈয়ারহাট এর বাসে উঠলেই হবে। বারৈয়ারহাট এর সরাসরি চয়েস বাস আছে। ভাড়া ৮০ টাকা।
ঠাকুরদীঘি বাজারে নেমে সিএনজিতে করে মহামায়া ইকো পার্ক এ আসা যাবে। ইকো পার্ক এর ভিতরেই মহামায়া লেক। লোকাল সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ১৫/২০ টাকা। আর রিজার্ভ নিলে খরচ পড়বে ৮০ থেকে ১২০ টাকা।
মহামায়া লেকে কায়াকিং
মহামায়া লেকে কায়াকিং করার ব্যবস্থা আছে। এক কায়াক বোটে ২ জন বসতে পারবেন। ঘন্টাপ্রতি কায়াক ভাড়া ৩০০ টাকা। আধা ঘন্টার জন্য ২০০ টাকা। স্টুডেন্টদের জন্য ডিসকাউন্ট অফার করে তারা। স্টুডেন্টরা আধা ঘন্টার ভাড়াতেই এক ঘন্টা কায়াকিং এর সুযোগ পেয়ে থাকে। কায়াকিং ছাড়াও এখানে ইঞ্জিন বোটে ঘুরতে পারবেন আপনি। ১০ জন বসার মতো একটা ইঞ্জিন বোটের ভাড়া ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা। ইঞ্জিন নৌকা আপনাকে পুরো মহামায়া লেক ঘুরে দেখাবে।
কোথায় থাকবেন
থাকার জন্য ঠাকুরদীঘি বা নিকটস্থ বারৈয়ারহাট বাজারে কোনো হোটেল নাই। থাকতে চাইলে সেখানে ক্যাম্পিং করতে পারবেন। অথবা থাকার হোটেলের জন্য আপনাকে যেতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। সীতাকুন্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। ঠাকুরদীঘি বাজার থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৬০ কিলোমিটারের মতো।
কোথায় খাবেন
মহামায়া লেক এর আশেপাশে কোনো খাবার দোকান নাই। ঘুরতে গেলে আপনাকে খাবার নিয়ে যেতে হবে। ঠাকুরদীঘি বাজারে কিছু খাবারের দোকান পাবেন। তবে ভালো মানের খাবারের জন্য আপনাকে আসতে হবে বারৈয়ারহাট বাজারে। এখানে ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে দুপুরের খাবার খেতে পারবেন। মেনু হিসেবে ভাত মাছ মাংস ভর্তা ইত্যাদি পাওয়া যাবে।
কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে অনেক দর্শনীয় স্থান আছে। মহামায়া লেক ভ্রমণে গেলে একইদিন নিচের যেকোনো একটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর। মহামায়ার একদম কাছাকাছি আছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা ও কমলদহ ঝর্ণা। বিশ কিলোমিটার দূরের সীতাকুন্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত কিংবা চন্দ্রনাথ পাহাড়ও চাইলে একই দিন কাভার করতে পারবেন। যেতে পারেন সীতাকুন্ড ইকোপার্ক। যার ভিতরে আছে সুপ্তধারা ও সহস্রধারা নামে মায়াবী দুইটা ঝর্ণা। জয়েন করুন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার ফেসবুক গ্রুপ Green Belt The Travelers এ।
এই মুহুর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য হচ্ছে সাজেক ভ্যালি (Sajek Valley)। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফিট উচ্চতায় এর অবস্থান। সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে আপনাকে খাগড়াছড়ি হয়ে যেতে হবে। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭৩ কিঃমিঃ আর দীঘিনালা থেকে ৪০ কিঃমিঃ এর মতো। ভ্রমণ পিপাসুদের অনেকে সাজেক ভ্যালিকে বাংলার ভূস্বর্গ নামে অভিহিত করেন। চারপাশে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো বিস্তীর্ণ পাহাড় সারি, আর তুলোর মতো মেঘ, এর মধ্যেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সাজেক ভ্যালি। প্রকৃতি এখানে সকাল বিকাল রঙ বদলায়। দিনের প্রতিটি মুহুর্তে আপনি সাজেকের আলাদা রূপ দেখতে পাবেন। সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ সহ বিস্তারিত গাইডলাইন থাকবে এই আর্টিকেলে।
কী কী দেখবেন সাজেক ভ্যালিতে
প্রকৃতিপ্রেমী হলে আপনার কাছে পুরো সাজেক ভ্যালিটাই দর্শনীয় মনে হবে। তারপরও বলতে হয় পর্যটকদের কাছে সবচয়ে আকর্ষণীয় স্থান কংলাক পাড়া। এছাড়া হ্যালিপ্যাড, রুইলুই পাড়া, রক গার্ডেন, লুসাই ভিলেজ উল্লেখযোগ্য।
কংলাক হলো সাজেকের সবচেয়ে উঁচু স্থান। এটি লুসাই অধ্যুষিত পাড়া। কংলাকের চূড়া থেকে আপনি পুরো সাজেক ভ্যালি এক নজরে দেখতে পাবেন। ভাগ্য ভালো হলে দিগন্তে দেখা পাবেন রংধনুর। এই অপার সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য কংলাকের চূড়া পর্যন্ত উঠতে আপনাকে ৪০ মিনিটের মতো ট্রেকিং করতে হবে। বিকেল বেলা কংলাক ভ্রমণের আদর্শ সময়। আপনি চাইলে কংলাকের চূড়ায় দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখতে পারেন। এটি আপনার ভ্রমণ জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য স্মৃতি হয়ে থাকবে।
সাজেকের নিচে একটি ঝর্ণা আছে। প্রচলিত ভাষায় এটি কমলক ঝর্ণা নামে পরিচিত। এর মূল নাম পিদাম তৈসা বা সিকাম তৈসা। রুইলুক পাড়া থেকে এখানে ট্রেকিং করে যেতে চাইলে আসা যাওয়ায় ৪ ঘন্টার মতো সময় লাগবে।
সূর্যাস্তের পরও সাজেক তার রূপবদল থামাবে না। সন্ধ্যার পরপরই আকাশ ভরা নক্ষত্রের দেখা মিলবে। রাত যত বাড়বে তার রূপও তত গাঢ় হবে। দূষণমুক্ত পরিবেশ ও ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এখানে প্রতিদিনই রাতের আকাশে তারার মেলা বসে। জোছনারাতে প্রকৃতি হয়ে উঠে আরো স্বর্গীয়! খোলা মাঠে বাতাসে গা এলিয়ে দিয়ে রাতের আকাশ দেখতে চাইলে হ্যালিপ্যাড সবচেয়ে চমৎকার জায়গা।
সাজেকে মেঘ দেখার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় ভোরবেলা। সারারাত জেগে থেকে যদি আপনি ভোর মিস করেন, তাহলে আপনি অনেক কিছুই মিস করবেন। ভোর ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সবচেয়ে ফ্রেশ মেঘ দেখা যায়। যেন হাত বাড়ালেই ছুঁতে পারেন। মেঘের গায়ে যখন সূর্যের আলো পড়তে শুরু করে তখন অবর্ণনীয় এক সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়। এইসময় প্রতি ১০ মিনিটে একবার করে প্রকৃতির রঙ বদলে যেতে দেখবেন। তাই খেয়াল রাখবেন সূর্যোদয় দেখা যেন কোনোভাবেই মিস না হয়। শুধু মেঘের গায়ে সূর্যোদয় দেখার জন্যই সাজেক ভ্যালি আসা যায়।
সাজেক থেকে ফেরার সময় আপনার যাত্রাপথেই পড়বে হাজাছড়া ঝর্ণা। সুযোগ থাকলে ঢুঁ মেরে আসতে ভুলবেন না।
সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
সত্যি বলতে প্রতিটি মৌসুমে সাজেকের আলাদা আলাদা সৌন্দর্য আপনার চোখে পড়বে। শীতের সাজেক একরকমতো বর্ষায় সম্পূর্ণ অন্যরকম। তাই ভ্রমণপিপাসুরা বছরজুড়ে সাজেকে ছুটে যায়। তবে বর্ষার শুরু থেকে শীতের শুরু পর্যন্ত, অর্থাৎ মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রকৃতি সবচেয়ে সতেজ থাকে বলে এসময় সাজেক বেশি সুন্দর। তখন সারাদিন মেঘ ভেসে বেড়ায় এখানে সেখানে। মেঘ এসে আপনাকে ঢেকে দিতে পারে যখন তখন।
সাজেক ভ্যালি যাওয়ার উপায়
সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটি জেলায় হলেও খাগড়াছড়ি থেকে যাতায়াত ব্যবস্থা অনেক সহজ। তাই দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে আপনাকে প্রথমে খাগড়াছড়ি আসতে হবে। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির প্রধান বাস শান্তি পরিবহন। এছাড়া সৌদিয়া, শ্যামলী, ঈগল, হানিফ, ডলফিন ইত্যাদি পরিবহনের বাস আছে। নন এসি বাসে সব পরিবহনের ভাড়া ৫২০ টাকা। এসি বাসের মধ্যে রয়েছে শান্তি, হানিফ, ঈগল ও সেন্টমার্টিন পরিবহনের বাস। এসি বাস ভাড়া ৯৫০ থেকে ১২৫০ টাকা। ঢাকার গাবতলী, কলাবাগান, ফকিরাপুল ও আরামবাগ থেকে এসব বাস ছাড়ে। লাস্ট বাস রাত এগারোটার মধ্যে ছেড়ে যায়। সরকারী ছুটির দিন বা বৃহস্পতিবার শুক্রবার যেতে চাইলে আগে থেকে টিকিট কেটে রাখলে ঝামেলা এড়ানো যায়। সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ বাস থেকে শুরু হবে।
খাগড়াছড়ি থেকে জিপে সাজেক ভ্যালি
খাগড়াছড়ির থেকে সাজেক ভ্যালি যাওয়ার জন্য কোনো লোকাল গাড়ি বা শেয়ার্ড জিপ নেই। আপনাকে গাড়ি রিজার্ভ করতে হবে। এক্ষেত্রে চান্দের গাড়ি অথবা মাহেন্দ্র জিপ প্রধাণ বাহন। আপ-ডাউন রিজার্ভ জিপ ভাড়া পড়বে ৮০০০ থেকে ১০০০০ টাকা। এক গাড়িতে সর্বোচ্চ ১২ জন বসার পরমিশন আছে।
আপনার টিমে সদস্য সংখ্যা কম হলে অন্য কারো সাথে জিপ শেয়ার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে খরচ কমবে। যদি শেয়ার করার মতো কাউকে না পান, তবে সিএনজি নিতে পারেন। সিএনজি ভাড়া পড়বে ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকার মতো। তবে সম্ভব হলে সিএনজিতে না যাওয়াই ভালো। তাছাড়া সিএনজিতে সাজেক পৌঁছাতে কখনো কখনো ৬ ঘন্টাও লেগে যায়। সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ এর অন্যতম খরচ হলো জিপ খরচ।
খাগড়াছড়ি জিপ সমিতির ভাড়ার নির্ধারিত তালিকা
আপনি যদি একা বা ২/৩ জন হন, তাহলে চেষ্টা করবেন অন্য কোনো গ্রুপের সাথে জয়েন করে ফেলতে। নিজে কোনো গ্রুপ ম্যানেজ করতে না পারলে জিপ সমিতির অফিসে গিয়ে বললেও হবে। তারাই আপনাকে কোনো গ্রুপের সাথে জযেন করিয়ে দিতে আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করবে।
আপনি খাগড়াছড়ি থেকে মোটর সাইকেল রিজার্ভ নিয়েও সাজেক ভ্যালি যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে আগে থেকে দরদাম করে নিবেন ভালোভাবে। আপনি যে বাহনই রিজার্ভ করেন না কেন, আগে থেকেই বলে নিবেন কোন কোন স্পট দেখতে চান।
এছাড়া আপনি যদি ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি দীঘিনালার বাসে উঠেন, তাহলে দীঘিনালা থেকেও আপনি সাজেকের জিপ পাবেন। খাগড়াছড়ি থেকে জিপে উঠলে সেটাও দীঘিনালা হয়েই যায়। খাগড়াছড়ি থেকে জিপে সাজেক যেতে ৩ ঘন্টার মতো সময় লাগে।
দীঘিনালার পরের আর্মি ক্যাম্প থেকে আমি স্কর্ট দিয়ে প্রত্যেকটা গাড়ি সাজেকে নিয়ে যায়। স্কর্ট ছাড়ে সকাল ৯ঃ৩০ মিনিট এবং দুপুর ২ঃ৩০ মিনিটে। অর্থাৎ সকাল ৯ঃ৩০ মিনিটের মধ্যে আপনি ওখানে উপস্থিত থাকতে না পারলে আপনাকে দুপুর ২ঃ৩০ মিনিটের স্কর্টে সাজেক যেতে হবে। দুপুরের স্কর্টেও যদি আপনি আর্মি ক্যাম্পে উপস্থিত না থাকতে পারেন, তাহলে আপনি ওইদিন আর সাজেক যেতে পারবেন না৷ পরদিনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর্মি স্কর্ট বাদে একা কোনো গাড়ির সাজেক যাওয়ার পারমিশন নেই। আবার একা জিপ বা সিএনজি নিয়ে গেলে আপনার সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ বেশি পড়বে।
সাজেক ভ্রমণে পাহাড়ি আঁকাবাতা এই পথের সৌন্দর্যের বর্ণনা দেওয়া অসম্ভব! রাস্তার প্রতিটি বাঁকে নতুন সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। যাওয়ার পথে জিপের এই জার্নিটাই স্মরণীয় হয়ে থাকবে অনেকদিন। যতক্ষণে সাজেক গিয়ে পৌঁছাবেন তার আগেই মনোরম পরিবেশ আর প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের জন্য আপনার ভ্রমণক্লান্তি অনেকটাই কেটে যাবে।
চট্টগ্রাম থেকে সাজেক ভ্রমণ
চট্টগ্রামের কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে বিআরটিসির এসি বাস ছাড়ে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে। দিনে এসি বাস অবশ্য মাত্র ৪টি। ভাড়া ২০০ টাকা। এছাড়া অক্সিজেন মোড় থেকে ১ ঘন্টা পরপর শান্তি পরিবহনের বাস আছে। ভাড়া ১৯০ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে বাসে খাগড়াছড়ি যেতে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা সময় লাগে।
রাঙ্গামাটি থেকে সাজেক ভ্রমণ
রাঙামাটি থেকে সাজেক ভ্রমণ করার জন্য সড়ক ও নৌপথে আলাদা রুট আছে। রিজার্ভ বাজার লঞ্চঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ১০টার মধ্যে বাঘাইছড়ির লঞ্চ ছাড়ে। যেতে ৫/৬ ঘন্টা সময় লাগে। ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা। এছাড়া রাঙামাটি বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৭ঃ৩০ মিনিটে বাস ছাড়ে। ২শ টাকা ভাড়া ও ৫/৬ ঘন্টা সময় লাগে। বাঘাইছড়ি থেকে মোটর সাইকেলে সাজেক যাওয়া যায়। আসা যাওয়া জনপ্রতি ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা। তবে সাজেক যেতে চাইলে রাঙামাটি হয়ে না যাওয়াই ভালো। এই পথে গেলে আপনার সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ বেশি হবে, সময়ও বেশি লাগবে।
সাজেকে থাকার রিসোর্ট
সাজেকে ছোট বড় মিলিয়ে বিভিন্ন কোয়ালিটির ১০০র মতো রিসোর্ট রয়েছে। এসব রিসোর্টে সর্বনিম্ন জনপ্রতি ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা ভাড়া পড়বে। শুক্রবার বা সরকারি ছুটিতে যেতে চাইলে কমপক্ষে ১৫/২০ দিন আগে রুম বুকিং করে রাখা ভালো। নইলে ভালো রিসোর্টে রুম পাওয়া যায়না সাধারণত। রিসোর্ট বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রিসোর্টের কোয়ালিটি ও অবস্থানকে প্রাধান্য দিবেন। ভিউ খুব একটা ইমপর্টেন্ট না। কারণ সব রিসোর্ট থেকেই কমবেশি ভিউ পাওয়া যায়। রিসোর্ট থেকে বের হলে ভিউতো আছেই।
রিসোর্টের অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কিছু রিসোর্ট আছে সাজেকের বাইরে। আবার কিছু রিসোর্ট এমন একটা অবস্থানে যেখান থেকে মূল পয়েন্টে আসতে অনেক বেশি সময় নষ্ট হবে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় রিসোর্টের ভিউ তুলনামূলক ভালো, কিন্তু ইন্টেরিয়র ও ওয়াশরুম বেশ জরাজীর্ণ। তাই রিসোর্ট বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ইন্টেরিয়র কোয়ালিটি ও লোকেশনকে প্রাধান্য দিন। সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ কিছুটা বাড়লেও রিসোর্ট এর ক্ষেত্রে কম্প্রোমাইজ না করাই ভালো।
সাজেকের উল্লেখযোগ্য কিছু রিসোর্ট ও কটেজ এর ফোন নাম্বার
রিসোর্ট রুংরাং: সাজেকের বেস্ট রিসোর্ট গুলোর মধ্যে একটি রিসোর্ট রুংরাং। রিসোর্টের বারান্দা থেকে দিগন্তজোড়া পাহাড়সারি ও মেঘ দেখতে পাবেন। এর অবস্থান আর্মি রিসোর্টের উল্টো পাশে প্রিমিয়াম লোকেশনে। এই রিসোর্টের ইন্টেরিয়র এবং ওয়াশরুম সাজেকের অন্যতম সেরা। রিসোর্টে কাপল ডাবল মিলিয়ে ৮টি রুম আছে। শুক্রবারে এর রুম ভাড়া পড়বে ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকার মতো। অন্যান্য দিন ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে রুম পাবেন। রুংরাংয়ের বুকিং নাম্বার 01869-649817, 01632-698158, 01869-649817। ফেসবুক পেজ: Resort RungRang
সাজেক রিসোর্ট: এই রিসোর্টটি বাংলাদেশ আর্মি পরিচালিত। রুম ভেদে এসি ও নন এসি রুমের ভাড়া পড়বে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো। সাজেক রিসোর্টের রয়েছে নিজস্ব রেস্টুরেন্ট। সেনাবাহিনী বা প্রথম সারির সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য এখানে ডিসকাউন্ট এর ব্যবস্থা রয়েছে। রুম বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন 01859-025694, 01847-070395 অথবা 01769-302370 নাম্বারে।
রুন্ময় রিসোর্ট (Runmoy Resort) : এই রিসোর্টের মোট ৫ টি রুম আছে। প্রতিটি রুমে সর্বোচ্চ ২ জন থাকার ব্যবস্থা আছে। ৬০০ টাকা বাড়তি পরিশোধ করলে রুমে অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করা হয়। নিচতলার রুম ভাড়া ৪৪৫০ টাকা, উপরের তলার রুম ভাড়া ৪৯৫০ টাকা। বুকিংয়ের জন্য ফোন করতে পারেন 0186547688 নাম্বারে।
মেঘ মাচাং (Megh Machang): ব্র্যান্ডিং বিবেচনায় এটি সাজেকের অন্যতম একটি রিসোর্ট। এর ভিউ সাজেকের অন্যতম সেরা। মেঘ মাচাংয়ের রুম রয়েছে ৫টি। রুম ভাড়া ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন 01822-168877 নাম্বারে।
মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট: সাজেকের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন রিসোর্ট। এই রিসোর্টে রয়েছে ৪টি রুম। রুম ভাড়া পড়বে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। বুকিং নাম্বার 01884-208060
জুমঘর রিসোর্ট: এটি সাজেকের আরেকটি ভালো রিসোর্ট। এর রুম ভাড়া পড়বে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন 01884-208060 নাম্বারে।
কম খরচের কিছু রিসোর্ট
কম খরচের রিসোর্টগুলো আপনার সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ কমাতে সাহায্য করবে। যারা বাজেট ফ্রেন্ডলি ভ্রমণ করতে চান তারা এই রিসোর্টগুলো দেখতে পারেন।
আলো রিসোর্ট: কম খরচে থাকার জন্য এটি একটি ভালো রিসোর্ট। কোনো ভিউ নাই। এই রিসোর্টে রুম রয়েছে ৬টি। রুম ভাড়া পড়বে প্রতিরাতের জন্য ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা। বুকিং দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন 01841-000645 নাম্বারে।
লুসাই কটেজ (TGB Lushai Cottage): কাপল ডাবল সব রকম রুম আছে এই রিসোর্টে। সাদামাটা ভালো একটি রিসোর্ট। রুম ভাড়া পড়বে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকার মতো। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন 01634-198005 নাম্বারে।
মেঘের ঘর রিসোর্ট: কম খরচে থাকার জন্য এটি সাজেকের আরেকটি ভালো রিসোর্ট। ৮টি রুম রয়েছে এই রিসোর্টে। এখানে রুম ভাড়া পড়বে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে। এর বেশি দিয়ে থাকা ঠিক হবেনা। রুম বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন 01842605788 নাম্বারে।
হাফং তং: এটিও বাজেটের মধ্যে একটি রিসোর্ট। এই রিসোর্টে ৬টি রুম রয়েছে। রুম ভাড়া পড়বে। ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন 01869-649817 নাম্বারে।
পাহাড়িকা রিসোর্ট: কম বাজেটের মধ্যে এটি আরেকটি ভালো রিসোর্ট। এই রিসোর্টে ১২টির মতো রুম রয়েছে। রুম ভাড়া পড়বে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এর বেশি চাইলে না নেওয়াই ভালো। বুকিং নাম্বার 01724-658766, 01871-771777
আদিবাসী ঘর: আপনি ব্যাকপ্যাকার হলে কম খরচে আদিবাসীদের ঘরে থাকতে পারেন। জনপ্রতি ১৫০ – ৩০০ টাকার মধ্যে হয়ে যাবে। ফ্যামিলি নিয়ে থাকার জন্য আদিবাসী ঘর ভালো চয়েস হবেনা। তবে বন্ধু বান্ধব মিলে চাইলে থাকা যায়।
সাজেকে খাওয়ার ব্যবস্থা
সাজেকে খাওয়ার জন্য অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট আছে। এছাড়া অনেক রিসোর্টের নিজস্ব খাবার ব্যবস্থা রযেছে। জনপ্রতি প্রতিবেলা খাবার খরচ পড়বে ১২০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে। খাবারের মেনু হিসেবে পাবেন ভাত, মুরগী, আলুভর্তা, সবজি ইত্যাদি। রাতে বারকিউর ব্যবস্থা রয়েছে অনেকগুলো রেস্টুরেন্টে। এছাড়া ভালো মানের রিসোর্টগুলোতে নিজস্ব চুলায় বারবিকিউর ব্যবস্থা আছে। সাজেকে পেপে কলা আনারস সহ অনেক সুস্বাদু পাহাড়ি ফল পাবেন বেশ সস্তায়। খেয়ে পরখ করতে ভুলবেন না।
সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ
ভ্রমণের সময় সাজেক ভ্যালিতে থাকা খাবার খরচ কিছুটা বেশি হয়। তাই নিজেরা গ্রুপ করে গেলে খরচ কমানো যেতে পারে। তারপরও সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া যাক। জিপ ভাড়া ৮ থেকে ১১ হাজার টাকা। আপনি কী কী ঘুরবেন তার উপর জিপ ভাড়া নির্ভর করে। এক জিপে দশ থেকে বারো জন বসা যায়। খাবার জন্য প্রতি বেলা খরচ হবে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। বিভিন্ন এন্ট্রি ফি ও জিপ পার্কিং চার্জ বাবদ খরচ হতে পারে জনপ্রতি ১৫০ টাকা। আর কটেজ ভাড়া গড়ে জনপ্রতি ৫০০ টাকা। মনে রাখা দরকার বর্ষাকালে সাজেক ভ্রমণ করলে খরচ কম হয় তুলনামূক। তখন মেঘও বেশি দেখা যায়।
সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ টিপস
*শুধুমাত্র রবি ও এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক রয়েছে সাজেক ভ্যালিতে। তাই রবি বা এয়ারটেল সাথে রাখার চেষ্টা করুন।
* সাজেকে বিদ্যুত নেই। সোলার ও জেনারেটরে পাওয়ার সাপ্লাই করে রিসোর্টগুলো। তাই পাওয়ার ব্যাংক সাথে রাখুন।
*সাজেকের যাত্রাপথে জিপের ছাদে উঠবেন না। এটি করতে আর্মির পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আছে। তাছাড়া পাহাড়ি পথে জিপের ছাদে উঠা বিপদজনক।
* আদিবাসীদের ছবি তোলার ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে ভুলবেন না। এটা বেসিক ম্যানার। আপনার ব্যাক্তিত্বকে রিপ্রেজেন্ট করে।
*পাহাড়িদের কালচারের প্রতি সম্মান দেখান। এমন কিছু বলবেন না, যেটি অন্যকেউ আপনাকে বললে আপনারও খারাপ লাগতো।
* যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলা আপনার ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। সেটি শুধু পাহাড়ে নয়, এমনকি শহরেও।
অনেকেই ঝামেলা এড়ানোর জন্য ট্রাভেল এজেন্সির সাথে ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। তারা দেশের সবচেয়ে ফিমেইল ফ্রেন্ডলি ট্যুর অর্গানাইজার গ্রিন বেল্ট এরসাজেক ট্যুর প্যাকেজটিদেখতে পারেন। এতে আপনার সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ কিছুটা বেশি হলেও ঝামেলাহীন ভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন।
ঢাকার আশেপাশে ডে ট্যুরের জন্য চমৎকার একটি স্থান কেরানীগঞ্জ এর সারিঘাট। ঢাকা শহরের যান্ত্রিকতা থেকে সরে কিছুটা প্রাকৃতিক ছোঁয়ার জন্য সারিঘাট থেকে ঘুরে আসা যায়। সবুজে ঘেরা মনোরম পরিবেশ, নদী, খোলা জায়গা, কাশবন আর সাথে নৌকা ভ্রমণ। এখানকার নিরিবিলি শান্ত পরিবেশে একটা বিকেল অনায়াসেই কাটিয়ে দেওয়া যায়। সারিঘাট গিয়ে হারিয়ে যাবেন প্রকৃতির মাঝে। ঢাকায় যারা বসবাস করেন, তারা ঢাকার কাছাকাছি একটা দিন বেড়িয়ে আসার জন্য সারিঘাট কে বেছে নিতে পারেন।
সারিঘাট কিভাবে যাবেন
সারিঘাট এর নাম শুনলে প্রথমে আমাদের মাথায় আসে সিলেটের লালাখাল এর সারিঘাটের কথা। কিন্তু ঢাকার কাছে কেরানীগঞ্জের সারিঘাট যাওয়ার জন্য ঢাকার যে কোন জায়গা প্রথমে যাত্রাবাড়ী আসতে হবে। সেখান থেকে জুরাইন রেল গেইট। বাস বা লেগুনাতে ভাড়া ৮ টা। জুরাইন রেল গেইট থেকে পোস্তগলা ব্রিজ পার হতে হবে। পোস্তাগলা ব্রিজ পার হলেই সারিঘাট যাওয়ার অটোরিক্সা বা সিএনজি পেয়ে যাবেন। লোকাল সিএনজিতে ভাড়া জনপ্রতি ১০ টাকা।
লোকাল সিএনজির ঝামেলায় যেতে না চাইলে জুরাইন রেল গেইট থেকে সিএনজি রিজার্ভ নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে ১২০ টাকা। একসাথে ৪/৫ জন গেলে জুরাইন বা পোস্তগোলা থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে যাওয়াই ভালো। ফেরার পথেও ওখান থেকে সিএনজি পাওয়া যাবে।
কখন যাবেন
সারাবছরই সারিঘাট যাওয়া যায়। সারিঘাট ভ্রমণের জন্য একটা বিকেলই যথেষ্ট। সাধারণত শুক্রবার বিকালে এখানে প্রচুর লোক সমাগম হয়। ভীড় পছন্দ না করলে শুক্রবার বিকেলে না যাওয়াই ভালো। কেউ চাইলে সারিঘাট এ ক্যাম্পিং করতে পারবেন। সেখানেই ক্যাম্পিংয়ের ব্যবস্থা আছে। তবে ক্যাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে গ্রুপ করে যাওয়াই ভালো।
কি দেখবেন সারিঘাট
সারিঘাট এর বিশাল সবুজ প্রকৃতি, নদী, গাছপালা, খোলা জায়গা এসব আপনাকে প্রশান্তি দিবে। নদীতে কায়াকিং ও নৌকা ভ্রমণের সুযোগ আছে। কেউ চাইলে কায়াকিং ও নৌকা ভ্রমণও করতে পারবেন। গোসলও করা যাবে এখানে। নদীর পানি যথেষ্ট পরিষ্কার। কায়াকিং এর খরচ পড়বে জনপ্রতি ঘন্টায় ১৫০ টাকা, ৩০ মিনিটের জন্য ৭৫ টাকা। নৌকা ভ্রমণ ১০০-১৫০ টাকা। তবে আগে থেকে দরদাম করে নেয়াই ভালো। কায়াক হচ্ছে এক ধরণের ছোট ফাইবার বোট। বৈঠা বা লগি ব্যবহার করে এটি চালানো যায়। কায়াকে করে ভেসে বেড়াতে পারবেন পানি দেখতে দেখতে। এর জন্য কোনো ধরণের অগ্রিম প্রশিক্ষণের দকরকার হয়না। শুধুমাত্র ডানে ও বামে নেওয়ার কৌশল রপ্ত করলেই হবে।
এছাড়া সারিঘাট এর খোলা জায়গার নির্জনতায় অনেকটা সময় কাটিয়ে দিতে পারেন। এখানে কিছু ঝুপড়ি দোকান আছে। হালকা খাবার দাবারের জন্য এই দোকানগুলোই যথেষ্ট। সেখানে দুপুরের খাবার দাবারও পাওয়া যাবে। দুপুরের খাবারের ক্ষেত্রে খরচ হবে জনপ্রতি খরচ হবে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। খাবারের মেনু হিসেবে থাকবে ভাত, ভর্তা, মাছ, মাংস, সবজি, ডাল।
সতর্কতা
সাঁতার না জানলে কায়াকিং এর সময় অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরে নিবেন। এর জন্য কোনো অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে না।কায়াকিং শুরুর আগে এবং শেষে নিজের ব্যাক্তিগত জিনিসপত্র সামলে রাখবেন। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে অতিরিক্ত লোক সমাগম এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন, চিপস ও বিরিয়ানির প্যাকেট বা খাবারের উচ্ছিষ্টাংশ ফেলে পরিবেশ নষ্ট করবেন না। শুধু ভ্রমণে গিয়ে নয়, প্রত্যাহিক জীবনেও যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা থেকে বিরত থাকুন।
ঢাকার আশেপাশে ডে ট্যুর
ঢাকার কাছাকাছি ডে ট্যুর এর জন্য রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো দোহারের মৈনট ঘাট, সাভারের সাদুল্লাপুর এর গোলাপগ্রাম, নুহাশ পল্লী, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, বেলাই বিল, নারায়ণগঞ্জ এর চৌদ্দার চর, মায়াদ্বীপ, পানাম নগরী ইত্যাদি। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে দেখুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল ফেসবুক ট্রাভেল গ্রুপ Green Belt The Travelers ‘এ। সারিঘাট সম্পর্কে আরো বিস্তারিত কোনো তথ্য দিতে চাইলে আমাদেরকে জানান।
ঢাকার কাছেই, সবুজেঘেরা কোলাহলমুক্ত পরিবেশের জন্য ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান বিখ্যাত। দেশে যে কয়টি প্রাকৃতিক বনভূমি রয়েছে তার মধ্যে মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় একটি। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে একসময় বাঘ, কালো চিতা, চিতাবাঘ, মেঘাবাঘ, হাতি, ময়ূর, মায়া হরিণ ও সম্বর হরিণ দেখা যেত। এ বনে এক সময় খেকশিয়াল, বাঘডাস, বেজি, কাঠবিড়ালী, গুঁইসাপ আর কয়েক প্রজাতির সাপ দেখা যেত। বর্তমানে সে সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। বন বিভাগ এই বনে অজগর, ময়ূর, হরিণ ও মেছোবাঘ ছেড়েছে। উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের দিক দিয়েও এ বন বিশেষভাবে আলোচিত।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে উত্তরে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে গাজীপুর জেলার গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর উপজেলায় এই উদ্যানটি অবস্থিত। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে এই বনের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী যে কোনো বাসে চড়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ফটকের সামনেই নামা যায়। এছাড়া ঢাকার গুলিস্তান থেকে প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি বাস চলে এই পথে। ন্যাশনাল পার্কের ৩ নাম্বার গেটে নামার কথা বললে সরাসরি ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের প্রধান গেটে নামতে পারবেন। বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। নিজস্ব বাহনে গেলে জয়দেবপুর চৌরাস্তা ছাড়িয়ে ময়মনসিংহের দিকে কিছু দূর চলতে হাতের ডানে পড়বে এর প্রধান প্রবেশপথ।
বনের ভেতরে আছে ৩১টি বনভোজন কেন্দ্র। কেন্দ্রগুলোর নাম আনন্দ, কাঞ্চন, সোনালু, অবকাশ, অবসর, বিনোদন ইত্যাদি। পিকনিক বা পারিবারিকভাবে দলবদ্ধ ভ্রমণের জন্য ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানটি একটি সুন্দরতম স্থান।
কোথায় থাকবেন?
ঢাকা থেকে ভাওয়াল উদ্যানে সারাদিন ঘুরে বিকাল বা সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসা যায়। চাইলে অনুমতি ও বুকিং সাপেক্ষে উদ্যানের ভেতর প্রাকৃতিক পরিবেশে দিন অতিবাহিত করা যায়। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ভেতরে আছে ১৯টি বিশ্রামাগার ও কটেজ। এগুলোর নামও বেশ মজার। চম্পা, জেসমিন, অর্কিড, রজনীগন্ধা, শাপলা, মালঞ্চ, গোলাপ, মাধবী, বকুল, জুঁই, চামেলী, বেলি, আনন্দ-১, আনন্দ-২, আনন্দ -৩, শ্রান্তি ও কেয়া। খুবই চমৎকার ডিজাইলের কটেজ ও রেস্ট হাউজগুলো আগে থেকে বুক করে যেতে হয়। রেস্ট হাউজেই খাবারের ব্যবস্থা আছে। সেটার জন্যও আগে থেকে বলে রাখা লাগে। এসব গেস্ট হাউজে রাত্রী যাপনের অনুমতি নেই।
পুরো পিকনিক স্পট বা রেস্ট হাউজ ভাড়া নেওয়ার জন্য বন বিভাগের মহাখালি কার্যালয় থেকে অগ্রিম বুকিং দিতে হয়। এছাড়া ভাওয়াল গড় থেকেই সামান্য দূরে অবস্থিত রাজেন্দ্রপুর জাতীয় উদ্যানের রেঞ্জ কার্যালয় থেকেও নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের বুকিং নেওয়া যায়। মোবাইল: 01781-733000, 01713-575055
এছাড়াও এছাড়া রাতে থাকার জন্য ভাওয়াল গড়ের কাছে আছে সারাহ, সোহাগ পল্লী, স্প্রিং ভ্যালী, ছুটি, নক্ষত্রবাড়ি এবং জল ও জঙ্গলের কাব্যের মতো বেশ কিছু বেসরকারি রিসোর্ট। রিসোর্টগুলোতে যেতে চাইলে আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখা ভাল।
ভ্রমণ টিপস সতর্কতা
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান এর ভেতর নিজেদের সাথে যাওয়া ছোট শিশুদের নজরের ভেতর রাখবেন। বিশেষ করে ওয়াচ টাওয়ারে বা জঙ্গলে হাটার সময়। ভ্রমণের সময় কোন আবর্জনা ময়লা জঙ্গলে ফেলবেন না। উদ্যানে মাছ বা পাখি শিকার বা উচ্চ শব্দ করলে জরিমানা সহ শাস্তির মুখে পড়তে পারেন। এছাড়া উদ্যানের সিসিটিভি রেঞ্জের বাইরে যাওয়াটা নিরাপদ নয় একদমই।
ডে ট্যুর এর অন্যান্য স্থান
ঢাকার আশেপাশে ডে ট্যুর এর জন্য অনেকগুলো চমৎকার জায়গা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মৈনট ঘাট, মায়াদ্বীপ, সারিঘাট, বেলাই বিল, ছুটি রিসোর্ট, গোলাপ গ্রাম সহ অনেকগুলো স্থান রয়েছে। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে পড়ুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল Green Belt The Travelers এ
বিল বা নৌকা ভ্রমণ যাদের পছন্দ, তাদের কাছে গাজীপুরের বেলাই বিল হতে পারে ডে ট্যুর এর জন্য চমৎকার একটি জায়গা। বেলাই বিল ভ্রমণ এর উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। চেলাই নদীর সাথে বেলাই বিল। চেলাই নদী সংলগ্ন বাড়িয়া, ব্রাহ্মণগাঁও, বক্তারপুর ও বামচিনি মৌজা গ্রাম ঘেরা একটি মনোমুগ্ধকর বিলের নাম বেলাই বিল। কথিত আছে ভাওয়ালের ভূস্বামী ঘটেশ্বর ঘোষ ৮০ টি খাল কেটে চেলাই নদীর পানি নিঃশেষ করে ফেলেন। তারপরই এটি প্রকাণ্ড বিলে পরিণত হয়। বর্ষায় জেলেরা বিলের চারপাশে মাছ ধরার জন্য ডাঙ্গি খনন করে। নদী ও বিলের অপূর্ব সংমিশ্রণ এই বিলটি গাজীপুরের কানাইয়া বাজার নামক এলাকায় অবস্থিত।
খরস্রোতা চেলাই নদীর কারণে বিলটিও খরস্রোতা রূপে বিরাজমান ছিল। বর্ষা মৌসুমে জেলেরা বিলের চারপাশে মাছ ধরার জন্য ডাঙ্গি খনন করে। আর শুষ্ক মৌসুমে বিলটি হয়ে ওঠে একফসলি জমি। তাতে চাষ হয় বোরো ধান।
কিভাবে যাবেন বেলাই বিল
রাজধানী ঢাকার যেকোন স্থান থেকে বাস বা যেকোন সুবিধাজনক পরিবহণে গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড অথবা গাজীপুর শিববাড়ি নেমে সেখান থেকে রিকশা বা সিএনজি দিয়ে কানাইয়া বাজার আসতে হবে। চাইলে টেম্পুতেও কানাইয়া বাজার যেতে পারেন, ভাড়া নেবে ১০ টাকা করে। কানাইয়া বাজার ঘাটে বেলাই বিল ভ্রমণের জন্য নৌকা ভাড়া পাবেন। কানাইয়া বাজারে নেমেই সামনে ব্রিজ আছে, ব্রিজ পার হয়েই নদীতে বাধা নৌকা ঠিক করে উঠে পড়ুন। দরদাম করে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারবেন উন্মুক্ত বিলে। এখানে ইঞ্জিন চালিত আর ডিঙ্গি নৌকা দুটোই পাওয়া যায়। তাড়া থাকলে ইঞ্জিন নৌকা, আর হাতে সময় থাকলে হাতে বাওয়া ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে নিন। মাঝির সাথে কথা বলে নিজেই সেই নৌকা বেয়ে দেখতে পারেন, ভিন্ন একটা অভিজ্ঞতা হবে সন্দেহ নেই। চাইলে নৌকা সারাদিনের জন্য ভাড়া করতে পারবেন।
বেলাই বিল ভ্রমণে কি দেখবেন?
প্রায় ৮ বর্গমাইল জুড়ে বিস্তৃত এই বিলের অনেক স্থানেই প্রায় সারা বছর পানি থাকে। তবে বেলাই বিলের প্রকৃত সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে বর্ষা কালের বিকল্প নেই। বিলে সারাবছর পানি না থাকলেও বর্ষায় দ্বিগুণ সৌন্দর্য নিয়ে হাজির হয়। সারা বিল জুড়ে চলে শাপলা ফুলের রাজত্ব। চাইলে ঘুরে আসতে পারেন বিলের মধ্যে অবস্থিত বামচিনি মৌজা নামক দ্বীপ গ্রামটি থেকে। এই গ্রামটির মজার একটি ব্যাপার হলো গ্রামটির একটা মৌজায় কেবলমাত্র একটিই বাড়ি, বাংলাদেশের আর কোথাও এমন নজির নেই।
কোথায় খাবেন?
কানাইয়া বাজারে দুপুরে খাওয়ার মতো ভালো দোকান নেই। তবে চা বা হালকা স্ন্যাকস পাবেন এখানে। দুপুরে খাওয়ার জন্য গাজীপুর শিববাড়ি আসতে হবে। দীর্ঘ সময়ের জন্য ভ্রমণে গেলে সাথে কিছু খাবার নিয়ে যাওয়াই শ্রেয়।
কোথায় থাকবেন?
কানাইয়া যাবার পথে নীলের পাড়ায় বেশ কিছু রিসোর্ট আছে। উল্লেখযোগ্য হল, আনন্দবাড়ি, সবুজ ছায়া, নির্জন নিবাস। চাইলে আগে থেকে ওখানে বুকিং দিয়ে একবেলা বা একদিনের জন্য সংরক্ষণ করতে পারেন।
সতর্কতা
বর্ষা কালে নৌকায় চড়তে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। এইক্ষেত্রে সাথে লাইফ জ্যাকেট থাকলে সবচেয়ে ভালো। যারা সাতার জানেন না, বয়স্ক বা শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে পুরোটা সময়। ভ্রমণের সময় বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কোন ময়লা-উচ্ছিষ্ট যেন আমরা ভ্রমণ স্পটগুলোতে ফেলে না আসি।
ডে ট্যুর এর অন্যান্য স্থান
ঢাকার আশেপাশে ডে ট্যুর এর জন্য অনেকগুলো চমৎকার জায়গা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মৈনট ঘাট, মায়াদ্বীপ, সারিঘাট, জিন্দা পার্ক, ছুটি রিসোর্ট, গোলাপ গ্রাম সহ অনেকগুলো স্থান রয়েছে। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে পড়ুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল Green Belt The Travelers এ। বেলাই বিল সম্পর্কে আপনার কোনো তথ্য শেয়ার করার থাকলে আমাদেরকে জানান।