চাঁদপুর

চাঁদপুর – ডে ট্যুর

একদিনের ছুটি কাটানোর জন্য চাঁদপুর চমৎকার একটি জায়গা। অল্প সময়ে এবং অল্প জার্নিতে সুন্দর একটি ট্রিপ হতে পারে চাঁদপুরে। লঞ্চ ভ্রমণ, নদী, খোলা বাতাস, মিনি কক্সবাজার, চাঁদপুরের ইলিশ ও বিখ্যাত আইসক্রিম এবং মিষ্টি। সেখানে পদ্মা নদীর পাড়ে আড্ডা দেয়া,এবং নদীর মোহনা (পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া) উপভোগ করা যায়। সম্ভব হলে নদীতে ঝাপাঝাপি করেও আসতে পারেন। সব মিলিয়ে খুব ভালো একটা রিফ্রেশমেন্ট। এমনিতেই লঞ্চ জার্নিতে ক্লান্তি আসেনা। তাই ডে ট্যুর এর জন্য চাঁদপুরকে বেছে নিতে পারেন।

কিভাবে যাবেন চাঁদপুর

ঢাকা থেকে চাঁদপুর বাসে,ট্রেনে কিংবা লঞ্চে যাওয়া যায়। কিন্তু ভ্রমণের উদ্দেশ্যে গেলে লঞ্চে যাওয়াই ভালো। ঢাকা-চাঁদপুর রুটে চলাচলকারী লঞ্চের মধ্যে এমভি সোনারতরী, এমভি তাকওয়া, এমভি বোগদাদীয়া, এমভি মেঘনা রাণী, এমভি আল বোরাক, এমভি ঈগল, এমভি রফরফ, এমভি তুতুল প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। সদরঘাট থেকে সকাল ৬/৬:৩০ থেকে এক/আধ ঘন্টা পরপরই লঞ্চ ছাড়ে৷ আসন ভেদে লঞ্চ ভাড়া ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। আর কেবিন নিলে ভাড়া পড়বে ৫০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা।

সদরঘাট থেকে লঞ্চ উঠে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে পৌঁছাতে সময় লাগে ৩ ঘন্টা। চাঁদপুর নেমেই লঞ্চঘাট থেকে ফেরার সিডিউল টা জেনে নিবেন।

চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নেমে বড় স্টেশনে রিকশা অথবা অটোতে করে চলে যেতে পারেন তিন নদীর মোহনায়। ভাড়া পড়বে রিকশায় ৩০-৩৫ টাকা, অটো তে একজনের ১০ টাকা। চলে যাবেন বড় স্টেশন পার্কে। সেখানে একটা ইলিশের ভাস্কর্য আছে। ওটার সামনে পিছে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে চলে যাবেন পার্কের শেষ মাথায়। সেখান থেকে তিন নদীর মোহনা দেখা যায়। আর এই মাথায় আসতে আসতে দেখবেন অদ্ভুত আকৃতির রক্তের ফোঁটার একটা ভাস্কর্য আছে।

কি দেখবেন চাঁদপুর

প্রত্যকটা নদীর রয়েছে আলাদা আলাদা রূপ। চাঁদপুর গেলে সেটা আরো ভালোভাবে বোঝা যায়। নদীর পাড়ে একটি ছোট পার্ক রয়েছে। পার্কের মধ্যেই রয়েছে “রক্ত ধারা” নামের মনোমুগ্ধকর একটি ভাস্কর্য। মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ভাস্কর্যটি নির্মিত। শীতকালে মেঘনার মাঝখানে অনেক চর জাগে। নদীর পাড় থেকে নৌকা ভাড়া নিয়ে সেইসব চরে ঘুরে আসতে পারবেন কিছুক্ষণের জন্য। যাওয়া আসা আর আধা ঘণ্টা থাকার জন্য বোট ভাড়া করতে ৫০০ টাকা দিতে হয়।

কোথায় খাবেন

চাঁদপুর মানেই ইলিশের শহর। লঞ্চঘাটেই খাবার হোটেল আছে কয়েকটা। সবগুলোতে দাম প্রায় একই। ইলিশ প্রতি পিস ১২০টাকা। আপনি চাইলে ইলিশ চত্বর থেকে ইলিশ মাছ কিনে যেকোনো দোকানে ১০০ টাকায় ভেজে নিয়ে সাথে আলুর ভর্তা আর ডাল দিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে আসতে পারবেন।

খাওয়াদাওয়া শেষ করে চলে যাবেন কালীবাড়ি। ঘাটের থেকেই অটোরিক্সা পাবেন জনপ্রতি ৫ টাকা নিবে। কালীবাড়ি নেমে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই স্থানীয়রা দেখিয়ে দিবে “ওয়ান মিনিট” মিষ্টির দোকান। মিষ্টির দোকানেই পাওয়া যায় স্পেশাল আইস্ক্রিম। দাম নিবে ৪০ টাকা। চেখে দেখতে পারেন ওয়ান মিনিট এর মিষ্টি গুলো। মিষ্টির দাম নিবে প্রতি পিস ১০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

ইলিশ খাওয়া কিংবা এক দিনের ভ্রমণে ঢাকা হতে চাঁদপুর দিনে গিয়ে রাতের মধ্যে ফিরে আসা যায়। আর এই ডে লং ট্যুরই চাঁদপুর ভ্রমণে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। তবুও পর্যটকদের রাত্রি যাপনের কথা বিবেচনা করে এখানে হোটেল তাজমহল, হোটেল শ্যামলী, হোটেল জোনাকী ছাড়াও বেশকিছু আবাসিক হোটেল আছে।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

চাঁদপুর ভ্রমণ যেহেতু লঞ্চ এর উপর নির্ভর করে, তাই লঞ্চের টাইম টেবিল ঠিকভাবে খেয়াল রাখুন। নৌকায় চড়ার জন্য লাইফ জ্যাকেট সাথে নিন। নদীতে কিংবা কোথাও ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না। চাঁদপুর ইলিশের শহর, তাই এখানে এসে ইলিশ চেখে দেখতে ভুলবেন না।

ডে ট্যুরে আরো যেতে পারেন

Exit mobile version