হাসন রাজার বাড়ি

হাসন রাজা জাদুঘর

হাসন রাজা জাদুঘর

সুনামগঞ্জ ও সিলেটে হাসন রাজার জমিদারি ছিলো। তার পরিচিতি একজন মরমি কবি হিসেবে। সমাদৃত হয়েছেন দেশ বিদেশে। রবীন্দ্রনাথ থাকুর পর্যন্ত তাঁর গানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। সেই মরমি কবি হাসন রাজার বাড়ি এখন জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়েছে। হাসন রাজার জাদুঘর সুনামগঞ্জ শহরের সুরমা নদীর পাড়ে অবস্থিত। সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রীর বিখ্যাত জমিদার দেওয়ান পরিবারে ১৮৫৪ সালে হাসন রাজার জন্ম।

জাদুঘরে ঢুকতে প্রথমেই চোখে পড়বে লালন ফকিরের ছবি। কলকাতার একটি ফটো স্টুডিওতে তোলা হাসন রাজার একমাত্র আলোকচিত্রটি এখানে সংরক্ষিত আছে। তবে অনেক শিল্পীর হাতে আঁকা আরো কিছু হাসন রাজার ছবি এখানে দেখতে পাবেন। তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে এখানে প্রথম মেলা হয় ১৯৬২ সালে। এরপর থেকে এই বাড়ি ও সংগ্রহশালা দেখতে দেশের নানান প্রান্ত থেকে হাছন রাজার ভক্তরা এখানে ভিড় জমান। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে শেখ মুজিব হাছন রাজা একাডেমিকে নগদ ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেন। যা দিয়ে হাসন রাজা মিউজিয়াম গড়ে উঠে।

হাসন রাজা মিউজিয়াম

হাসন রাজা মিউজিয়ামে তার ব্যবহৃত বহু মূল্যবান জিনিসপত্র সংরক্ষিত আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- রঙিন আলখাল্লা। সাধারণত তিনি ধুতি পাঞ্জাবি পরতেন। তবে নওয়াবদের সাথে সাক্ষাতের সময় এই আলখাল্লাটি পরিধান করতেন। পানি শোধনের পাত্র অর্থাৎ পানির ফিল্টার। উইলিয়াম লিটল নামের এক ইংরেজ নায়েব তাকে সেই আমলে অস্ট্রিয়া থেকে এনে এই উপহারটি দিয়েছিলেন। তার একটি বাহারি তলোয়ার ছিলো। এটি তাদের পারিবারিক। বংশানুক্রমে এটি তার হাতে এসে পৌছেছিল। এগুলো ছাড়াও হাসনের ব্যবহৃত চেয়ার টেবিল, খড়ম, মোমদানি সহ ইংরেজ আমলের বহু জিনিস মিউজিয়ামে আছে। এমনকি হাসন রাজার নিজের হাতে লেখা গানের কপিও এখানে সংরক্ষিত আছে।

কিভাবে যাবেন

হাসন রাজার বাড়ি যেতে হলে প্রথমে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সুনামগঞ্জ শহরে আসতে হবে। ঢাকার সায়েদাবাদ, মহাখালী ও ফকিরাপুল থেকে প্রতিদিন মামুন পরিবহন, এনা পরিবহন ও শ্যামলী পরিবহনের বাস সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বাস ভাড়া জনপ্রতি ৫৫০ টাকা। যেতে সময় লাগে প্রায় ৬ ঘন্টা। সুনামগঞ্জ নেমে রিকশা বা অটোরিকশা নিয়ে সুরমা পাড়ের হাসন রাজা জাদুঘর এ যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

সুনামগঞ্জ থাকার মোটামোটি মানের কিছু হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো-  নুরানী হোটেল, সুরমা ভ্যালি রেসিডেন্সিয়াল রিসোর্ট, হোটেল মিজান, হোটেল সারপিনিয়া, হোটেল প্যালেস, হোটেল গুলবাগ ও সুনামগঞ্জ রেস্ট হাউজ উল্লেখযোগ্য।

কোথায় খাবেন

সুনামগঞ্জে খাওয়ার জন্য বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে। সিলেটের প্রখ্যাত পানসি হোটেলের একটি শাখা রয়েছে এখানে। এছাড়া হোটেল ফাইভ স্টার, জনতা, রাজ হোটেল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বর্ষায় গেলে এসব খাবারের দোকানে হাওরের মাছ খেতে ভুলবেন না। তখন চাইলে নৌকায় করে হাওরে একটা চক্কর দিয়ে আসতে পারেন।

সুনামগঞ্জ জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

পুরো সুনামগঞ্জ জেলা গত কয়েক বছর ধরে পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। সুনামগঞ্জে রয়েছে অনেকগুলো হাওর। একপাশে মেঘালয়ের পাহাড়, লেক, ঝর্ণা ইত্যাদি। পড়ুন টাঙ্গুয়ার হাওর পূর্ণাঙ্গ ট্যুর প্ল্যান, শুধুমাত্র নীলাদ্রি লেক অথবা শিমুল বাগান হতে পারে আপনার একদিনের ভ্রমণ গন্তব্য।

আরো পড়ুন

টাঙ্গুয়ার হাওর নৌকার তথ্য

সাজেক ভ্যালি পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন

বিছানাকান্দি রাতারগুল পান্থুমাই

ভ্রমণে গিয়ে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না। শুধু ঘুরতে গিয়ে নয়, এমনকি আপনার শহরেও আবর্জনা ফেলবেন না যত্রতত্র। এটা আপনার ব্যাক্তিত্বকে রিপ্রেজেন্ট করে।