Bhawal national park

ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান

ঢাকার কাছেই, সবুজেঘেরা কোলাহলমুক্ত পরিবেশের জন্য ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান বিখ্যাত। দেশে যে কয়টি প্রাকৃতিক বনভূমি রয়েছে তার মধ্যে মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় একটি।  ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে একসময় বাঘ, কালো চিতা, চিতাবাঘ, মেঘাবাঘ, হাতি, ময়ূর, মায়া হরিণ ও সম্বর হরিণ দেখা যেত। এ বনে এক সময় খেকশিয়াল, বাঘডাস, বেজি, কাঠবিড়ালী, গুঁইসাপ আর কয়েক প্রজাতির সাপ দেখা যেত। বর্তমানে সে সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। বন বিভাগ এই বনে অজগর, ময়ূর, হরিণ ও মেছোবাঘ ছেড়েছে। উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের দিক দিয়েও এ বন বিশেষভাবে আলোচিত।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে উত্তরে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে গাজীপুর জেলার গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর উপজেলায় এই উদ্যানটি অবস্থিত। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে এই বনের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী যে কোনো বাসে চড়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ফটকের সামনেই নামা যায়। এছাড়া ঢাকার গুলিস্তান থেকে প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি বাস চলে এই পথে। ন্যাশনাল পার্কের ৩ নাম্বার গেটে নামার কথা বললে সরাসরি ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের প্রধান গেটে নামতে পারবেন। বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। নিজস্ব বাহনে গেলে জয়দেবপুর চৌরাস্তা ছাড়িয়ে ময়মনসিংহের দিকে কিছু দূর চলতে হাতের ডানে পড়বে এর প্রধান প্রবেশপথ।

বনের ভেতরে আছে ৩১টি বনভোজন কেন্দ্র। কেন্দ্রগুলোর নাম আনন্দ, কাঞ্চন, সোনালু, অবকাশ, অবসর, বিনোদন ইত্যাদি। পিকনিক বা পারিবারিকভাবে দলবদ্ধ ভ্রমণের জন্য ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানটি একটি সুন্দরতম স্থান।

কোথায় থাকবেন?

ঢাকা থেকে ভাওয়াল উদ্যানে সারাদিন ঘুরে বিকাল বা সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসা যায়। চাইলে অনুমতি ও বুকিং সাপেক্ষে উদ্যানের ভেতর প্রাকৃতিক পরিবেশে দিন অতিবাহিত করা যায়। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ভেতরে আছে ১৯টি বিশ্রামাগার ও কটেজ। এগুলোর নামও বেশ মজার। চম্পা, জেসমিন, অর্কিড, রজনীগন্ধা, শাপলা, মালঞ্চ, গোলাপ, মাধবী, বকুল, জুঁই, চামেলী, বেলি, আনন্দ-১, আনন্দ-২, আনন্দ -৩, শ্রান্তি ও কেয়া। খুবই চমৎকার ডিজাইলের কটেজ ও রেস্ট হাউজগুলো আগে থেকে বুক করে যেতে হয়। রেস্ট হাউজেই খাবারের ব্যবস্থা আছে। সেটার জন্যও আগে থেকে বলে রাখা লাগে। এসব গেস্ট হাউজে রাত্রী যাপনের অনুমতি নেই।

পুরো পিকনিক স্পট বা রেস্ট হাউজ ভাড়া নেওয়ার জন্য বন বিভাগের মহাখালি কার্যালয় থেকে অগ্রিম বুকিং দিতে হয়। এছাড়া ভাওয়াল গড় থেকেই সামান্য দূরে অবস্থিত রাজেন্দ্রপুর জাতীয় উদ্যানের রেঞ্জ কার্যালয় থেকেও নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের বুকিং নেওয়া যায়। মোবাইল: 01781-733000, 01713-575055

এছাড়াও এছাড়া রাতে থাকার জন্য ভাওয়াল গড়ের কাছে আছে সারাহ, সোহাগ পল্লী, স্প্রিং ভ্যালী, ছুটি, নক্ষত্রবাড়ি এবং জল ও জঙ্গলের কাব্যের মতো বেশ কিছু বেসরকারি রিসোর্ট। রিসোর্টগুলোতে যেতে চাইলে আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখা ভাল।

ভ্রমণ টিপস সতর্কতা

ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান এর ভেতর নিজেদের সাথে যাওয়া ছোট শিশুদের নজরের ভেতর রাখবেন। বিশেষ করে ওয়াচ টাওয়ারে বা জঙ্গলে হাটার সময়। ভ্রমণের সময় কোন আবর্জনা ময়লা জঙ্গলে ফেলবেন না। উদ্যানে মাছ বা পাখি শিকার বা উচ্চ শব্দ করলে জরিমানা সহ শাস্তির মুখে পড়তে পারেন। এছাড়া উদ্যানের সিসিটিভি রেঞ্জের বাইরে যাওয়াটা নিরাপদ নয় একদমই।

ডে ট্যুর এর অন্যান্য স্থান

ঢাকার আশেপাশে ডে ট্যুর এর জন্য অনেকগুলো চমৎকার জায়গা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মৈনট ঘাট, মায়াদ্বীপ, সারিঘাট, বেলাই বিল, ছুটি রিসোর্ট, গোলাপ গ্রাম সহ অনেকগুলো স্থান রয়েছে। সবগুলো ডে ট্যুর এর বিস্তারিত এখানে পড়ুন। জয়েন করতে পারেন গ্রিন বেল্ট ট্রাভেলার্সদের নিয়মিত আড্ডাস্থল Green Belt The Travelers

error: Content is protected !!
Exit mobile version