মায়াদ্বীপ

নারায়গঞ্জে মেঘনা নদীর মাঝখানে মায়াদ্বীপ এর অবস্থান। এটি মূলত মেঘনার বুকে জেগে উঠা ত্রিকোন আকৃতির একটি চর। ডে ট্যুরে একবেলা কাটানোর জন্য মায়াদ্বীপ চমৎকার একটি স্থান। সবুজ প্রকৃতি, সবজি ক্ষেত, বিশাল মেঘনা নদী আর নদী পাড়ের জনপদ। এই মধ্যেই কখন একটা বেলা কেটে যাবে আপনি খেয়ালই করবেন না। মায়াদ্বীপ খুব একটা বড় না। তবে সবুজ প্রকৃতি আর এখানকার মনোরম পরিবেশ আপনার ভালো লাগবে। নদীর বাতাস একটানা বইতে থাকে এখানে। সেই নির্মল বাতাসকে কিছুক্ষণের জন্য আপনার মনে হবে মাতাল হাওয়া! ঢাকার কাছে ডে ট্যুর দিতে চাইলে কোনো এক ছুটির দিনে মায়াদ্বীপ থেকে ঘুরে আসা যায়।

কিভাবে যাবেন মায়াদ্বীপ

ঢাকার গুলিস্তান থেকে সারাদিন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এর বাস পাওয়া যায়। পাঁচ দশ মিনিট পরপরই বাস ছাড়ে। বাসে উঠে নামতে হবে সোনারগাঁও বা চৈতি গার্মেন্টস এর সামনে। তারপর সেখানে থেকে মোটর রিকশা বা ইজিবাইকে করে যেতে হবে বৈদ্যের বাজার। বৈদ্যের বাজার গিয়ে নৌকা ঘাট পাবেন। সেখান থেকে মায়াদ্বীপ যাওয়ার জন্য নৌকা পাওয়া যায়। মায়াদ্বীপ থেকে ঘুরে আসার জন্য নৌকা রিজার্ভ নিতে হবে। তিন চার ঘন্টার জন্য ভাড়া নিলে ঘন্টায় ভাড়া পড়বে ৪শ থেকে ৫শ টাকা। এক নৌকাতে ৭ থেকে ৮ জন বসতে পারবেন। যেতে সময় লাগবে ৪০ মিনিটের মতো। মেঘনার বুকে এই নৌভ্রমণ বেশ উপভোগ করতে পারবেন। স্থানীয়রা এই দ্বীপকে নুনেরটেক নামে চিনে। তাই মায়াদ্বীপ নামে কোনো মাঝি চিনতে না পারলে নুনেরটেক বলুন।

মায়াদ্বীপে কোনো ধরণের অবকাঠামো নেই। আপনি কোনো ধরণের ওয়াশরুম পাবেন না সেখানে। নারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। খুব জরুরী হলে স্থানীয়দের বাড়িতে গিয়ে ওয়াশরুম ব্যবহার করা যেতে পারে।

মায়াদ্বীপ ফেরার সময় ঘুরে আসতে পারেন। এটা বৈদ্যের বাজার থেকে মেইনরোডে আসার পথেই পড়বে। সকালটা মায়াদ্বীপে কাটিয়ে, দুপুরে বৈদ্যের বাজারে লাঞ্চ করে বিকেলটা পানাম নগরীতে কাটাতে পারেন। এরপর সন্ধ্যার মধ্যে বাসে উঠে বাড়ি ফিরতে পারেন। হাইওয়েতে জ্যামের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।

কোথায় খাবেন মায়াদ্বীপ

মায়াদ্বীপে খাওয়ার জন্য কোনো ধরণের খাবারের দোকান নাই। দুপুরে খাওয়ার জন্য আপনাকে বৈদ্যের বাজারে আসতে হবে। বৈদ্যের বাজারে অনেকগুলো খাবারের দোকান আছে। এগুলোর মধ্যে ঘাটের কাছেই সবুজ পাতা রেস্টুরেন্ট অন্যতম। এখানে আপনি ভাত মাছ সবজি ভর্তা ইত্যাদি পাবেন। দুপুরের খাওয়ার জন্য জনপ্রতি খরচ পড়বে ১২০ থেকে ১৮০ টাকা। মায়াদ্বীপ যাওয়ার সময় খাওয়ার পানি ও হালকা স্ন্যাকস কিনে নিয়ে যেতে পারেন বৈদ্যের বাজার থেকে।

কোথায় থাকবেন

ঢাকার কাছাকাছি হওয়াতে আপনি দিনে গিয়ে দিনেই মায়াদ্বীপ থেকে ফিরতে পারবেন। তাই রাতের বেলা সেখানে থাকার প্রয়োজন পড়বে না। তারপরও থাকতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ এসে থাকতে হবে। নারায়ণগঞ্জ থাকার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সোনারগাঁ রয়েল রিসোর্ট উল্লেখযোগ্য।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

সাঁতার না জানলে কোনোভাবেই নদীতে নামবেন না। প্রয়োজনে লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করুন। বর্ষাকালে মেঘনা নদীতে পানির স্রোত অনেক বেশি থাকে। তাই ভরা বর্ষায় মায়াদ্বীপ না যাওয়াই মঙ্গল। সন্ধ্যার পর ওখানে থাকা যাবে না। মায়াদ্বীপ থেকে ফেরার সময় নৌকা এমনভাবে ছাড়বেন যেন সন্ধ্যার আগে বৈদ্যের বাজার এসে পৌছাতে পারেন। আর নৌকা ভাড়া নেওয়ার সময় ভালোমতো দরদাম করে নিবেন। নৌকার মাঝি ও স্থানীয়দের সাথে ভালো ব্যবহার করুন। যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলফেন না। এটা শুধু ভ্রমণে গিয়ে নয়, এমনকি আপনার প্রত্যাহিক জীবনেও।

ডে ট্যুরে আরো যেতে পারেন

ভ্রমণ সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট পেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের নিয়মিত ট্রাভেল আড্ডার গ্রুপ Green Belt The Travelers এ। মায়াদ্বীপ সম্পর্কে আপনার আরো কোনো তথ্য কিংবা পরামর্শ দেওয়ার থাকলে আমাদেরকে জানান।

জিন্দা পার্ক

জিন্দা পার্ক এর অবস্থান নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আধ ঘন্টার দূরত্বে ১৫০ একর জমির উপর এই সুন্দর পার্ক এর অবস্থান। সবুজ গাছপালা বেষ্টিত এই পার্ক পাখির কলকাকলীতে মুখরিত থাকে সবসময়। এখানে পার্কের ভিতরে রয়েছে ছোট বড় ৫টি লেক। পর্যাপ্ত জলাধার থাকায় গরম কালেও পার্কের পরিবেশ শীতল থাকে তুলনামূলক। পরিবার নিয়ে ঢকার কাছে ভ্রমণ এর জন্য জিন্দা পার্ক এখন বেশ সুপরিচিত জায়গা। লেকের মাঝে দ্বীপের মতো জায়গায় গড়ে উঠা বাঁশের টি রুমে বসে প্রিয়জনের সঙ্গে এক কাপ চা কিংবা জলে পা ডুবিয়ে বসে থাকতে বেশ ভালো লাগবে। দারুণ উপভোগ করবেন কাটানো সময়গুলো। সাথে নিজস্ব গাড়ি না থাকলেও সমস্যা নেই। দিনশেষে বাড়ি ফেরার জন্য পার্কের সামনেই পাবেন রিকশা অথবা সিএনজি। মেইনরোডে এসেই কুড়িল বিশ্বরোড আসার বাস পেয়ে যাবেন। আর হ্যাঁ, বেশি সংখ্যক সদস্য নিয়ে পিকনিক করতে চাইলে কয়েকদিন আগেই যোগাযোগ করুন। পিকনিকের খাবারের আয়োজন পার্ক কর্তৃপক্ষই করবে।

কিভাবে যাবেন জিন্দা পার্ক

জিন্দা পার্ক যাওয়ার অনেকগুলো পথ আছে। ঢাকা থেকে সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায় হলো ঢাকার ৩০০ফিট দিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ কুড়িল বিশ্বরোড হাইওয়ে দিয়ে। কুড়িল হয়ে যেতে হবে কাঞ্চন ব্রিজ। তারপর এরপর কাঞ্চন ব্রিজ থেকে অটোরিকশা নিয়ে জিন্দা পার্ক পর্যন্ত যেতে পারবেন।

আর ঢাকা টঙ্গী হতে যেতে চাইলে মীরের বাজার হয়ে বাইপাস রাস্তা দিয়েও যেতে পারবেন। এছাড়া কাঁচপুর ব্রিজ দিয়েও জিন্দা পার্ক যাওয়া যায়। কাঁচপুর থেকে ভুলতা গাওছিয়া দিয়ে কাঞ্চন ব্রিজ হয়ে জিন্দা পার্কে যেতে পারবেন।

কি দেখবেন

জিন্দা পার্ক গড়ে উঠেছে প্রায় ১০০ একর জায়গার উপর। এখানে রয়েছে একটি কমিউনিটি স্কুল। আছে কমিউনিটি ক্লিনিক। জিন্দা পার্কে নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী বিশিষ্ট একটি লাইব্রেরি আছে। পার্কের ভিতরে মসজিদ, ঈদগাহ, কবরস্থান আছে। নির্মল সবুজে ঘেরা বিশাল এই পার্কে ২৫০ প্রজাতির ১০ হাজারেরও বেশি গাছ আছে। তাই স্থানটি পাখির কলতানে মুখরিত থাকে সবসময়। পার্কের ভিতরে লেক সদৃশ ছোট বড় ৫টি জলাধার রয়েছে।

সবুজ গাছপালায় ঘেরা বনের ভিতরে কিছুদূর গেলেই একটা লেক। সেখানে অনেক মানুষ কেউ ব্যাডমিন্টন খেলছে, কেউ চাদর বিছিয়ে গল্প করছে। লেকের মাঝখানে চোখে পড়বে কৃত্রিম দ্বীপ। দ্বীপে যাওয়ার রাস্তা বানানো হয়েছে ভাসমান প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়ে। যদিও একসাথে বেশি মানুষ ব্রিজে উঠলে ব্রিজ দোলে।

দারুন এই দ্বীপে পানিতে পা ডুবিয়ে ঘাসের উপর বসে থাকতে পারবেন। এরকম মোট পাঁচটি ছোট বড় লেক আছে জিন্দা পার্কে। লেকের ঘাটে বাধা আছে ছোত নৌকা। মন চাইলে নোউকায় চড়ে লেকে ভেসে বেড়াতে পারবেন কিছুক্ষণ। পাশাপাশি উপভোগ করতে পারবেন প্রকৃতিকে। লেকের পাড়েই আছে গাছের ওপর কয়েকটা টংঘর। চাইলে টংঘরে উঠে ছবি তোলা যাবে।

জিন্দা পার্কে প্রবেশ টিকেট এর মূল্য​ প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিজনের জন্য জনপ্রতি ১০০ টাকা। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জনপ্রতি ৫০টাকা। পার্কে খাবার নিয়ে প্রবেশ করা যাবে। সেক্ষেত্রে টিকিটের মুল্য হবে ১২৫টাকা। জিন্দা পার্কের লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে চাইলে আলাদা ফি দিতে হবে ১০ টাকা করে। নৌকায় ঘুরে বেড়াতে খরচ পড়বে প্রতি ৩০ মিনিট ২০০ টাকা। গাড়ি নিয়ে গেলে পার্কিং ফি দিতে হবে। গাড়ি ভেদে খরচ পড়বে ৫০থেকে ১০০ টাকা।

পার্কের পেছনের গল্প​

জিন্দা মূলত একটি গ্রামের নাম। গ্রামের “অগ্রপথিক পল্লী সমিতি”-র তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছে পার্কটি। প্রায় চল্লিশ বছর আগে, ১৯৭৯ সালে রূপগঞ্জ পূর্বাচল উপশহরে জিন্দা ঐকতান পার্ক গড়ে তুলেন সমিতির সদস্যরা। এত স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং ভীষণ আলাদা রকমের পার্কটি কোনো সরকারি উদ্যাগে তৈরি নয়। আবার কোনো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেও নির্মাণ করা হয়নি জিন্দা পার্ক। পার্কটি তৈরি হয়েছে এলাকাবাসীর প্রাণবন্ত অংশগ্রহনের মাধ্যমে। গ্রামের নামেই পার্কের নামকরণ। এই গ্রামটিকে একটি আদর্শ গ্রাম বলা চলে।

কোথায় খাবেন

জিন্দা পার্কের ভিতরেই রয়েছে খাবার রেস্টুরেন্ট। যেখানে মিলবে ভাত, ভাজি, ডাল, মাংস ইত্যাদি। একবেলা খাবার খরচ পড়োবে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন হালকা খাবার এবং সফট ড্রিঙ্কস পাবেন পার্কের ভিতরে।

কোথায় থাকবেন

যদি রাতে থাকতে চান তাহলে তার ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। থাকার জন্য রয়েছে মহুয়া গেস্ট হাউজ। এছাড়া ঘোরাঘুরির জন্য জিন্দা পার্ক খোলা থাকে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

ভ্রমণ সতর্কতা ও টিপস

পার্কের ভেতরের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে দর্শনার্থীদেরকে অনুরোধ করা হয়। এটা এমনিতেও একজন ভ্রমণকারীর দায়িত্ব। প্রকৃতিতে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না। পার্কের ভিতরে উচ্চস্বরে লাউডস্পিকারে গান বাজানো যাবেনা।

ডে ট্যুর এর অন্যান্য স্থান

ঢাকার আশেপাশে ডে ট্যুর এর জন্য অনেকগুলো চমৎকার জায়গা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মৈনট ঘাট, মায়াদ্বীপ, সারিঘাট, বেলাই বিল, ছুটি রিসোর্ট, গোলাপ গ্রাম সহ অনেকগুলো স্থান রয়েছে। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে পড়ুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল Green Belt The Travelers

আরো পড়ুন

চৌদ্দার চর – আড়াইহাজার

চৌদ্দর চর মেঘনা নদীর মাঝখানে জেগে উঠা সাড়ে তিন কিলোমিটার লম্বা একটি চরের নাম। এটি নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার (Araihazar)  উপজেলায় অবস্থিত। ঢাকা থেকে মাত্র দেড় থেকে/দুই ঘণ্টার পথ। নদীর চারপাশ জুড়ে আছে বিস্তীর্ণ সরিষা ক্ষেত, ক্ষীরাই আর বাঙ্গী ক্ষেত। তার মধ্যেই বিশাল বালুকাবেলা। এটি আপনাকে কুয়াকাটার কথা মনে করিয়ে দিবে। নদীর স্বচ্চ টলটোলে পানিতে কিছুক্ষণের জন্য গা ভিজিয়ে নিতে পারবেন চাইলে। এখানকার পানি টলটলে নীলাভ। যারা একটাদিন ঢাকার আশেপাশে ঘুরে আসতে চান, তাদের জন্য চৌদ্দারচর চমৎকার একটি জায়গা।

কিভাবে যাবেন

ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে আড়াইহাজার গামী অভিলাস পরিবহণ এর বাস পাবেন। ভাড়া ৬৫ টাকা। এটা মদনপুর দিয়ে যায়। আর গুলিস্তান থেকে যেতে চাইলে দোয়েল/স্বদেশ পরিবহনে মদনপুর নেমে ওখান থেকে ওখান থেকে আড়াইহাজার এর সি এন জি নিতে পারবেন। লোকাল জনপ্রতি ভাড়া ৫০ টাকা।

আর ঢাকার  কলাবাগান থেকে পাবেন মেঘলা পরিবহনের বাস। এগুলোতে গেলে নামতে হবে ভুলতা/গাউসিয়া। ভাড়া ৬৫ টাকা। গাউসিয়া নেমে কিছুটা সামনে যেয়ে লোকাল সি এন জি তে আড়াইহাজার বাজার । এতে ভাড়া ৩০ টাকা।

আড়াইহাজার নেমে থানার মোড় থেকে সিএনজিতে যেতে হবে খাগকান্দা ঘাট। ভাড়া নিবে ৪০ টাকা। খাগকান্দা ঘাট থেকে নৌকা নিয়ে চৌদ্দার চর ভ্রমণ করতে পারবেন। রিজার্ভ নৌকায় ভাড়া পড়বে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা।

কখন যাবেন চৌদ্দার চর

আড়াই হাজারে একেক মৌসুমে একেক রকম দৃশ্য দেখা  যায়৷ বর্ষায় মেঘনা নদীতে পানি বেশি থাকে বলে অনেকে তখন ভ্রমণ করতে চান না। বলা যায় অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত চৌদ্দার চর ভ্রমণ এর উপযুক্ত সময়। তখন নদী শান্ত থাকে। আড়াইহাজার এর চৌদ্দার চর এর বালি অনেক শক্ত। চোরাবালির কোন ভয় নেই। শীতে চরে অনেক রকমের শস্য ক্ষেত দেখা যায়। তখন হরেক রকমের পাখি আসে এখানে।

আড়াইহাজার উপজেলায় চৌদ্দার চর ছাড়াও আরো অনেকগুলো চর আছে। আপনি চাইলে নৌকা নিয়ে এসব চরে যেতে পারবেন। চৌদ্দারচর এর আশেপাশে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে ১২৫ বছরের পুরানো স্কুল। ১০৫ বছরের পুরানো জমিদার বাড়ি। শদাসদি ভুইয়া বাড়ি (জমিদার বাড়ি), আড়াইহাজার চৌধুরী পাড়া রাজ বাড়ি। কয়েকশ বছরের পুরানো বটগাছ ইত্যাদি। এছাড়া যাবার পথে  রাস্তার পাশেই লতব্দি মোড়ে কাতান শাড়ীর শিল্প, গামছা শিল্পের তাঁতঘর চোখে পড়বে। কম দামে ভাল কাতান শাড়ি কিনতে পারবেন এখান থেকে।

কোথায় খাবেন

চৌদ্দারচর এ কোনো খাবারের দোকান নেই। খাওয়ার জন্য আপনাকে নিকটস্থ আড়াইহাজার বাজারে আসতে হবে। আড়াইহাজারে খাবারের বেশ কিছু দোকান আছে। এখানে আপনি দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে পারবেন। এছাড়া দস্তরদি মোড়ে চাচার মালাই চা, আড়াইহাজার বাজারে জিয়ার ডাল পুরি, পাশেই আরেকটা দোকানে আলু পুরি, নোয়াপাড়া ব্র্যাক এর পাশে ডাল পুরি, গোপালদি বাজার এ নাজিমুদ্দিন হোটেল এর গরুর মাংসের টেস্ট নিতে পারেন ভ্রমণে গেলে।

কোথায় থাকবেন

থাকার জন্য আড়াইহাজার বা চৌদ্দারচর এ কোনো ব্যবস্থা নাই। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা ভালো। তবে কেউ একান্তই থাকতে চাইলে আড়াইহাজার এর জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে থাকতে পারবেন। মোবাইল নম্বর ০১৯১৭-০০৮-৪৯৬।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

আড়াইহাজার বা চৌদ্দার চর কোনো পর্যটন এলাকা না। এটি সম্পূর্ণ নদী কেন্দ্রীক একটি জনপদ। যারা সাদামাটা প্রকৃতি পছন্দ করেন, তাদের ভালো লাগবে। সাঁতার না জানলে নদীতে নামবেন না। প্রয়োজনে লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করুন। বর্ষায় মেঘনা নদীতে পানির স্রোত অনেক বেশি ও নদী উত্তাল থাকে। পরিবার নিয়ে যেতে চাইলে বর্ষায় না যাওয়াই ভালো। ভ্রমণের সময় স্থানীয় মানুষজন ও নৌকার মাঝির সাথে ভালো ব্যবহার করুন। যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলবেন না। এটা শুধু ঘুরতে গিয়ে না, এমনকি শহরেও।

আরো পড়ুন

error: Content is protected !!
Exit mobile version